আলোচিত এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের শ্যালক গাজীপুরের আরমান্ডা স্পিনিং মিলসের মালিক ও কমার্স ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ আরশেদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনে সোমবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনে এ আদেশ দেন।
দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক ফয়েজ আহমেদের আবেদনে বলা হয়, এস আলম কর্তৃক লুটকৃত কয়েক হাজার কোটি টাকা আরশেদের হেফাজতে স্থানান্তরপূর্বক তার ও তার স্ত্রী জেসমিন আরশেদের মালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ এবং পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনে অপরাধের সম্পৃক্ততাও রয়েছে।
আরশেদ দেশ ছেড়ে বিদেশ পালাতে পারেন দাবি করে আবেদনে বলা হয়, এমূহূর্তে তিনি পালিয়ে গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র ধ্বংসসহ অনুসন্ধানকাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
দুদকের আবেদনে কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক পাঠানসহ ছয়জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব।
অন্য পাঁচজন হলেন- সাউথইস্ট ব্যাংকের গুলশান শাখার সাবেক সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখা ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম,ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ক্রেডিট ইনচার্জ মোরশেদ আলম মামুন, একই শাখার সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ক্রেডিট ইনচার্জ (বর্তমানে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখা প্রধান) রেজওয়ানুল কবির, অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইনচার্জ অব ইমপোর্ট ডিপার্টমেন্ট (বর্তমানে সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এক্সপোর্ট ইনচার্জ) অমীয় কুমার মল্লিক এবং এভিপি ও ইনচার্জ অব এক্সপোর্ট ডিপার্টমেন্ট (বর্তমানে সিনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এক্সপোর্ট ইনচার্জ) আশরাফুল ইসলাম।
তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদনে বলা হয়, আসামিরা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কোনও প্রকার ঋণ অনুমোদন ছাড়াই ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করে নিজে অবৈধ উপায়ে লাভবান হয়ে অন্যকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ৪৯৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা তুলে পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাত করেনন।
তাদের বিরুদ্ধে গত ২ জানুয়ারি দুদক মামলা করে জানিয়ে বলা হয়, তদন্তকালে আসামিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। তাই তাদের বিদেশ গমন আটকানো প্রয়োজন।
সাদেক খানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে ঢাকার একই আদালত। এই আদেশও হয়েছে দুদকের আবেদনে।
সাদেক খানের বিরুদ্ধে ৭ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং তার ২৯টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ৪৬৬ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে দুদক মামলা করেছে।
সেই মামলার তদন্ত নির্বিঘ্ন করতে সাদেক খানেরর বিদেশ গমন আটকানো প্রয়োজন দাবি করে আদালতে আবেদনটি করে দুদক।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ২৪ আগস্ট ঢাকার নাখালপাড়া এলাকা থেকে সাদেক খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই রয়েছেন।
এদিন দুদকের আরেক আবেদনে বিচারক জাকির হোসেন সাবেক এমপি সাদেক খান, তার স্ত্রী ফেরদৌসী খান ও ছেলে ফাহিম সাদেক খানের ৫০টি ব্যাংক হিসাবে ১৯ কোটি ৪১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা অবরুদ্ধের নির্দেশ দেন। ব্যাংক হিসাবগুলোর মধ্যে সাদেক খানের ১৮টি, তার স্ত্রীর ৮টি ও ছেলের ২৪টি।