Beta
বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫

ট্রাম্পের ‘সোনালি যুগের’ স্বপ্নে চ্যালেঞ্জ যেখানে

শপথ নিতে ক্যাপিটল ভবনের রাউটেন্ডা হলে ঢোকার পথে ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার সেখানেই তিনি প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন।
শপথ নিতে ক্যাপিটল ভবনের রাউটেন্ডা হলে ঢোকার পথে ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার সেখানেই তিনি প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন।
[publishpress_authors_box]

যুক্তরাষ্ট্রবাসীকে ‘সোনালি যুগের’ স্বপ্ন দেখিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিজের দ্বিতীয় যাত্রা শুরু করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ নিয়েই বইয়ে দিলেন নির্বাহী আদেশের ঝড়। অনেক কিছুই বদলে দিতে চাইছেন তিনি, কিন্তু অন্য সবাইকে চটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘মহান’ করে তুলতে তার স্বপ্ন পূরণে চ্যালেঞ্জও আছে অনেক।

সমালোচনামুখর বিদায়ের চার বছর পর হোয়াইট হাউজে ফিরতে সোমবার শপথ নিয়ে অভিষেক ভাষণে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পতনের হলো শেষ, তার দায়িত্ব নেওয়ার মধ্য দিয়ে সূচনা হলো সোনালি যুগের।

তারপর শতাধিক নির্বাহী আদেশে সই করেন তিনি। তার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা সম্প্রসারণ, অভিবাসীদের সংখ্যা কমানো, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানো, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেওয়া, এমন নানা কিছু।

গত নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পর থেকেই তার উপদেষ্টা ও সহযোগীরা এসব নির্বাহী আদেশের খসড়া তৈরিতে হাত দিয়েছিলেন। তারা এমনটাও বলছিলেন, ২০১৭ সালে ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের সময়ের চেয়ে এবার তাদের প্রস্তুতি আরও ভালো, যেখানে সেবার তার প্রাথমিক পদক্ষেপ দেখে তার দল রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রশ্ন উঠেছিল।

এবার ট্রাম্প আগের চেয়ে বেশি শক্তি নিয়েই ফিরলেন প্রেসিডেন্টের পদে। পপুলার ভোটেও এবার এগিয়েছিলেন তিনি। সেনেট ও প্রতিনিধি পরিষদেও এখন তার দল রিপাবলিকান পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা। তবে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা তিনি পাবেন সর্বোচ্চ আদালত থেকে।

বাইবেলে হাত রেখে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প; বাইবেল দুটি ধরে ছিলেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প।

অতি রক্ষণশীলদের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্ট এরই মধ্যে আইনি লড়াইয়ে ট্রাম্পকে কিছু জয় উপহার দিয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হয়েও সাজা খাটতে হয়নি তাকে, ক্যাপিল ভবনে হামলার প্ররোচনার দায়ও এড়িয়ে যেতে পেরেছে। বর্তমান সুপ্রিম কোর্টের নয় বিচারকের প্যানেলের এক-তৃতীয়াংশের নিয়োগ ট্রাম্প আগের বার দিয়ে গিয়েছিলেন।

ট্রাম্প আগামী চার বছরে যে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে এগোতে চাইছেন, তার অনেকগুলোই জটিল এক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, তা নিয়ে আইনের পরীক্ষাও হয়ে যেতে পারে। অধিকারকর্মী ও পরিবেশবাদীরা এরই মধ্যে ট্রাম্পকে মোকাবেলার প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন। এরই মধ্যে নাগরিকত্বের প্রশ্নে একটি মামলার মুখে ট্রাম্প পড়েছেন দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই।

অভিবাসন

অভিবাসীদের তাড়ানোর মতো আগ্রাসী নীতির বিরোধিতার চেয়ে বড় কোনও এজেন্ডা ডেমোক্রেট এবং নাগরিক অধিকার সংগঠনগুলোর হতে পারে না।

ট্রাম্প এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের সন্তানদের জন্য স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব বাতিল করার পরিকল্পনা করেছেন। যদি কোনও ব্যক্তির মা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে থাকেন এবং বাবা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা না হন, তাহলে সেই ব্যক্তির জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল হবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথের দিন তীব্র শীতের মধ্যেও ক্যাপিটল ভবনের বাইরে জড়ো হয়েছিল তার সমর্থকরা।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথের দিন তীব্র শীতের মধ্যেও ক্যাপিটল ভবনের বাইরে জড়ো হয়েছিল তার সমর্থকরা।

যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিষয়টি দেশটির সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনী দ্বারা সুরক্ষিত। তাই এটি বাতিল করার চেষ্টা আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়াটা স্বাভাবিকিই ছিল এবং তা ঘটেছেও। অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা কয়েকটি সংগঠন সোমবারই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। মামলায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে সংবিধানে উল্লিখিত নির্দেশ, কংগ্রেসের লক্ষ্য ও সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

ট্রাম্পের আগে কোনও প্রেসিডেন্ট জন্মসূত্রে নাগরিকত্বে এই অধিকার খর্বের মতো নির্বাহী আদেশ দেননি।

আরেকটি হলো অবৈধ অভিবাসীদের অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত করে তাদের তাড়াতে এলিয়েন এনিমি অ্যাক্ট ১৯৭৮ এর ব্যবহার। এই পরিকল্পনাও আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। কেননা এই আইনটি করা হয়েছে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে, যুদ্ধের সময় প্রয়োগের জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই পর্যন্ত তিনবার এই আইন প্রয়োগ হয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের দিন ওয়াশিংটনে এমন বিক্ষোভও হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের দিন ওয়াশিংটনে এমন বিক্ষোভও হয়েছে।

ট্রাম্পের আগের মেয়াদের সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা জর্জ ফিশম্যান গত বছরই বলেছিলেন, এই আইন কার্যকর করতে হলে ট্রাম্প প্রশাসনকে এটা প্রমাণ করতে হবে যে ওই অভিবাসীদের তাদের দেশের সরকার ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পাঠিয়েছে।

ট্রাম্প অভিষেক ভাষণে বলেছেন যে লাখ লাখ অপরাধী অভিবাসীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠাবেন। কিন্তু এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গেলে সরকারকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে, যা বলছেন বিশ্লেষরা।

যুদ্ধ, পানামা, মঙ্গল গ্রহ

ট্রাম্প এবার ভোটের আগে থেকে বলে আসছেন যে তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে একদিনেই থামিয়ে দিতেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর অবশ্য এখন সুর বদলেছেন তার সহযোগীরা। তারা বলছেন, সেখানে যুদ্ধ থামাতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।

ট্রাম্প শপথ নেওয়ার এক দিন আগে যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল-হামাস মতৈক্য সংঘর্ষ থামিয়েছে গাজায়। বিষয়টি ট্রাম্পের সাফল্য হিসাবে দেখাচ্ছেনও তার সহযোগীরা। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার পর খোদ ট্রাম্পের কথায় ফুটে উঠেছে সংশয়ী সুর। এই যুদ্ধ বিরতি স্থায়ী হবে কি না, তা নিয়ে নিজের সন্দেহের কথা বলেন তিনি।

অভিষেক অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্প; পেছনে বসে কমলা হ্যারিস, যাকে হারিয়ে এবার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন তিনি।
অভিষেক অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্প; পেছনে বসে কমলা হ্যারিস, যাকে হারিয়ে এবার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন তিনি।

নির্বাহী আদেশে মেক্সিকো উপসাগরের নাম পাল্টে আমেরিকা উপসাগর করার পাশাপাশি অভিষেক ভাষণে ট্রাম্প পানামা খালকে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বলেছেন। কিন্তু এটা তিনি কীভাবে করবেন, তা মোটেও স্পষ্ট নয়। পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো এরই মধ্যে বলেছেন, “খালটি পানামার জনগণের। তাদের কাছেই এটি থাকবে। আমাদের প্রশাসনে বিশ্বের কোনও দেশ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।”

আবার গালফ অব মেক্সিকোর নাম তিনি গালফ অব আমেরিকা করতে পারেন, তবে সেটা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আবার নিজে প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায়ই মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। তার পরিকল্পনা হচ্ছে, ২০২৯ সালের মধ্যে তা সফল করা। তার সেই লক্ষ্য অর্জন এখনও সুদূরপরাহত বলেই মনে হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছিল ১৯৬৯ সালে, যা পৃথিবী থেকে প্রায় আড়াই লাখ মাইল দূরে, আর মঙ্গলের দূরত্ব ১৪ কোটি মাইলের বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা ডিসেম্বরেই জানিয়েছিল, তাদের নতুন চন্দ্র মিশনেই দেরি হবে।

শুল্ক বাড়ানো, সঙ্গে হুমকি

যুক্তরাষ্ট্রকে আরও ধনী করার লক্ষ্যে চীনসহ বিভিন্ন দেশের পণ্যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন ট্রাম্প। এই দেশগুলোর মধ্যে প্রতিবেশী ও মিত্র দেশ কানাডাও রয়েছে।

অভিষেক ভাষণেও শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা আমাদের নাগরিকদের সমৃদ্ধ করতে বিদেশের ওপর শুল্ক ও কর আরোপ করব।”

গত মাসে ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই কানাডা থেকে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়, যা দুই দেশের বাণিজ্য যুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। কানাডার কর্মকর্তারা এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের একটি তালিকা তৈরি করছেন। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি বলেছেন, কানাডীয় পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করলে তারাও তেমন পদক্ষেপ নিতে কসুর করবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র তাদের সীমানা সম্প্রসারণ করবে, এমন কথা ট্রাম্প সরাসরিই বলেছেন। আভিষেক ভাষণে তার উক্তি ছিল- “আমেরিকা সম্পদ এবং ভূখণ্ড বাড়াবে।”

তবে ভাষণে এনিয়ে আর কথা বাড়াননি তিনি। তবে আগে বলেছিলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ড দখল করতে চান তিনি।

তার এসব কথা হুমকি হিসাবেই নিচ্ছে অন্য রাষ্ট্রনেতারা। তারা এর প্রতিক্রিয়া জানাতেও দেরি করছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ (মেক্সিকো) সীমান্তে সংকট ঘোষণা করে নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন ট্রাম্প। এই আদেশের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের দক্ষিণ সীমান্তে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং কঠোর অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের জন্য ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করা হচ্ছে।

তার সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম পারদো যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত মেক্সিকোর অধিবাসীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “আমাদের দেশের নারী-পুরুষদের আমি দুটি কথা বলতে চাই। প্রথমত আপনারা একা নন। দ্বিতীয়ত আমাদের অবশ্যই শান্ত থাকতে হবে এবং ঘটনা কী দাঁড়ায়, সেদিকে চোখ রাখতে হবে।”

জ্বালানি, পরিবেশ

ট্রাম্প জাতীয় জ্বালানি সংকট ঘোষণা করেছেন। এটি জীবাশ্ম জ্বালানির পক্ষে নেওয়া একাধিক পদক্ষেপের অংশ। এর মধ্যে আলাস্কায় তেল খনন সম্পর্কিত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া এবং গ্যাস রপ্তানির উপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি রয়েছে।

এই ঘোষণা ট্রাম্প প্রশাসনকে নতুন জীবাশ্ম জ্বালানি অবকাঠামো নির্মাণের জন্য দ্রুত অনুমোদন পেতে সাহায্য করবে। এটি জলবায়ু নীতিমালা পুনর্বিবেচনার একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ। এটি আইনি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে।

আবার জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে বাইডেন ২০৩০ সাল নাগাদ নতুন গাড়ির অর্ধেক ইলেকট্রিক করার যে আদেশ জারি করেছিলেন, তা বাতিল করেছেন ট্রাম্প।

ক্যাপিটল রাউটেন্ডা হলে শপথ নেওয়ার পর অভিষেক ভাষণ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ক্যাপিটল রাউটেন্ডা হলে শপথ নেওয়ার পর অভিষেক ভাষণ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নির্বাহী আদেশে ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনার ঘোষণাও দেন ট্রাম্প। তার এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পরিবেশবাদীরা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ট্রাম্প ফেডারেল সরকারি যোগাযোগ, নীতিমালা ও ফর্ম থেকে ‘লিঙ্গ ধারণা নির্দেশিকা’ সরাতে আদেশ দিয়েছেন। পুরুষ ও নারী ছাড়া অন্য কোনও লিঙ্গের স্বীকৃতি দিতে তিনি নারাজ।

ট্রাম্পের এই আদেশও চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারে এলজিবিটি অধিকারকর্মীদের।

এগুলো কি শুধু কথার কথা?

অভিষেক ভাষণে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রবাসীর সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ছবি দেখাতে চেয়েছেন; যা তিনি আট বছর আগে প্রথম অভিষেক ভাষণেও দিয়েছিলেন।

এবারের ভাষণে তিনি নিজেকে বাইডেনের শাসনামলে বিচারিক সন্ত্রাসের শিকার হিসাবে তুলে ধরেন। তবে জনগণের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আবার একই পদে ফেরার বিষয়টি তিনি বলেন।

ট্রাম্প বলেছেন, “আমেরিকার পতনের ধারা এই মুহূর্তেই শেষ হলো, আমাদের সোনালি যুগের সূচনা হলো।”

দুই বার মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়ার কথা স্মরণ করে অভিষেক ভাষণে তিনি বলেছেন, “আমেরিকাকে আবার মহান করার উদ্দেশ্য থেকেই স্রষ্টা আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।”

অভিষেকের দিনে স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প।
অভিষেকের দিনে স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ট্রাম্পের এমন সব কথা কি শুধু কথার কথা? জর্জ ওয়াশিংটন প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরির নির্বাহী পরিচালক, ইতিহাসবেত্তা লিন্ডসে চেরনভস্কি বলেন, “এটা রাজনৈতিক প্রচারমূলক বক্তৃতা হয়েছে।

“তিনি একইভাবে, একই কারণে একই ব্যক্তিদের দায়ী করেছেন এবং তা একই দৃষ্টিকোণ থেকে।”

৭৮ বছর পেরিয়ে আসা ট্রাম্প নিজেকে তুলে ধরেছেন ‘শান্তির দূত’ আর ‘ঐক্যের কারিগর’ হিসাবে। বলেছেন আমেরিকার কালো মানুষের নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চান তিনি।

ঐক্যের কথা ট্রাম্প ২০১৭ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও বলেছিলেন। কিন্তু তার চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের মধ্যে বিভেদই বেড়েছে। সেটা কখনও হয়েছে তার কথার কারণে, কখনও হয়েছে তার নীতির কারণে।

ট্রাম্প বলেছেন, “গত আট বছরে তাকে এমন সব পরীক্ষার মধ্যে যেতে হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আড়াইশ বছরের ইতিহাসে আর কোনও প্রেসিডেন্টকে এত পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়নি।”

আর তাতে অনেক কিছুই শিখেছেন বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। তবে কী শিখেছেন, তা বলেননি তিনি। তবে অভিষেকে তার বক্তব্য আর পরবর্তী কাজ দেখে যুক্তরাষ্ট্রবাসী মনে করতেই পারে যে এই ট্রাম্প সেই আগের ট্রাম্পই, তাদের চেনা ট্রাম্প একটুও বদলায়নি।

তথ্য সূত্র : রয়টার্স

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত