Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫

সমালোচনার তীর সামলে কাজে মনোযোগী মিথিলা

ছবি: নূর
ছবি: নূর
[publishpress_authors_box]

সম্প্রতি সংগীতশিল্পী তাহসানের বিয়েকে কেন্দ্র করে ফের আলোচনায় এসেছেন তাহসানের প্রাক্তন স্ত্রী অভিনেত্রী মিথিলা। তাহসানের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মিথিলা ফের জড়ান নতুন দাম্পত্যে। বিয়ে করেন পশ্চিমবঙ্গের নির্মাতা সৃজিত মুখার্জীকে। তাহসান নতুন জীবনে পা ফেলায় বাহবা পেলেও সৃজিতকে বিয়ে করায় সমালোচনার বানে জর্জরিত হতে হয়েছিল মিথিলাকে।

তাহসানের বিয়ের ইস্যুকে কেন্দ্র করে মিথিলার সমালোচিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে অনেকেই দাবি করছেন মিথিলা কেবলই একজন নারী হওয়ায় তার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন সমালোচনাকারীরা।

অভিনেত্রী মিথিলা পেশাগত জীবনে ব্র্যাক এর আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। তাহসান-মিথিলার কন্যা আইরা মিথিলার কাছেই থাকছেন। পড়ছেন ঢাকার একটি স্কুলে। তাহসানকে ভুলে গত ২০১৯ সালে সৃজিতকে বিয়ে করেন তিনি। গুঞ্জন উঠেছে সৃজিতকে ফেলে মিথিলা ঢাকায় ফিরেছেন, সংসারে ভাঙনের জের ধরে।

তাদের কাঁটাতারের দুই প্রান্তে বসবাস নিয়ে অনেকেই বলছেন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানচিত্রের এ অবস্থানগত দুরত্ব পেরিয়ে তারা কি সত্যিই এক হতে পারবেন ভবিষ্যত পথচলায়?

তবে ফেইসবুক আইডিতে নিজের সম্পর্কের অবস্থান পরিস্কার করেছেন তিনি। এখনও যে সৃজিতের সাথেই আছেন তা সেখানেই নিশ্চিত হওয়া গেছে।

নন্দিত নির্মাতা সৃজিতও সম্প্রতি জানিয়েছেন ঢাকায় আসতে না পারলেও আইরাকে তিনি দারুণ মিস করছেন। এমন একটি সুন্দর সম্পর্ক নিয়ে স্যোসাল মিডিয়ার ট্রল হওয়া নিয়ে অনেকেই সোচ্চার হয়েছেন।

নারী হওয়াতেই সমালোচনার তীর উঠেছে মিথিলা ও রোজার দিকে। এমন দাবি করে তাহসানের প্রাক্তন ও বর্তমান স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন নারীবাদি লেখক তসলিমা নাসরিন।

তিনি লিখেছেন, “তাহসান জিতেছে, এই নিয়ে সবাই উল্লাস করছে। নারীবিদ্বেষী সমাজে সব পুরুষই জেতে। সর্বক্ষণ জেতে। তাদের হার নেই। হারতে হয় শুধু নারীকেই। কিন্তু আমি কি মনে করি মিথিলা বা রোজা হেরেছে? না। তারা একটুও হারেনি।

“তারা পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রথা ভেঙ্গে নিজের যোগ্যতায় স্বর্নিভরতা এবং স্বাধীনতা অর্জন করেছে- নারীবিদ্বেষী সমাজে নারীর জিতে যাওয়ার প্রথম শর্তই এটি। তারা ভ্রুক্ষেপ করছে না লোকের কুৎসা বা নিন্দেয়, এ জিতে যাওয়ার দ্বিতীয় শর্ত। ভাল না লাগলে তারা তাদের সঙ্গীকে, সে প্রেমিক হোক বা স্বামী হোক, ত্যাগ করতে পারছে, তারা বাধ্য নয় তাদের সঙ্গে এক ছাদের তলায় বাস করতে।”

এ ইস্যুতে ভাইরাল হয়েছে আলফ্রেড নোবেল নামে এক যুবকের একটি ফেসবুক পোস্ট। পোস্টটি নিজের ওয়ালে শেয়ার করে অভিনেত্রী মিথিলার পাশে দাঁড়িয়েছেন আরেক অভিনেত্রী রুনা খান।

