Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫

চায়ের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর ‘টা’ কী?

চায়ের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর টা-টা কী?
[publishpress_authors_box]

চা যেন এক গভীর আবেগের নাম প্রতিদিনের জীবনে। শীতে চায়ের নেশা আরেকটু বেড়ে যায়। চায়ের কাপে চুমুক দিয়েই শীত তাড়ানো যাবে বলে সবাই ভেবে নেন। অনেকের সকাল শুরুই হয় এক কাপ চা দিয়ে। অনেকের নাশতার পরে, দুপুরের খাবারের পরে এবং সন্ধ্যার হালকা খাবারের সঙ্গে চা ছাড়া চলে না। এরপর আবার রাতের খাবারের পরেও চা চাই অনেকের।

চুমুকে চুমুকে তৃপ্তি এনে দিলেও চায়ের অভ্যাস শরীরে যোগ করে ক্যালরি। চা পানের জন্য এই ক্যালরি না বাড়লেও, সঙ্গে যত হালকা খাবার বা স্ন্যাকস থাকে তা এই ক্যালরির জন্য দায়ী।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছে, চায়ের সঙ্গে বাড়িতে বা টং দোকানের আড্ডায় যা কিছু চলে তাই বেশিরভাগই অস্বাস্থ্যকর খাবার; যা প্রতিদিন খাওয়া একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত। যদি সকালেও চায়ের কাপে বিস্কুট ডুবিয়ে খেতেই হয়, তাহলে এখনই সময় এই অভ্যাস নিয়ে সতর্ক হওয়ার।

হালের গবেষণাগুলো বলছে, তাজা ফল ও সবজির চেয়ে প্রতি মাসে ভারতীয়রা প্রসেসড খাবার ও পানীয়তে অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়ছে। আর এতে করে ডায়বেটিস, স্থুলতা, হৃদরোগ বেড়েই চলেছে ভারতে।

২০২৪ সালের মে মাসে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ জানায়, ভারতে অসুখের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশই অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসের কারণে হয়।

চায়ের সঙ্গে মুখোরোচক টা সবসময়ই অতিরিক্ত ক্যালরি ভরপুর থাকে। এসবে জরুরি পুষ্টিগুণও থাকে সামান্যই।

মারেংগো এশিয়া হসপিটালস গুরুগ্রামের নিউট্রিশনিস্ট এবং ডায়বেটিকস ড. নীতি শর্মা বলেন, “চায়ের সঙ্গে টায়ের ব্যবস্থা ভারতীয় সংস্কৃতির অংশ। সাধারণত বিস্কুট, আলু ভুজিয়া, সমুচা, কচুরি পরিবেশন হয় চায়ের সঙ্গে। এসব খাবারে রিফাইনড ময়দা, চিনি, লবণ, অস্বাস্থ্যকর চর্বি ভরপুর থাকে। যে কারণে ওজন, কোলেস্টেরল, ডায়বেটিকস বাড়ে; বিশেষ করে যদি প্রতিদিনই এসব খাওয়া হয়।

“নানখাটাই, বিস্কুট অবশ্যই এড়িয়ে চলা দরকার। বাইরে থেকে কেনা হলে এতে ব্যবহার করা তেলের মান ভালো হবে না। আবার ভাজা খাবার যেমন আলু ভুজিয়া, নিমকি, সমুচা, কচুরি, পাকোড়াও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এতে ট্রাইগ্লিসারিডস বেড়ে যায়। এসব খাবারে থাকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটস।”

“ডুবো তেলে ভাজা খাবার সপ্তাহে দুয়েকবার চলতে পারে, তাও অনেক কম পরিমাণে। অর্থ্যাৎ নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করা যাবে না কোনোভাবেই। বিস্কুট ও কুড়মুড়ে কিছু হলে বড় জোর দুই টুকরা খাওয়া যাবে প্রতিদিন।”

এখন অনেক পণ্যের গায়ে লেখা থাকে- ৫০ শতাংশ কম তেল, স্বাস্থ্যকর, ওটস দিয়ে বানানো ইত্যাদি। যে কোনো পণ্য কেনার সময় উপকরণ পড়ে ও বুঝে তারপরই কেনার অভ্যাস করা ভালো।

চায়ের সঙ্গে তাহলে কী জমবে?

চিপস, বিস্কুট, নিমকি, ড্রাই কেক ছাড়াও আড্ডাতে বিকল্প খাবারের সঙ্গে স্বাস্থ্যের দেখভাল নিশ্চিত করা যায়।

লুধিয়ানার দ্য ডায়েট এক্সপার্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী সিম্রাট কাঠুরিয়া বলেন, “বেক করা বা এয়ার ফ্রাই করা স্ন্যাকস তুলনামূলক স্বাস্থ্যকর হয়। এভাবে মটরশুটি, পপকর্ন, মাখনা খাওয়া যেতে পারে। আস্ত গমের বিস্কুট খাওয়া ভালো, বিশেষ করে বাসায় বানানো হলে।”

খাখরা, সিদ্ধ ভুট্টা, চিড়া, ঘরে বানানো ঢোকলা, সবজি পুর দিয়ে বেক করা সমুচা চায়ের সঙ্গে জমে যাবে খুব।

তবে যাই খাওয়া হোক না কেন, পরিমিত বোধ থাকতে হবে তাতে।

তাছাড়া চায়ের চিনি ও দুধের পরিমাণও খেয়াল করতে হবে। চিনি ছাড়া দিনে দুই-তিন কাপ চা চলতেই পারে।

চায়ে ক্যাফেইন থাকে, যা খালি পেটের জন্য ক্ষতিকর বলে জানালেন সিম্রাট কাঠুরিয়া।

“দুধ চায়ের সঙ্গে অবশ্যই কিছু না কিছু খাওয়া উচিত। নয়তো এসিডিটি ও ঢেকুর দেখা দিতে পারে।”

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত