নতুন করে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের আওতায় না এনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ফেরত দেওয়াসহ সাত দফা দাবিতে কক্সবাজারের উখিয়ায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দ্রুত প্রত্যাবাসন করা এবং ক্যাম্পের বাইরে রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ রোধ করা।
শুক্রবার বিকালে শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কের উখিয়া উপজেলার পালংখালী স্টেশনে ‘অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি-পালংখালীর’ উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ স্থানীয় কয়েকশ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
স্থানীয়দের তোলা দাবিগুলো হলো : ১. আশ্রয় দেওয়া রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা। ২. রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে সীমান্তে কঠিন নিরাপত্তাবলয় জোরদার করা। ৩. অবৈধভাবে ২০২৪ সালে অনুপ্রবেশ করা লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে বায়োমেট্রিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করে পুশব্যাকের জন্য কার্যকর কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো। ৪. স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ৫. চাকরিসহ ক্যাম্প ব্যবস্থাপনায় স্থানীয়দের প্রাধান্য (নূন্যতম ৫০%) নিশ্চিত করা ৬. কাঁটাতারের বাইরে রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ বন্ধ করতে হবে এবং ক্যাম্পের বাহিরে রোহিঙ্গাদের বাসাভাড়া বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। ৭. ক্যাম্পের চাকরির নিয়োগ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আরআরআরসি প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে।
মানববন্ধন শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হওয়ায় স্থানীয়রা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। চুরি-ডাকাতি, অপহরণ বাণিজ্য এবং খুন-খারাবিসহ নানা অপরাধের মাত্রা বেড়েই চলছে। প্রায় ৮ বছর হতে চললেও একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের দেশে ফেরত পাঠানো যায়নি। উল্টো গত কয়েক মাসে আরাকানে অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আরও লাখের কাছাকাছি নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে উখিয়া ও টেকনাফসহ স্থানীয়দের জীবনযাত্রার পাশাপাশি নিরাপত্তা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে।
সীমান্তে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্টদের কঠোর নজরদারি অব্যাহত না থাকলে সাধারণ রোহিঙ্গাসহ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যদের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় এ রাজনৈতিক নেতা।
৭ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, “রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার কারণে স্থানীয়রা নানাভাবে দুর্ভোগ ও বৈষম্যের শিকার। তাই দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলোতে স্থানীয়দের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। এই জন্য জেলা প্রশাসন ও আরআরআরসি কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে মনিটরিং সেল গঠন করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।”
আগামী এক মাসের মধ্যে ৭ দফা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে সমাবেশের সভাপতি প্রকৌশলী রবিউল হোসেন বলেন, দাবি বাস্তবায়ন না হলে সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।