আলফ্রেড নোবেল লিখেছেন, “বাংলাদেশে আপনারা যাকে বাজারের মেয়ে বলে ভেবেছিলেন সেই মেয়েটাই একটি বিশ্ব বিখ্যাত এনজিও ব্র্যাকের অন্যতম একজন কর্ণধার।

“যে মেয়েটির চরিত্র খারাপ বলে আপনারা গালাগাল করেছিলেন সেই মেয়েটি পৃথিবীর ১১ টি দেশে মা ও শিশুদের নিয়ে কাজ করে।”

“যার ছবি দেখে আপনারা এখনো হা হা রিয়েক্ট দেন সেই মেয়েটির মাস্টার্সের ডিগ্রী হচ্ছে দুটো, যার একটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যটি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের।গত পাঁচ বছর ধরে আপনারা যে অভিনেত্রীকে নিয়ে তুমুল সমালোচনায় মত্ত ছিলেন সেই মেয়েটি এই পাঁচ বছরে পিএইচডি ডিগ্রি নিচ্ছে। আগামী বছর সে পিইচডি ডিগ্রিধারী হবে।”

তিনি লিখেছেন, “একটি সংসারে দু’জন মানুষের বিচ্ছেদের পর দুটো মানুষের মাঝেই শূন্যতা বিরাজ করে।শূন্যস্থান কখনো খালি থাকেনা। সেই অভিনেত্রীর সেই স্থানটা দখল করেছে আরেকজন পুরুষ।

“এতে আপনি অভিনন্দন না জানিয়ে বাজে মন্তব্য করে আপনার জাতটা চিনিয়ে দিলেন। এতে কি তার কোন ক্ষতি হয়েছে? পুরুষ দশটা বিয়ে করলেও আপনার কিছু যায় আসেনা। আর নারী কোথাও সুখ খুঁজতে গেলে সে বাজারের পতিতা হয়ে যায়!”

রুনা খান লিখেছেন, “বহুদিন ভেবেছি এই কথাগুলো লিখবো। হয়ে উঠেনি, আজ এই গোছানো লেখার কথামালা দেখে পোস্ট করার ইচ্ছেটা সংবরণ করতে পারলাম না! জয়তু মিথিলা।”

তবে, সমালোচনায় গা না ভাসিয়ে নিজের কাজেই মনোযোগি মিথিলা। প্রথমবারের মতো, জনপ্রিয় কোরিয়ান নাটক ‘ডেসেন্ড্যান্টস অব দ্য সান (ডটস)’-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন তিনি। তবে এতে অভিনয় নয়, নাটকটির গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে বাংলা ডাবিংয়ে কণ্ঠ দেবেন এ তারকা। সিরিজটির দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ডক্টর ইউন মিউং জু চরিত্রে বাচিক অভিনয় করবেন অভিনেত্রী মিথিলা।

অভিনেত্রী মিথিলা বলেন, “এর আগে নিজের সিনেমায় নিজের অভিনীত চরিত্রে ডাবিং করেছি। কাজটি করতে ভীষণ ভালো লাগে, এক ধরনের চ্যালেঞ্জ ফেস করি। তবে কখনো অন্য কারও জন্য ডাবিং করিনি আমি।

“এজন্য এই কোরিয়ান ড্রামায় ডাবিং করা আমার জন্য হবে নতুন এক অভিজ্ঞতা। কারণ ভয়েস আর্টিস্টদের কাজ মোটেও সহজ নয়। এখানে শুধু সংলাপ বললেই হয় না। ঠোঁট মেলানো, চরিত্রের বৈশিষ্ট্য ও ইমোশন কণ্ঠে ধারণ করতে হয়।”

নাটকটির বাংলা ডাবিংয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন খালিদ হোসেন অভি। এর আগে ‘রিপ্লাই ১৯৮৮’, ‘লেজেন্ড অব দ্য ব্লু সি’ ও ‘মিস্টার কুইন’-এর মতো কোরিয়ান ড্রামাগুলোর বাংলা ডাবিং প্রযোজনা করেছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত