সাবেক উপমন্ত্রী ও ভোলা-৪ আসনের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল জ্যাকব, তার স্ত্রী নীলিমা নিগার সুলতানা, মেয়ে জুল জালালে আল ইসলাম জেনিক ও ছেলে আবরার তপন ইসলাম জেনিল এবং সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন ও তার ছেলে জাকির হোসেন জুমনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
দুদকের আলাদা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এসব আদেশ দেয়।
দুদকের উপপরিচালক এস এম রাশেদুর রেজা পরিবারসহ জ্যাকবের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেছিলেন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। শুনানি শেষে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।
আবেদনে বলা হয়, জ্যাকব ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাত করে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এর পাশাপাশি তাদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগও অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রের স্বার্থে এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে এসব অভিযোগ অনুসন্ধান গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে দুদক আবেদনে বলেছে, অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তারা যেন বিদেশে চলে যেতে না পারেন সেজন্যেই তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চায় দুদক।
এর আগে গত বছরের ১ অক্টোবর আবদুল্লাহ আল জ্যাকবকে ঢাকার গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। হত্যা, হত্যাচেষ্টার বিভিন্ন মামলায় তাকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
অন্যদিকে, ছেলেসহ সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারি পরিচালক নাজমুল ইসলাম।
আবেদনে বলা হয়, শাহাব উদ্দিন ও তার ছেলে জাকির হোসেন জুমনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে শাহাব উদ্দিন ও তার ছেলে জাকির হোসেনের বিদেশ যাওয়া রোধ করা প্রয়োজন। এতে কমিশনের অনুমোদন রয়েছে বলেও জানানো হয়।
তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে সাবেক সরকার সংশ্লিষ্টদের নামে মামলা হতে শুরু করে। সেইসঙ্গে আটক ও গ্রেপ্তার হতে শুরু করেন সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতারা, যার ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সময়ে একে একে গ্রেপ্তার হন আব্দুল্লাহ আল জ্যাকব, শাহাব উদ্দিনসহ অন্যরা।