Beta
শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫

ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

home ministry
[publishpress_authors_box]

ভারতের সঙ্গে হওয়া সীমান্ত বিষয়ক সব ধরনের অসম চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

উপদেষ্টা বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান। আগামী ১৭-২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৫৫তম বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন। এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সেই সম্মেলন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়।

উপদেষ্টা বলেন, “২০১১ সালে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের তিন বিঘা ও দহগ্রাম করিডোর নিয়ে একটি অসম চুক্তি হয়েছে। তাছাড়া মহিষাশন (ভারত)- কুলাউড়া (বাংলাদেশ) আন্তঃদেশীয় রেলপথের কুলাউড়া রেল স্টেশন সীমান্ত থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার ভিতরে অবস্থিত। আমরা তাদেরকে আমাদের বর্ডারের তিন কিলোমিটার ভেতরে আসতে দেবো না। সেখানে সীমান্তের কাছে কাস্টমস-সহ একটা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হবে।”

সম্প্রতি বাংলাদেশ সীমান্তে পাঁচটি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করলে প্রতিরোধের মুখে তা থেকে সরে যায়। তবে দুই দেশের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয় উত্তেজনা।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “সীমান্তে ১৫০ গজের মধ্যে কোনও কাজ করতে হলে দুই পক্ষের অনুমতি নিতে হয়। এগুলো একপক্ষে করার নিয়ম নাই। উন্নয়নমূলকভাবে একটা মসজিদ বা মন্দির করতে হলে দুই দেশের সম্মতি নেওয়া প্রয়োজন। আগামীতে কিছু করতে হলে যেন তারা সম্মতি নেয় এ বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।”

গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর তিনি আশ্রয় নেন পাশের দেশ ভারতে। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে দিল্লি-ঢাকা সম্পর্ক বেশ ভালো ছিল। তার পতনের পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে শুরু হয় টানাপোড়েন। অভিযোগ ওঠে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখতে ও ভারতের সহায়তায় ক্ষমতায় থাকতে ভারতকে অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে হাসিনা আমলে। অভিযোগ ওঠে, এমন কিছু চুক্তি করা হয়েছে যাতে ভারতের লাভ হলেও ক্ষতিতে পড়েছে বাংলাদেশ।

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের আস্থা বাড়াতে বাংলাদেশ কোনও ছাড় দিবে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “শুধু ছাড় দিয়ে কিন্তু আস্থা বাড়ানো যায় না। আলোচনার মাধ্যমেও আস্থা বাড়ানো যায়। সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয়রা অনেক সময় ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন মাদক তৈরি করে আমাদের দেশে ঢুকিয়ে দেয়। যদিও তারা বলে ফেন্সিডিলগুলো ওষুধ হিসেবে তৈরি করছে। আসলে এটা মাদক হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছে।”

বৈঠকে ভারতীয় গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা সংবাদ প্রচার বন্ধের বিষয়েও আলোচনা করা হবে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের গণমাধ্যম ও দেশের জনগণ খুবই সোচ্চার।”

সভা শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ পরিচালক ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৫৫তম বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সীমান্ত সম্মেলনে বিএসএফ বা ভারতীয় নাগরিক/ভারতীয় দুষ্কৃতিকারীর দ্বারা সীমান্ত হত্যা/সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো বা কাউকে আহত করা বন্ধ করা; বিএসএফ বা ভারতীয় নাগরিকদের হাতে বাংলাদেশি নাগরিকদের ধরে নিয়ে যাওয়া বা আটক করা বন্ধ করা বিষয়ে আলোচনা চলবে।

এছাড়া বিএসএফ বা ভারতীয় নাগরিকদের দ্বারা সীমানা লঙ্ঘন বা অবৈধ পারাপার অথবা অনুপ্রবেশ বন্ধ; ভারত থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা ও ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক দ্রব্য চোরাচালান প্রতিরোধ; আগরতলা থেকে আখাউড়ার দিকে বর্জ্য পানি প্রবাহিত হয় এমন চারটি খালে পানি শোধনাগার স্থাপন; বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী নদীগুলোর পানির সুষম বণ্টন, নদী থেকে পানি উত্তোলন, পানি চুক্তি বাস্তবায়ন এবং রহিমপুর খালের মুখ পুনঃউন্মুক্ত করা নিয়েও আলোচনা হবে।

বিতর্কিত মুহুরীর চর এলাকার সীমানা নির্ধারণ, বিভিন্ন এলাকায় বর্ডার পিলার স্থাপনের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করা; সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য ‘কার্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা’ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন; দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক আস্থা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করার কথা রয়েছে ওই সম্মেলনে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত