যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ছড়িয়ে পড়া দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ এ দাঁড়িয়েছে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিখোঁজ রয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দাবানলে মৃত ২৪ জনের মধ্যে ১৬ জনের মরদেহ শহরের ইটন এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি ৮ জনের মরদেহ প্যালিসেডস এলাকায় পাওয়া যায়।
এদিকে দাবানলে চলমান ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেই আরও বিপদের কথা জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা। তারা সতর্ক করে বলেছেন, গত মঙ্গলবার শহরজুড়ে দাবানল ছড়িয়ে পড়তে ভূমিকা রাখা শক্তিশালী ঝোড়ো হাওয়া স্যান্টা অ্যানা রবিবার রাত থেকে আবার বইতে শুরু করতে পারে।
গত শুক্রবারের দিকে এর গতি কমে এলেও রবিবার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত ঘণ্টায় ৬০ মাইল বেগে এই ঝড়ো হাওয়া লস অ্যাঞ্জেলেসের ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।
এর অর্থ গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া দাবানল ঝড়ো হাওয়ার মাধ্যমে রবিবার রাতে পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করে আরও নতুন নতুন জনপদ জ্বালিয়ে দিতে পারে।
এই পরিস্থিতিকে ‘বিশেষ বিপজ্জনক’ উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস সতর্কতা জারি করেছে। তারা বলেছে, সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত দাবানল চরম আকার ধারণ করতে পারে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অগ্নি নির্বাপণকর্মীরা লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যালিসেডস ও ইটন এলাকায় দাবানল ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কিছুটা সফল হলেও ওই দুই এলাকার পাশাপাশি হারস্ট এলাকায় দাবানল নেভানো যায়নি, এখনও জ্বলছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ এই দাবানলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যালিসেডস এলাকা। সেখানকার ২৩ হাজার একরের বেশি জমি আগুনে ভস্ম হয়ে গেছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে মাত্র ১৩ শতাংশ জমির।
প্যালিসেডসের পরে আছে ইটন। এই এলাকার ১৪ হাজার একরের বেশি জায়গা দাবানলে ক্ষত-বিক্ষত। মাত্র ২৭ শতাংশ জায়গার দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে অগ্নি নির্বাপণকর্মীরা।
তবে হারস্ট এলাকায় ৭৯৯ একরজুড়ে ছড়িয়ে পড়া দাবানল এখন পুরোপুরিই নিয়ন্ত্রণে।
দাবানলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ শুরুতে ৮ বিলিয়ন ডলার বলা হলেও রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পূর্বাভাসকারী সংস্থা অ্যাকুওয়েদার জানিয়েছে, প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ২৫০-২৭৫ বিলিয়ন ডলার।