Beta
শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

টিউলিপের পদত্যাগ: যুক্তরাজ্যের কোন সংবাদমাধ্যমে কী শিরোনাম

tulip-news-headlines
[publishpress_authors_box]

দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পর তীব্র সমালোচনা ও চাপের মুখে নতি স্বীকার করে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি সম্পর্কে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি।

মিনিস্টার হিসাবে টিউলিপের দায়িত্ব ছিল আর্থিক খাতের দুর্নীতি প্রতিরোধ করা। কিন্তু তিনি নিজেই সেই অভিযোগে বিদ্ধ হয়ে দায়িত্ব গ্রহণের আট মাসের মধ্যে বিদায় নিতে বাধ্য হলেন।

স্বৈরাচারের তকমা নিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই তার ভাগ্নি লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নির্বাচিত এমপি টিউলিপের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ আসতে থাকে।

টিউলিপের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ ওঠে একটি বাড়ির ভাড়ার তথ্য গোপনের। এরপর সেন্ট্রাল লন্ডনে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগ সামনে আসে, যে ব্যবসায়ী আবার তার খালা শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সমর্থক। এরপর অন্যের মালিকানায় থাকা একটি বিলাসবহুল বাড়িতে বিনা ভাড়ায় বসবাসের অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। এরপর তার বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীরও হ্যাম্পস্টেডের একটি ফ্ল্যাট মুফতে পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই ফ্ল্যাটটিরও আগের মালিক ছিলেন শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক আইনজীবী। এর মধ্যে বাংলাদেশের রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের ৪০০ কোটি পাউন্ড আত্মসাতে জড়িত থাকার অভিযোগও ওঠে টিউলিপের বিরুদ্ধে।

দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেছেন লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক।

এসব অভিযোগের সঙ্গে তার খালা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার খবরও আসতে থাকে যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্রগুলোতে। সঙ্গে বিরোধীদল থেকে শুরু করে নিজের দল লেবার পার্টির সমালোচনার মুখে পড়েন ৪২ বছর বয়সী টিউলিপ। এরই ধারাবাহিকতায় তার খালা শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার ছয় মাসের মধ্যেই তাকেও পদত্যাগ করে সরকার থেকে সরে দাঁড়াতে হলো।

টিউলিপকে বাংলাদেশের মানুষ চেনে বঙ্গবন্ধুর নাতনি, শেখ হাসিনার ভাগ্নি, শেখ রেহানার মেয়ে হিসাবে। আর সেই সম্পর্কই এখন তার পতনের কারণ হয়ে দাঁড়াল।

টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার পর থেকে এ সংক্রান্ত খবরে ভরা থাকছিল দেশটির সংবাদপত্রগুলো, সঙ্গত কারণে তার পদত্যাগের খবরটিও যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমগুলোতে ফলাও করে ছাপা হয়েছে।

কার কী শিরোনাম

বিবিসি: টিউলিপের পদত্যাগের খবরটি বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই প্রকাশ করেছে বিবিসি। তাদের সংবাদের শিরোনাম, ‘ট্রেজারি মিনিস্টার হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ।’

এই সংবাদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত নিয়ে চাপ বাড়ার প্রেক্ষাপটে পদত্যাগ করেছেন ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক।

টিউলিপের পদত্যাগের খবর নিয়ে বিবিসির শিরোনাম।

দ্য টাইমস: দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের ‘দুর্নীতি দমন মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক’ শিরোনামে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ তার খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে তীব্র তদন্তের মুখোমুখি হয়েছিলেন।’

টেলিগ্রাফ: টিউলিপের পদত্যাগের খবর নিয়ে আরেক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ‘জনগণকে বিভ্রান্ত করার প্রমাণ মেলায় পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের খবরে টেলিগ্রাফের শিরোনাম।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ‘টিউলিপ সিদ্দিক অনিচ্ছাকৃতভাবে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের নৈতিক উপদেষ্টার কাছে, যার কারণে দুর্নীতি দমন মন্ত্রী পদ থেকে মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ।’

ইন্ডিপেন্ডেন্ট: যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিউলিপের পদত্যাগের খবরে শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশের দুর্নীতি তদন্তের মধ্যে সরকারের মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক।’

টিউলিপের পদত্যাগের খবরে ইন্ডিপেন্ডেন্টের শিরোনাম।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার খালা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগের তদন্তে নাম আসার পর পদত্যাগ করেছে টিউলিপ সিদ্দিক।’

দ্য গার্ডিয়ান: টিউলিপের পদত্যাগের খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে দ্য গার্ডিয়ানও। ‘বাংলাদেশিদের সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের অভিযোগে ট্রেজারি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক’ শিরোনামে সংবাদমাধ্যমটিতে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক তার খালা, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্কিত সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগে চাপে ছিলেন।’

মিরর: টিউলিপের পদত্যাগের খবরে নিয়ে মিরর যে প্রতিবেদশ প্রকাশ করেছে তার শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশি দুর্নীতির তদন্তের মধ্যে লেবার পার্টির মন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক’।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্ত শুরুর পর ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে থাকা লেবার পার্টির সরকারের ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন।

মিররে যেভাবে এসেছে টিউলিপের পদত্যাগের খবর।

ডেইলি মেইল: টিউলিপের পদত্যাগের সংবাদ বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে ডেইলি মেইলও, যে সংবাদমাধ্যমটি এতদিন টিউলিপের বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের খবরও ফলাও করে প্রকাশ করছিল।

‘যুক্তরাজ্যের মন্ত্রী বাংলাদেশে দুর্নীতি তদন্তে সরকারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন’ শিরোনামে সংবাদমাধ্যমটির প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত নেতা ও টিউলিপের খালা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সেদেশের তদন্তে নাম আসার পর মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য সরকার থেকে দুর্নীতি দমন মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন।’

দ্য সান: সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের খবরটি ফলাও করে প্রকাশ করেছে দ্য সানও।

“বাংলাদেশের শাসকদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে চাপে থাকা টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতি দমন মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, তবে ‘অন্যায়ে সম্পৃক্তার’ কথা  অস্বীকার করেছেন” শিরোনামে তাদের এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার আজ রাতে বড় ধাক্কা খেয়েছেন।’

দ্য সানের শিরোনাম।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত