Beta
সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫

রিয়ালকে গুঁড়িয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপ বার্সেলোনার

barcelona-51
[publishpress_authors_box]

গত বছরের অক্টোবরে রিয়াল মাদ্রিদকে তাদেরই মাঠে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল বার্সেলোনা। আড়াই মাসের ব্যবধানে আবারও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের গুঁড়িয়ে দিল কাতালানরা। এবার স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনালে রিয়ালকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে, তাও আবার ৩৪ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলে! গোলকিপার ভয়চেক সেজনি সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পর রিয়াল একজন খেলোয়াড় বেশি নিয়েও সুবিধা করতে পারেননি।

এল ক্লাসিকোকে এখন ‘একপেশে’ ম্যাচ বললেও ভুল হবে না। টানা দুটি ধ্রুপদী লড়াইয়ে তো একই ফল। ৪-০’র পর ৫-২ গোলের জয় বার্সেলোনার। ৫ গোল হজমের পর রিয়াল এতটা ভড়কে গিয়েছিল যে, ১০ জনের বার্সেলোনার বিপক্ষেও ছিল সাদামাটা পারফরম্যান্স। অথচ কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলে কী দারুণ শুরুই না পেয়েছিল মাদ্রিদের ক্লাবটি।

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের কিং আব্দুল্লাহ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়ামে শুরুতে এগিয়ে গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদই। কিন্তু বার্সেলোনা শুধু ঘুরেই দাঁড়ায়নি, উল্টো রিয়ালকে আরেকবার লজ্জায় ডুবিয়ে জিতে নিয়েছে চলতি মৌসুমের প্রথম শিরোপা। রিয়ালকে হারিয়ে ট্রফি উদযাপন, নতুন কোচ হান্সি ফ্লিকের যুগে শিরোপা-খাতা খুলতে এর চেয়ে সুন্দর উপলক্ষ আর কী হতে পারে।

প্রথমার্ধে বার্সেলোনার যে পারফরম্যান্স ছিল, সেজনি লাল কার্ড না দেখলে জয়ের ব্যবধান তাদের আরও বড় হতে পারতো। কেননা কাতালানরা প্রথমার্ধেই রিয়ালের জালে জড়ায় ৪ গোল। আর গোলগুলোও ছিল দেখার মতো। লামিন ইয়ামালের ঠাণ্ডা মাথায় থিবো কোর্তোয়াকে ফাঁকি দেওয়া কিংবা উড়ন্ত রাফিনিয়ার বুলেট গতির হেড- বার্সেলোনা যেন সুন্দর ফুটবলের নতুন সুরভী ছড়াল। রাফিনিয়া করেছেন জোড়া গোল। আর ইয়ামালের সঙ্গে একবার করে জাল খুঁজে নিয়েছেন রবার্ত লেভানদোভস্কি ও আলেহান্দ্রো বালদে।

কিন্তু ম্যাচের শুরুর চিত্র দিয়েছিল ভিন্ন পূর্বাভাস। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের পাস থেকে এমবাপ্পে গোল করে এগিয়ে নিলে লা লিগার সর্বশেষ এল ক্লাসিকোর প্রতিশোধের পথ তৈরি হয় রিয়ালের। যদিও বার্সেলোনার খেলায় ফিরতে সময় লাগেনি। ২২ মিনিটে রবার্ত লেভানদোভস্কির চমৎকার পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রিয়ালের দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে আড়াআড়ি শটে কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ইয়ামাল।

সেই যে গোল উদযাপন শুরু বার্সেলোনা, এরপর বিরতির আগপর্যন্ত সেটি চলতেই থাকে। ৩৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন লেভানদোভস্কি। নিজেদের বক্সে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা ফাউল করেন গাভিকে। রেফারি ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি দিলে গোল করতে ভুল করেননি পোলিশ স্ট্রাইকার।

লামিন ইয়ামালের গোলে সমতায় ফেরে বার্সেলোনা। ছবি: এক্স

মিনিট তিনেক পর আবারও গোল বার্সেলোনার। রাফিনিয়ার গোলটি ছিল দেখার মতো। অবশ্য জুলেস কুন্দেও প্রশংসা কুড়াবেন। তার মাপা ক্রস অনেকটা লাফিয়ে বুলেট গতির হেডে জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। এই গোল রিয়ালের দুর্বল ডিফেন্স চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।

চোটসমস্যা ও খেলোয়াড় পাল্টানোর কারণে প্রথমার্ধেই ইনজুরি টাইম দেওয়া ৯ মিনিট। সেটাও গড়িয়ে যায় দশম মিনিটে। বিরতির বাঁশি বাজবে বলে, ঠিক ওই সময় বার্সেলোনাকে চতুর্থ গোল এনে দেন বালদে। প্রতিআক্রমণ থেকে দ্রুতগতিতে বল নিয়ে ওপরে উঠে রাফিনিয়ার বাড়ানো বল থেকে লক্ষ্যভেদ করেন এই ফুলব্যাক।

জোড়া গোল করে ম্যাচের সেরা রাফিনিয়া। ছবি: এক্স

বিরতিতে থেকে ফিরেই আবার গোল বার্সেলোনার। দ্বিতীয়বার স্কোরশিটে নাম তোলেন রাফিনিয়া। রিয়াল পিছিয়ে পড়ে ১-৫ গোলে। এরপরই এল ক্লাসিকোতে নতুন উত্তেজনার তৈরি হয় বার্সেলোনা ১০ জনের দলে পরিণত হলে। বক্সের বাইরে এসে বল আটকানোর চেষ্টা করতে গিয়ে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ফাউল করেন সেজনি। ফরাসি তারকা ডাইভ দিয়েছেন ভেবে রেফারি তাকেই দেখান হলুদ কার্ড! পরে অবশ্য ভিএআরের সাহায্যে সিদ্ধান্ত পাল্টে সেজনিকে লাল কার্ড দেখান রেফারি।

ওই ফাউল থেকে পাওয়া ফ্রি কিক থেকেই রিয়ালকে দ্বিতীয় গোল এনে দেন রোদ্রিগো। নির্ধারিত সময় শেষ হতে তখনও ৩৪ মিনিট বাকি। ১০ জনের বার্সেলোনার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোর দারুণ সুযোগ ছিল মাদ্রিদের অভিজাতদের। কিন্তু পারেনি। সুযোগ নষ্ট ও পরিকল্পনাহীন ফুটবলে আর একটি গোলও করতে পারেনি। বিপরীতে একজন কম নিয়ে খেলা বার্সেলোনা এমবাপ্পেদের খেলা নষ্ট করার সঙ্গে জমাট রক্ষণে রিয়ালকে আটকে রেখে মৌসুমের প্রথম শিরোপা উদযাপন করেছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত