Beta
সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা শপথে কী পড়েন, কীভাবে পড়েন

২০০৯ সালে প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন বারাক ওবামা।
২০০৯ সালে প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন বারাক ওবামা।
[publishpress_authors_box]

যে শপথ নিয়ে এক বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প; সেই শপথ আবার নিতে যাচ্ছেন তিনি।

রিপাবলিকান ট্রাম্প সোমবার ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে শপথ নেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসাবে তার দ্বিতীয় যাত্রা শুরু করবেন।

ক্যাপিটল ভবনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে শপথ নেবেন ট্রাম্প। আর সব দেশের প্রেসিডেন্টের মতোই তাকে কিছু বাক্য উচ্চারণ করে শপথ নিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা যে শপথ বাক্য পাঠ করেন, তা হলো-

“আমি সর্বান্তকরণে শপথ করছি (অথবা নিশ্চিত করছি) যে, আমি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে বিশ্বস্ততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করব এবং আমার সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে দেশের সংবিধান সংরক্ষণ করব, একে সুরক্ষা দেব এবং এর প্রতিপালন করব।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শপথ পাঠের রীতি বিভিন্ন সময়ে বদলেছে। প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের সময় শপথে প্রশ্নবোধক বাক্যের উত্তর দেওয়ার মতো করে শপথ নিতে হতো। যেমন “আপনি জর্জ ওয়াশিংটন, সর্বান্তকরণে শপথ নিচ্ছেন.. কি না?” তখন প্রেসিডেন্টকে বলতে হতো- “হ্যাঁ’।

পরে নানা সময়ে পরিবর্তিত হয়ে এখন শপথ বাক্য পাঠকারীর সঙ্গে সঙ্গে পড়ার রীতি চালু হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের শপথ বাক্য পাঠের সময় খ্রিস্টানদের ধর্মীয় গ্রন্থ বাইবেলে হাত রাখার প্রথা রয়েছে। শপথ বাক্য পাঠের সময় ডান হাত থাকে ওপরে, বাম হাত থাকে বাইবেলের ওপর।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনও ১৭৮৯ সালে বাইবেলে হাত রেখেই শপথ নিয়েছিলেন। শপথ নিয়ে বাইবেলে চুমুও খেয়েছিলেন তিনি। পরবর্তী প্রেসিডেন্টরাও তাই করতেন।

তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন কয়েকজন। টমাস জেফারসন, ক্যালভিন কুলিজ, থিয়োডর রুজভেল্টও শপথ নেওয়ার সময় বাইবেলে হাত রাখেননি।

জুন কুইন্সি এডামস আবার বাইবেলের বদলে আইনের একটি বইয়ে হাত রেখে শপথ নেন। তিনি এটা বোঝাতে চেয়েছিলেন যে তিনি আইনের প্রতি অনুগত থাকবেন।

২০১৭ সালে প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্টের শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
২০১৭ সালে প্রথম মেয়াদে দুটি বাইবেলে হাত রেখে প্রেসিডেন্টের শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

হ্যারি ট্রুম্যান, ডোয়াইট আইসেনহাওয়ার, রিচার্ড নিক্সন, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বারাক ওবামা এমনকি প্রথম মেয়াদে শপথের সময় ট্রাম্পও দুটি বাইবেলে হাত রেখেছিলেন। বাইডেন শপথ নিয়েছিলেন চামড়ায় মোড়া একটি বাইবেলে হাত রেখে। সেটি ছিল ১৮৯৩ সাল থেকে তাদের পারিবারিক সম্পত্তি।

প্রথা অনুসারে ক্যাপিটাল ভবনের পশ্চিম প্রাঙ্গণে প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠান হয়। তবে এবার শীতল আবহাওয়ার কারণে ক্যাপিটল রাউটেন্ডা হলে হবে শপথ অনুষ্ঠান।

এই শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের একটি সেনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের একটি যৌথ কমিটি।

প্রথা অনুসারে প্রথমে শপথ নেন ভাইস প্রেসিডেন্ট; তারপর শপথ নেন প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্পের সঙ্গে এবার ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন জে ডি ভান্স।

ভাইস প্রেসিডেন্টের শপথ বাক্যটি আলাদা। ১৮৮৪ সাল থেকে ভাইস প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি সেনেটর, প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য এবং অন্যান্য কর্মচারীরাও একই শপথ বাক্য পাঠ করে আসছেন।

ভাইস প্রেসিডেন্টের শপথ বাক্যটি হলো-

“আমি সর্বান্তকরণে শপথ করছি (অথবা নিশ্চিত করছি) যে, আমি সংবিধান মেনে চলব, দেশি-বিদেশি যেকোনো শত্রুর হাত থেকে সংবিধানকে রক্ষা করব। আমি সংবিধানের প্রতি সত্যিকারের বিশ্বাস ও আনুগত্য পোষণ করব। কারও প্রতি অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী না হয়ে আমি স্বাধীনভাবে এই দায়িত্ব গ্রহণ করছি। যে দায়িত্ব পালনে এবং যে পদে কাজ করতে আমি এগিয়ে যাচ্ছি, তা সুচারুভাবে এবং বিশ্বস্ততার সঙ্গে পালন করব। ঈশ্বর আমাকে সহায় হন।”

১৯৮৫ সালে শপথ নেওয়ার পর ভাষণ দেন রোনাল্ড রেগান।
১৯৮৫ সালে শপথ নেওয়ার পর ভাষণ দেন রোনাল্ড রেগান।

শপথ নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট অভিষেক ভাষণ দেন। তারপর বিদায়ী প্রেসিডেন্টকে বিদায় জানান। এরপর সেনেট চেম্বারের কাছাকাছি প্রেসিডেন্ট রুমে শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন নতুন প্রেসিডেন্ট। তারপর আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে হবে মধ্যাহ্ন ভোজ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠান ২০ জানুয়ারি হওয়ার রীতি রয়েছে, যাকে অভিষেক দিবস বলা হয়ে থাকে। চার বছর পরপর দিনটি আসে।

তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন রবিবার শপথ অনুষ্ঠান হয় না। যদি কোনও দিন ২০ জানুয়ারি রবিবার হয়ে যায়, তবে শপথ অনুষ্ঠান হবে ২১ জানুয়ারি।

তথ্যসূত্র : ইউএসএ.গভ

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত