জুলাই আন্দোলন নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দ্য রিমান্ড। তবে এর সরকারি মুক্তির সনদপ্রাপ্তি নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।
জানা যায়, যথাযথ নির্মাণ শেষে মুক্তির লক্ষ্যে চলচ্চিত্রটি সেন্সর সার্টিফিকেশন বোর্ডে দেয়া হয়। গেল বছরের ৩০ ডিসেম্বর সিনেমাটি সার্টিফিকেশন বোর্ড চলচ্চিত্রটি দেখেন।
নির্মাতা আশরাফুর রহমান সম্প্রতি গণমাধ্যমে অভিযোগ করে জানিয়েছেন, অজ্ঞাত কারণে সিনেমাটি আটকে রাখা হয়েছে। এমনকি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি তাকে।
তিনি বলেন, “জুলাই আন্দোলন নিয়ে নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রট এটি। যেখানে ছাত্রদের বীরত্ব এবং ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার প্রতিটি স্টেপকে আমরা জাতির সামনে তুলে ধরে তাদের স্পিরিটটাকে ধরে রাখবার লক্ষ্যে এ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছি।
“এখানে মূলত পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলচ্চিত্রের ভাষায় তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি। চলচ্চিত্রটি সার্টিফিকেশন বোর্ডে জমা দেয়া হয়েছে। তারা ছবিটি দেখেছেন, অনেকদিন পেরিয়ে গেছে, কিন্তু কিছুই বলছেন না। মুখে কুলুপ এটে বসে আছেন।”
এ প্রসঙ্গে সকাল সন্ধ্যার কথা হয় সার্টিফিকেশন বোর্ডের সদস্য কাজী নওশাবা আহমেদের সাথে।
কী কারণে চলচ্চিত্রটি সার্টিফিকেশন ঝুলে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যখন সিনেমাটি দেখেছি আমাদের বোর্ডের সবার মনে হয়েছে তিনি যে কারণে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন তার উদ্দেশ্যটি চমৎকার। তবে, চলচ্চিত্রটিতে কিছু তথ্য আছে যেগুলো ইতিহাসের প্রয়োজনে সত্যতা যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে। পরবর্তীতে সেটি আবার দেখা হয়েছে বলে জানি, আমি অসুস্থ থাকায় আপডেটেড তথ্যটি দিতে পারছি না।”
নওশাবার কাছে সদুত্তর না মেলায় সকাল সন্ধ্যার কথা বলে সার্টিফিকেশন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের সাথে।
তিনি বলেন, “চলচ্চিত্রটি দেখার পর বোর্ড কিছু অবজারভেশান দিয়েছে। এটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে, এ কথা নির্মাতা বা প্রযোজককে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তার কারণ, চলচ্চিত্রটি নিয়ে বোর্ডের সংশোধনী প্রস্তাব চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেয়ার পর তাদের হাতে পৌঁছাবে। আশা করি খুব দ্রুতই তারা তা হাতে পাবেন।”
আশরাফুর রহমানের পরিচালনায় সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জাকিয়া বারী মম, পারভেজ আবির চৌধুরী, সালহা খানম নাদিয়া, লুৎফর রহমান জর্জ, কাজী হায়াৎ, মারুফ আকিব প্রমুখ।
অভিনেতা আবির চৌধুরী বলেন, “ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতন ঘটেছে। এটা বাঙালিদের অনন্য অর্জন। এই অর্জনকে দালিলিক রূপ দিতে পরিচালক আশরাফুর রহমান ভাই সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন।
“আমি এই সিনেমার একটা অংশ হতে পেরে গর্বিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর ওরা ১১ জন যেমন প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, আগামী প্রজন্মের কাছেও দ্য রিমান্ড জুলাই বিপ্লবের পর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। প্রযোজক চান সিনেমাটি দ্রুত সারা দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দিতে। সেই তোড়জোড়ও চলছে।“
চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছেন অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন।