আন্দোলন চলকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে করা মামলায় ছাত্রলীগ নেতা বেনজীর হোসেন নিশিকে দুই দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকালে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি. এম. ফারহান ইশতিয়াকের আদালত এ অনুমতি দিয়েছে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিশিকে এদিন শাহবাগ থানার ওই মামলায় আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলায় তাকে ১০ দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন ডিবি পুলিশের রমনা জোনাল টিমের উপপরিদর্শক ইরফান খান।
আসামিপক্ষের আইনজীবী এম. নোমান হোসেন তালুকদার রাখি রিমান্ড আবেদন বাতিলের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী এর বিরোধিতা করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ২০২২ সালে ছাত্রলীগের পদ থেকে তিনি সরে এসেছেন। এরপর থেকে তিনি আরও কোনও রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে জড়াননি। দুই দিন আগে সাতক্ষীরা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৩৬ ঘণ্টা তিনি পুলিশ হেফাজতে ছিলেন।
তারা বলেন, একজন নারী আসামি বিবেচনায় তাকে সাতক্ষীরা কোর্টে নিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে ৩৬ ঘণ্টা পরে তাকে ঢাকার আদালতে আনা হয়েছে। ৩৬ ঘণ্টা হেফাজতে থাকায় আর জিজ্ঞাসাবাদ করার কিছুই থাকে না। নারী আসামি বিবেচনায় প্রয়োজনে তাকে জেল গেইটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিতে পারেন।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “এই আসামির নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এর আসামির ইন্ধনে শিক্ষার্থীরা গুরুতর আহত হয়েছে।
“ঘটনার সিসি ক্যামেরায় তাকে দেখা গেছে। এর পেছনে আরও কারা কারা জড়িত, রিমান্ডে নিলে তা বেরিয়ে আসবে। আসামির ১০ দিনের রিমান্ডের প্রার্থনা করছি।”
শুনানি শেষে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ডে মঞ্জুর করে।
এর আগে সিএমএম আদালতের হাজতখানা থেকে আদালতে নেওয়ার সময় বেনজীর হোসেন নিশি স্লোগান দিতে দিতে বলেন, “জয় বাংলা, শেখ হাসিনা আবারও আসবে, জয় বাংলা।”
গত ১২ জানুয়ারি সাতক্ষীরা থেকে নিশিকে আটক করে পুলিশ। এরপর তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলায় বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা হামলা করে। এতে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
এ ঘটনায় গত ২৮ অক্টোবর হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ২২০ আসামির নাম উল্লেখ করে শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন সার্জেন্ট জহিরুল হক হলের শিক্ষার্থী আরমান হোসাইন। মামলায় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এক নম্বর আসামি। নিশি ২১০ নম্বর আসামি।