Beta
শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫

ফেব্রুয়ারিতে এক হচ্ছেন ট্রাম্প-মোদী

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক হৃদ্যতাপূর্ণই দেখা যায়।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বেশ আলোচিত।
[publishpress_authors_box]

ওয়াশিংটনে আমন্ত্রণ পাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী; আগামী মাসেই হোয়াইট হাউসে তার সঙ্গে বৈঠক হতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সোমবার মোদীর সঙ্গে ফোনালাপের পর ফ্লোরিডা থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার পথে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “সকালেই তার (মোদী) সঙ্গে আমার দীর্ঘ আলাপ হয়েছে। তিনি আগামী মাসেই হোয়াইট হাউসে আসতে পারেন, সম্ভবত ফেব্রুয়ারিতেই।”

এই সফর চূড়ান্ত হলে জো বাইডেন জমানার শেষ রাষ্ট্রীয় অতিথি মোদী হতে যাচ্ছেন ট্রাম্প জমানার প্রথম রাষ্ট্রীয় অতিথি।

কোয়াড সম্মেলনে যোগ দিতে গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছিলেন মোদী। তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডেমোক্রেট নেতা বাইডেন।

তার দুই মাস পর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান ট্রাম্প জয়ী হন। গত ২০ জানুয়ারি তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন, সেদিনই বাইডেনের বিদায় হয়।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ফেরার পরপরই শুল্ক ও অভিবাসন নিয়ে যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা ভারতেরও উদ্বেগের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে।

তবে ট্রাম্প এদিন সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সঙ্গে ভারতের বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে।”

এর আগে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের পর উদ্বেলিত হয়ে তাকে ‘প্রিয় বন্ধু’ সম্বোধন করে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছিলেন মোদী।

দুই দেশের জনগণের কল্যাণ এবং শান্তিময়, সমৃদ্ধিশালী ও নিরাপদ বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত এক যোগে কাজ করে যাবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

মোদীর সঙ্গে ফোনে কী নিয়ে কথা হয়েছে- সেই প্রশ্নে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি ট্রাম্প। সাংবাদিকদের কৌতূহলী জিজ্ঞাসায় তিনি শুধু বলেন, “সব বিষয়েই কথা হয়েছে।”

‘পপুলিস্ট’ দুই নেতা মোদী ও ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সম্পর্ক আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বরাবরই থাকছে আলোচনায়।

নরেন্দ্র মোদীর আলিঙ্গনে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি
নরেন্দ্র মোদীর আলিঙ্গনে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি

ট্রাম্প ২০১৭-২১ মেয়াদে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন মোদীর সঙ্গে তার মাখামাখি ছিল চোখে পড়ার মতো। ২০২০ সালে যেবার ট্রাম্প ভোটে হেরেছিলেন, সেবার তার সঙ্গে দুটি সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন মোদী। শুধু তাই নয়, বিদেশি একজন রাষ্ট্রনেতা হয়েও ট্রাম্পের জয়ের জন্য স্লোগান তুলেছিলেন তিনি।

আবার কয়েকমাস পর গুজরাটের আহমেদাবাদে মোদী তার নামে গড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হাজার হাজার দর্শকের সামনে সংবর্ধনা জানিয়েছিলেন ট্রাম্পকে।

তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় ইনিংসে মোদীর সঙ্গে তার সম্পর্কের রসায়ন কেমন হবে, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে সব মহলেই।

মোদীর সম্ভাব্য এই সফরকে পাঁচটি নিয়ামকের ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করেছে ভারতের সংবাদপত্র হিন্দুস্থান টাইমস।  

প্রথমত তারা মনে করছে, মোদীর এই সফর ভারতের বিষয়ে ট্রাম্পের ইতিবাচক বার্তার প্রকাশ ঘটছে। কেননা বৈশ্বিক রাজনীতিতে দুই পক্ষেরই চীনকে নিয়ে দুর্ভাবনায় রয়েছে। সৌদি আরব-ইসরায়েল সমঝোতায়ও দুই পক্ষের সমর্থন রয়েছে। ফলে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও বাড়ার ইঙ্গিত রয়েছে এই সফরে।

দ্বিতীয়ত, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অভিবাসন, প্রতিরক্ষার মতো বিষয়গুলোতে দিল্লি-ওয়াশিংটনের জটিলতার অবসান এই বৈঠকে হবে বলে মনে করছে না হিন্দুস্থান টাইমস। কারণ হিসাবে তারা বলছে, দুই পক্ষের স্বার্থের পরিবর্তন ঘটেছে, আর ট্রাম্প সব সময় বিচক্ষণতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেন না।

তৃতীয়ত, ট্রাম্পের যে পদক্ষেপগুলো ভারতে মোদীর সরকারের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে ট্রাম্পকে বোঝানোর সক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে জটিলতার অবসান।

চতুর্থত, চীন বিষয়ে দুই পক্ষ এক নীতি ধরে কি চলবে, তা নির্ভর করবে পারস্পরিক আস্থার ওপর। এক্ষেত্রে দুই পক্ষের স্বচ্ছ আচরণ উভয়কে কাছাকাছি রাখতে পারে।

পঞ্চমত, প্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক খাতে বিনিয়োগে দুই দেশের যে সম্পর্ক এখন রয়েছে, তা ডিপসিকের মতো ঘটনায় নতুন রূপ নিতে পারে। সেক্ষেত্রে উভয় পক্ষকে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র খুঁজে বের করতে হবে।

সূত্র : এনডিটিভি ও হিন্দুস্থান টাইমস

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত