Beta
শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫

ট্রেনে ধর্মঘট, রেলসেবা রূপ নিল বাসসেবায়

ধর্মঘটের কারণে ফাঁকা ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
ধর্মঘটের কারণে ফাঁকা ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
[publishpress_authors_box]

রানিং স্টাফদের ধর্মঘটে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ায় যাত্রীরা পড়েছেন দুর্ভোগে; তাদের ভোগান্তি দূর করার পদক্ষেপ হিসাবে টিকেট কাটা যাত্রীদের বাসে গন্তব্যে পৌঁছনোর ব্যবস্থা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।

মূল বেতনের সঙ্গে মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন এবং আনুতোষিকের দাবি পূরণ না হওয়ায় মঙ্গলবার ধর্মঘট শুরু করেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা। অর্থাৎ রেলের যে স্থায়ী কর্মীরা চলন্ত ট্রেনে কাজ করেন।

তাদের ধর্মঘটের কারণে রাজধানীসহ গোটা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে টিকেট কেটে অনেকে স্টেশনে এসে ট্রেন না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েন।

রেলওয়ের পক্ষ থেকে আগে থেকে কিছু না জানানোয় ক্ষোভও প্রকাশ করেন তারা। ক্ষুব্ধ যাত্রীরা রাজশাহী স্টেশনে ভাংচুরও চালায়।

এই পরিস্থিতিতে বিআরটিসি বাসে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছনোর উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

যাদের হাতে ট্রেনের টিকেট আছে, তারা ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেল স্টেশন থেকে চট্রগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লা, বগুড়া ও ময়মনসিংহগামী যাত্রীরা একই টিকেটে বিআরটিসি বাসে ভ্রমণ করতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে।

পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিআরটিসির এই বাসসেবা চালু থাকবে বলেও জানায় রেল বিভাগ।

ট্রেনের টিকেট কাটা যাত্রীদের বাসে করে গন্তব্যে পাঠাচ্ছে রেল বিভাগ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
ট্রেনের টিকেট কাটা যাত্রীদের বাসে করে গন্তব্যে পাঠাচ্ছে রেল বিভাগ। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী আরও জানান, যারা টিকেট কিনেও ট্রেন পাননি, তাদের টিকেটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির ডাকে এই ধর্মঘট চলছে। তারা গত ২২ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে দাবি পূরণের জন্য ২৭ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু তাতে সরকারের সাড়া না পাওয়ায় কর্মবিরতি শুরু করে।

গার্ড, ট্রেনচালক (লোকো মাস্টার), সহকারী লোকোমাস্টার, সাব লোকো মাস্টার এবং টিকেট পরিদর্শকদের (টিটিই) মিলিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়েতে রানিং স্টাফ দেড় হাজারের বেশি।

দৈনিক কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা হলেও রানিং স্টাফদের গড়ে কাজ করতে হয় ১৫–১৮ ঘণ্টা। সেজন্য তাদের আগে তাদের দেওয়া হতো বিশেষ আর্থিক সুবিধা, এটিকে রেলওয়ের ভাষায় বলা হয় মাইলেজ।

২০২২ সালের জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে রানিং স্টাফদের সেই সুবিধা বাতিল করা হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করছে।

তাদের দাবির বিষয়ে রেলওয়ের এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ে ও রেলপথ মন্ত্রণালয় আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়া পূরণে যথেষ্ট আন্তরিক ও সর্বোচ্চ সচেষ্ট। ইতোমধ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে রানিং স্টাফগণের দাবি-দাওয়াসমূহ অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে চিঠি চালাচালির পাশাপাশি আলোচনাও অব্যাহত আছে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইতোমধ্যে তাদের রানিং এলাউন্স ৭৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া মাইলেজ এলাউন্স পাবার জন্য সর্বনিম্ন ৮ ঘণ্টা ও ১০০ মাইল দূরত্বের শর্তও শিথিল করা হয়েছে। রানিং স্টাফগণের অন্যান্য দাবি আদায়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় সচেষ্ট রয়েছে।

এই অবস্থায় যাত্রী দুর্ভোগ অবসানে রেলকর্মীদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

এদিকে ধর্মঘটে যাত্রী ভোগান্তি দেখা দেওয়ার পর মঙ্গলবার সকালে ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশনে যান রেলপথ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

দাবি আদায়ে ধর্মঘট ডাকাকে দুঃখজনক মন্তব্য করে তিনি বলেন, রানিং স্টাফদের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত