রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় নিম্ন আদালতে জামিন না পেয়ে এবার উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী।
জামিন আবেদনটি রবিবার বিচারপতি আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী রেজার হাই কোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় ৩০৬ নম্বরে থাকলেও শুনানি হয়নি।
তবে চলতি সপ্তাহেই এ আবেদনের ওপর শুনানির কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, “রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ গত ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদেশ দেয়। এ নিয়ে হাই কোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে গত ১২ জানুয়ারি হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি করা হয়।”
চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া এ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোটের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
চিন্ময়ের পক্ষে লড়তে আইনজীবী গেলেন, বিফল হয়ে ফিরলেন
পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করার পর জামিন নামঞ্জুর করে তাকে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। এরপর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়াকে কেন্দ্র করে সেদিন আদালত প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সাইফুল ইসলাম নামে এক আইনজীবীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়েছে। এসময় মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় ৪০ জনকে।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হলে তার প্রতিবাদে গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে সমাবেশ হয় ‘সনাতন জাগরণ মঞ্চ’ ব্যানারে। ওই সমাবেশের অন্যতম উদ্যোক্তা ও মুখপাত্র ছিলেন চিন্ময়।
চিন্ময়ের কর্মকাণ্ডের দায় নেবে না ইসকন
এরপর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময়কে।
২৫ অক্টোবরের সেই সমাবেশের দিন চট্টগ্রাম নগরীর নিউ মার্কেট মোড়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপরে ইসকনের গেরুয়া রঙের আরেকটি পতাকা ওড়ানোর অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে ৩০ অক্টোবর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়।
যদিও বিএনপির যে নেতা এই মামলা করেছিলেন, পরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।