Beta
সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
সোমবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫

হেনরীর ৩৫ অ্যাকাউন্টে ২ হাজার কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন

দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর
ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেনের আদালতে সোমবার হাজির করা হয় সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীকে।
ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেনের আদালতে সোমবার হাজির করা হয় সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীকে।
[publishpress_authors_box]

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এক মামলায় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেনের (গালিব) আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে।

এর আগে হেনরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ।

দুদকের পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। 

শুনানি চলাকালে বিচারক হেনরীকে প্রশ্ন করেন, “আপনি কি দুই হাজার দুই কোটি টাকার সম্পদের মালিক?”

জবাবে সাবেক সংসদ সদস্য বলেন, “আমার ইনকাম ট্যাক্স ফাইলে দুই হাজার দুই কোটির কথা উল্লেখ আছে। এর বাইরে আমার কিছু জানা নেই।”

এরপর দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর আদালতকে বলেন, “আয়কর দিলেও সম্পদ বৈধ না। এক্ষেত্রে সম্পদের উৎস থাকতে হবে। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর প্রার্থনা করছি।”

পরে আদালত জান্নাত আরা হেনরীকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসামি হেনরী অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপরাধমূলক অসদাচারণের মাধ্যমে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ২২৩ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেন।

এছাড়া ৩৫টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২ হাজার ২ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭৭ টাকা এবং ১৩ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ মার্কিন ডলারের সন্দেহজনক লেনদেন করে মানিলন্ডারিং-এর সম্পৃক্ত অপরাধ ‘দুর্নীতি ও ঘুষ’ সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে সেগুলো রূপান্তর/স্থানান্তর করেন হেনরী।

একই আদালত শনিবার হেনরীর নামে থাকা ৫৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৯ হাজার ৯২ টাকার সম্পত্তি জব্দের আদেশ দেয় আদালত। এর মধ্যে ১৯ দশমিক ৮২ একর জমি, ৩টি বাড়ি, ২টি ফ্ল্যাট, ১৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ১৬টি গাড়ি আছে। 

শিক্ষকতা ছেড়ে রাজনীতিতে আসা হেনরী ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-২ আসনে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য হন।

এর আগে তিনি ২০০৮ সালে সহকারী শিক্ষক থেকে সরাসরি সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে ব্যাপক সাড়া ফেললেও বিএনপির প্রার্থী রুমানা মাহমুদের কাছে হেরে যান।

ওই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান হেনরী।

সেসময় ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি এবং অন্যান্য ঘটনায় তার নাম আলোচনায় আসে। হলমার্ক কেলেঙ্কারিতে দুদক তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর হেনরী ও তার স্বামী সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. লাবু তালুকদার মৌলভীবাজারে এক বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।

সেখান থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর র‌্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে সিরাজগঞ্জ সদরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে করা এক মামলায়।

এর আগে গত ২০ আগস্ট হেনরীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।

এর ধারাবাহিকতায় হেনরী ও তার স্বামী লাবু তালুকদারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ৭৮ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২৩ ডিসেম্বর পৃথক দুটি মামলা করে দুদক।

দুদকের দাবি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫৭ কোটি ১৩ লাখ ৭ হাজার ২২৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন হেনরী। এছাড়া তার স্বামীর রয়েছে ২০ কোটি ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার ২১৫ টাকার অবৈধ সম্পদ।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত