‘ছাগলকাণ্ডে’ আলোচনায় আসা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে অস্ত্র আইনের মামলায় তিন দিন পুলিশের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ (রিমান্ড) শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রিমান্ড শেষে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপপরিদর্শক রুবেল মিয়া।
এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তারের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. রুবেল মিয়া আসামি মতিউরকে আদালতে হাজির করে হেফাজতে রেখে ১০ দিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চাইলে গত ১৫ জানুয়ারি তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
গত ১৪ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। ডিবির সদস্যরা বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদে মতিউর অস্ত্রের কথা স্বীকার করেন। তিনিই তার শয়নকক্ষের আলমারি থেকে বিদেশি পিস্তল বের করে দেন।
মতিউর স্ত্রী লায়লা কানিজের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জাল-জালিয়াতির অভিযোগে করা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গত ১৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত এই আদেশ দেয়। একইসঙ্গে তার রিমান্ড শুনানির জন্য আগামী রবিবার (১৯ জানুয়ারি) তারিখ ঠিক করা হয়।
গত ৬ জানুয়ারি লায়লা কানিজের বিরুদ্ধে ১৩ কোটি ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পাশাপাশি ১ কোটি ৫৩ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব সম্পদ অর্জনে মতিউর রহমানের সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে। এজন্য তাকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
গত কোরবানির ঈদে ঢাকার মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে মুশফিকুর রহমান নামে এক তরুণের ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে জানা যায়, ওই তরুণ তৎকালীন এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে।
এরপর থেকে মতিউর রহমানের ছেলের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, বিলাসবহুল জীবনযাপন আলোচনায় আসে। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলোবাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি থাকা নিয়েও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়।
এই ‘ছাগলকাণ্ডে’ আলোচিত এই রাজস্ব কর্মকর্তার ‘অবৈধ সম্পদের’ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদকও। সেজন্য দুদকের উপ পরিচালক আনোয়ার হোসেনকে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে।