শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার সঙ্গে ভারতে তিনি কোন স্ট্যাটাসে অবস্থান করছেন তার কোনও সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মো. রফিকুল আলম।
বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেছেন।
মো. রফিকুল আলম বলেন, “বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা শেখ হাসিনাকে ভারতের কাছে ফেরত চেয়েছি। এই ফেরত চাওয়ার সঙ্গে ভারতে তার স্ট্যাটাসের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা (স্ট্যাটাস) আমাদের জন্য বিবেচ্য কোনও বিষয় নয়।”
শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সাধারণত পাসপোর্ট বাতিল হয়ে গেলে ভিসার কোনও বিষয় থাকে না। এর বাইরে বাড়তি কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই, তাই আমরা কোনও স্পেকুলেশন করব না।”
বাংলাদেশের কোনও নাগরিকের পাসপোর্ট বাতিল করা হলে সেই তথ্য সংশ্লিষ্ট মিশনের মাধ্যমে সেই দেশের সরকারকে পৌঁছে দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “কারও পাসপোর্ট বাতিল হলে, তার ভিসার প্রয়োজন হয় না।”
বাংলাদেশের চিঠির জবাবে ভারত কতদিন উত্তর না দিয়ে থাকতে পারবে এবং এক্ষেত্রে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া কী হবে তাও জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, “এর ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট উত্তর হয় না। আমরা ভারতের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করব।
“আমরা শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে চিঠি দিয়েছি। এখন আমরা অপেক্ষা করব। এ বিষয়ে আসলে কোনও ধরা-বাঁধা নিয়ম নেই। আমরা অপেক্ষা করছি।”
তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে ভারতেই অবস্থান করছেন তিনি। ভারত সরকারের দেওয়া বাড়িতে পরিপূর্ণ নিরাপত্তার মধ্যেই বসবাস করছেন।
বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক ও সাধারণ পাসপোর্ট বাতিল করলেও সম্প্রতি ভারতের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
যদিও শেখ হাসিনা কোন মর্যাদায় বা কোন উপায়ে ভারতে আছেন সে বিষয়ে কোনও প্রশ্নের জবাব এখন পর্যন্ত দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন, এমন কথাও বলা হয়নি।
পাসপোর্টবিহীন ভিনদেশী কাউকে কোনও দেশের সরকার চাইলে ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিতে পারে, যা দিয়ে তিনি অন্য দেশ ভ্রমণও করতে পারেন।
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশিদের ভারতের ভিসা না পাওয়ার প্রসঙ্গও উঠে আসে। রফিকুল আলম বলেন, “আমরা প্রত্যাশা করি ভারত যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার বিষয়টি স্বাভাবিক করতে তারা পদক্ষেপ নেবে।”
ভারতের নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশের ভিসা সীমিত করা হবে কিনা তা জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, “এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ। নিশ্চয় মন্ত্রণালয় বিবেচনায় রেখেছে।”
এছাড়া জুলাই গণহত্যা বিষয়ে আগামী সপ্তাহের মধ্যে জাতিসংঘের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির কাছে সব তথ্য দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আগামী ২০-২৪ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষিক সফরে চীনে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন। সেখানে তিনি চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেবেন।