স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কৌঁসুলি দলের বিশেষ উপদেষ্টা পদে এক বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ফৌজদারী আইন বিশেষজ্ঞ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীকে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বুধবার এই নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট এহসানুল হক সমাজীকে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তবে সেই দায়িত্ব গ্রহণে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
এরপর নভেম্বরে সমাজীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমের বিশেষ পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হলে সেটি নিতেও তিনি রাজি হননি।
সেসময় এহসানুল হক সমাজী বলেছিলেন, “আমি পাঁচজন আসামি সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, তৌফিক-ই-এলাহী, ফারুক খান ও জুনায়েদ আহমেদ পলকের পক্ষে মামলা লড়তে ফাইল রিসিভ করেছি। ট্রাইব্যুনালে তাদের পক্ষে ওকালতনামা জমা দিয়েছি।
“এ অবস্থায় আমার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমের বিশেষ পরামর্শক পদে যোগ দেওয়া অনৈতিক হবে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, না প্রসিকিউশন না আসামি- কোনও পক্ষেই মামলা লড়ব না।”
এর এক মাস পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কৌঁসুলি দলের বিশেষ উপদেষ্টা করা হয়েছে সমাজীকে।
তাকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এহসানুল হক সমাজী অন্য পেশা, ব্যবসা বা সরকারি-আধাসরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক বাদ দেওয়ার শর্তে এ পদে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাবেন।
এই নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে সমাজী বলেন, “আমি বর্তমানে স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে আছি। আগামী ২২ ডিসেম্বর দেশে ফিরব।
“স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনজীবীদের উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়টি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জেনেছি। দেশে আসার পর চুক্তিভিক্তিক নিয়োগের প্রজ্ঞাপনটি দেখে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।”
২০০৭-২০০৯ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর এবং বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সমাজী।
সেসময় রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি ফৌজদারি আদালতে সব মামলা পরিচালনা করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএলবি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন সমাজী। ১৯৮৬ সালের ৩০ অক্টোবর একজন আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন তিনি।
ওই বছরের ৪ নভেম্বর ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ লাভ করেন সমাজী। ১৯৮৮ সালের ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে তালিকাভুক্ত হন তিনি।
১৯৯২ সালের ২১ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য হন সমাজী।