Beta
শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫

শীতে ফ্যাসফ্যাসে গলা সারছেই না?

শীতে ফ্যাসফ্যাসে গলা সারছেই না?
[publishpress_authors_box]

ঠান্ডা, জ্বর, কোভিড, রেসপিরেটরি সিনসিটিয়াল ভাইরাস (আরএসভি) বছর জুড়ে তো থাকেই; শীতে শ্বাসযন্ত্র আরেকটু বাড়তি ভোগে এসব অসুখে। মুশকিল হলো অনেকের বেলায় সর্দি-জ্বর সেরে গেলেও ভাঙ্গা গলার রেশ রয়ে যায়। কথা বলতে গেলে ফ্যাসফ্যাসে শোনায়। গলা কখনও কর্কশ ঠেকে নিজের কাছেই।

একে ইংরেজিতে বলে হর্সনেস। হর্স ভয়েসে আক্রান্ত হলে কণ্ঠ চাপা শোনায়; যাকে গলা বসে যাওয়া কিংবা দেবে যাওয়াও বলা হয়। এই অসুখের আরেক নাম ডিসফোনিয়া।

ভোকাল কর্ডে চাপ পড়লে গলা বসে যেতে পারে। চিৎকার করে কথা বলা, অনেক ক্ষণ একটানা গান বা রেওয়াজ করার কারণেও হুট করে গলা দেবে যায়। তবে শীতকালে সর্দি-কফ আক্রান্ত হলে স্বরে অস্বাভাবিকতা সারতে সময় নেয়।

কিন্তু চাপা কণ্ঠে কথা বলতে কি আর ভালো লাগে নিজের কাছে? আবার আপনার পেশা যদি কণ্ঠ নির্ভর হয়, তখন তো আরও বিপত্তি বাঁধবে। আবৃত্তি, অভিনয়, বক্তৃতা, গান কোনো কাজই আর প্রতিশ্রুতি মেনে করা সম্ভব হবে না আপনার পক্ষে। কল সেন্টারের কর্মী এবং শিক্ষকদেরও কথা বলতে হয় দীর্ঘক্ষণ ধরে। এতেও গলায় ক্লান্তি দেখা দেয়।

গলা ভাঙ্গে কেন?

সুস্থ থাকা মানে কণ্ঠ একেবারে স্পষ্ট এবং জোরালো শোনাবে। ফুসফুস হচ্ছে এই শক্তির উৎস। এখান থেকে বাতাস স্বরযন্ত্রে ধাক্কা দিয়ে কম্পন সৃষ্টি করে। এই কম্পন থেকে গলা ও মুখের সহায়তায় শব্দ শুনতে পাই আমরা।

আমাদের গলার সামনে ল্যারিংস বা শব্দযন্ত্রে দুটি কণ্ঠনালি বা ভোকাল কর্ড থাকে।   স্বরযন্ত্রকে ভয়েসবক্সও বলে। স্বরযন্ত্রের অ্যাডামস অ্যাপল হলো থাইরয়েড তরুণাস্থি যা পুরুষের গলার সামনে উঁচু হয়ে থাকে। ভোকাল কর্ড বেশ নমনীয় হয়ে থাকে। এখানে টানা চাপ পড়লে কণ্ঠস্বর স্বাভাবিকতা হারায়।

ল্যারিনজাইটিস অর্থ্যাৎ স্বরযন্ত্রের প্রদাহ হলে কণ্ঠও আর আগের মতো থাকে না। ভাইরাল সংক্রমণ, বিশেষ করে সাধারণ সর্দি, ফ্লু থেকে শ্বাসযন্ত্রের উপরের অংশ আক্রান্ত হলে স্বরযন্ত্রের প্রদাহ দেখা দেয়।

টানা কাশি হলেও ভোকাল কর্ড ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন গলা খসখসে শোনায়।

শীতে গলা ভালো রাখার উপায়

এমনিতে ঠান্ডা-জ্বর থেকে ভাঙ্গা গলা পাঁচ থেকে ১০ দিলেই ভালো হয়ে যায়। কফ সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ চলতে পারে এই সময়।

কণ্ঠের অসুস্থতাতেও পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং বিশ্রামের বিকল্প নেই। অ্যালকোহল, মাদক এবং ধূমপানের অভ্যাস থাকলে তা ছাড়তেই হবে। গরম পানির বাষ্প নাক-মুখ দিয়ে টেনে নিতে পারলে নাকের ভেতরের কফ পরিস্কার হয়ে যায়; একই সঙ্গে ভোকাল কর্ড আর্দ্র থাকে।

অনেকে বসা গলা নিয়েও গান করেন, জোরে কথা বলেন। এতে করে কণ্ঠের ফ্যাসফ্যাসে ভাব আরও স্থায়ী হয়। কণ্ঠ দ্রুত সারিয়ে তুলতে কয়েকদিন কথা কম বলা ভালো; অবশ্যই জোরে কথা বলা এবং চিৎকার করা এড়াতে হবে এইসময়। ফিসফিস করেও কথা বলা যাবে না; কারণ এতেও পেশিতে টান লাগে।

নরম কণ্ঠে কথা বললে ভোকাল কর্ডে হালকা ধাক্কা লাগে, তাই আরাম বোধ করবেন।

যদি দুয়েক সপ্তাহের মধ্যে কণ্ঠ আবার স্বাভাবিক না হয়, তাহলে চিকিৎসকের কাছে যেতেই হবে। হয়তো নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ দেখানো জরুরি এসময়।

ভোকাল নোডিউল আছে কি না তা পরীক্ষা করে নিতে হবে।

কণ্ঠের ব্যায়াম করে বসে যাওয়া গলার উন্নতি হয়। একজন স্পিচ প্যাথলজিস্ট এ নিয়ে পরামর্শ দিতে পারেন। যেমন ছোটবেলার মতো দুই ঠোঁট এক করে কাঁপানো, যেন এক টানা ‘ফুরর…ফুরর’ শব্দ হয়। এই ব্যায়ামে কণ্ঠ জোরালো ও স্পষ্ট হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত