এগারো কোটি ৩৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৮৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রবিবার কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ দুদকের পক্ষে এ মামলা করা হয়েছেন বলে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন জানান।
এছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর এই সদস্যের স্ত্রী সৈয়দা রোকেয়া বেগম এবং ছেলে মো. আসিবুর রহমানের নামে ১৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার বেশি পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখার অভিযোগে আলাদা আরও দুটি মামলা করেছে দুদক।
দুটি মামলাতে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহায়তা করার অভিযোগে শাহাজান খানকেও আসামি করা হয়েছে। তার মেয়ে ঐশী খানের নামে প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পেয়ে তাকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে নোটিশ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
শাজাহান খানের নামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে মামলায় ৯টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৮৬ কোটি ৬৯ লাখ ৩২ হাজার ৭৬৯ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আর তার স্ত্রী সৈয়দা রোকেয়া বেগমের নামে ৪ কোটি ৪৭ লাখ ১৯ হাজার ৮৪৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। আর ছেলে আসিবুর রহমানের নামে মামলায় ৯ কোটি ৮৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এসব মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন- ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এছাড়া শাজাহান খানের মেয়ে ঐশী খানের বিরুদ্ধে তার জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত ১ কোটি ৭১ লাখ ১৮ হাজার ৯২ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন এবং নামে ও বেনামে আরও সম্পদ থাকার সম্ভাবনা থাকায় তাকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
পরিবহন শ্রমিক নেতা শাজাহান খান ১৯৯১ সাল থেকে প্রায় প্রতিটি সংসদে মাদারীপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত হয়ে আসছেন। তার আগে তিনি জাসদ করতেন। ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদে গিয়েছিলেন তিনি।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে নৌপরিবহনমন্ত্রী ছিলেন শাজাহান খান।
গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর থেকেই আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতা। কেউ কেউ পালিয়ে দেশের বাইরে চলে যান আবার কেউ কেউ ধরা পড়েন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে।
গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার ধানমন্ডি এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।