বদলে ফেলা হয়েছে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নাম ফলক। প্রতিষ্ঠানটিতে এখন ঝুলছে ‘বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা সাইনবোর্ড।
শনিবার সকাল থেকে নতুন নামের ফলক ঝুলতে দেখা যায়।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট একাধিক মানুষ সকাল সন্ধ্যাকে জানিয়েছেন, নতুন নামকরণের কাজ শুরু হয়েছে গত বুধবার রাত থেকে। সেই রাতেই মুছে ফেলা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার রাত ১২ টার দিক থেকে বিএসএমএমইউর সি ব্লকের সামনে টানানো সাইনবোর্ড খুলে ফেলা হয়। সেদিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান থেকে খুলে ফেলা হয় বঙ্গবন্ধুর নাম লেখা বিভিন্ন সাইনবোর্ড। সেইসঙ্গে ডি-ব্লকের পুরোনো সাইনবোর্ডের উপরে বসানো হয় নতুন সাইনবোর্ড।
বিএসএমএমইউ পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তিনি সকাল সন্ধ্যাকে জানান, নাম বদলানোর কোনও আদেশ তারা এখনও পাননি।
তীব্র ছাত্র-গণআন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ৮ আগস্ট দেশ পরিচালনার দায়িত্বে আসে অন্তর্বর্তী সরকার।
দেশে ক্ষমতার এই পালাবদলের পর বিভিন্ন স্থানে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনাসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম বদলে ফেলা শুরু হয়। সরকারিভাবেই বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের নতুন নামকরণ করা হয়। গত সপ্তাহেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশকিছু হলের নাম নিজেরাই পরিবর্তন করে নাম ফলক বসিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
সেই নাম পরিবর্তনে সবশেষ সংযোজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বা বিএসএমএমইউ। দীর্ঘদিন যা পিজি হাসপাতাল নামে পরিচিত ছিল।
১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ইনস্টিটিউট অব পোস্টগ্রাজুয়েট মেডিকেল রিসার্চ (আইপিজিএমআর) হিসেবে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে দেশে উচ্চ চিকিৎসা-শিক্ষা, সেবা-শিক্ষা ও গবেষণার সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য এটিকে একটি স্বতন্ত্র মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেয় সরকার ।
একাধিক চিকিৎসক ও কর্মকর্তা সকাল সন্ধ্যাকে বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বিএসএমএমইউয়ে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন নামের এই ব্যানার টানালেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে নাম পরিবর্তন নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রশাসনের আলোচনা চলছে। খুব শিগগিরই হয়ত আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বললেন, প্রস্তাবনায় অনেক নাম এসছে। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে তাদের কোনও দ্বিমত নেই।
প্রশাসন দ্রুত প্রজ্ঞাপন দিয়ে বিষয়টি জানাবে বলেও জানান তিনি।