নাইকোর সঙ্গে ‘অস্বচ্ছ’ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পিছিয়ে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছে আদালত।
১৭ বছর আগে করা ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন উপপরিচালক এস এম সাহেদুর রহমানের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ছিল বুধবার। তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। এজন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পিছিয়ে দিয়েছেন।
মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে রয়েছেন। তার পক্ষে আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া এসব তথ্য জানিয়েছেন।
গত ২১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাহেদুর রহমানের জবানবন্দি রেকর্ড করার পর আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। সেদিন তার জেরা শেষ হয়নি। আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ২৯ জানুয়ারি দিন ঠিক করে। এদিন তাকে বাকি জেরা করার কথা ছিল।
এ পর্যন্ত মামলার ৬৮ সাক্ষীর মধ্যে ৩৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।
কানাডার প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে ‘অস্বচ্ছ’ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম।
পরের বছর ২০০৮ সালের ৫ মে দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম সাহেদুর রহমান খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। তাতে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়।
এরপর ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম। এদের মধ্য প্রথম তিনজন পলাতক রয়েছেন।
অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।