সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে করা মামলায় আপিল করে খালাস পেয়েছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
সোমবার সকালে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তারিক এজাজের আদালত তাকে খালাস দেয়।
রায় ঘোষণার সময় মাহমুদুর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত ন্যায় বিচার করেছেন। আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন না হলে আজকে আমি হয়ত ন্যায় বিচার পেতাম না। ফ্যাসিস্ট সরকার বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করে রেখেছিল। আমি জেলে থাকা অবস্থায় এই মামলা দিয়েছে। যাতে করে আমাকে দীর্ঘদিন আটক করে রাখা যায়।”
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছিল, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যেকোনো সময় থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার একত্রিত হয়ে যোগসাজশ করেন। সেখানে তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন।
এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় একটি মামলা করেন।
তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দেন।
সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূরের আদালত মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচ জনকে আলাদা দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। দণ্ডিত অপর তিন আসামি হলেন, জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভুঁইয়া।
আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণের অভিযোগে) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয় আদালত। অর্থদণ্ড না দিলে তাদের আরও এক মাসের কারাভোগ করতে হবে। এছাড়া একই আইনের ১২০ (খ) ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেছিলেন।
২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মাহবুবুল হকের আদালতে মাহমুদুর রহমান আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। পরে ওই বছরের ৩ অক্টোবর আপিলের শর্তে তিনি জামিনে কারামুক্ত হন।
পরে গত ১২ ডিসেম্বর সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন তিনি। ২৩ জানুয়ারি আপিল শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য আজকের দিন ঠিক করে দিয়েছিলেন।