Beta
শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Beta
শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

জীবিত বা মৃত, মশা ধরে দিলেই পুরস্কার

মশা মারার পাশাপাশি শহর কর্তৃপক্ষ রাস্তা পরিস্কার ও জমে থাকা পানির উৎস বন্ধ করার উদ্যোগে নিয়েছে।
মশা মারার পাশাপাশি শহর কর্তৃপক্ষ রাস্তা পরিস্কার ও জমে থাকা পানির উৎস বন্ধ করার উদ্যোগে নিয়েছে।
[publishpress_authors_box]

কথায় আছে, মশা মারতে কামান দাগানো। বাস্তবে কামান না দাগালেও মশা মারতে নগদ পুরস্কার ঘোষণা করেছে ফিলিপাইনের একটি শহর। আর এর কারণ হলো ডেঙ্গু।

ফিলিপাইনের বারাঙ্গায় অ্যাডিসন হিলস এলাকার প্রধান কার্লিটো সেরনাল ঘোষণা করেছেন, পাঁচটি মশার জন্য এক পেসো পুরস্কার দেওয়া হবে।

শহরটিতে সম্প্রতি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এরপরই মূলত এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মশা মারার পাশাপাশি শহর কর্তৃপক্ষ রাস্তা পরিস্কার ও জমে থাকা পানির উৎস বন্ধ করার উদ্যোগে নিয়েছে। বাসিন্দারা নিজ উদ্যোগে এসব কাজ করলে তাদের সহায়তা করার আশ্বাসও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

শহরের যে কেউ জীবিত বা মৃত মশা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রমাণ হিসেবে নিয়ে গেলেই পাবে পুরস্কারের অর্থ। কেউ জীবিত মশা নিয়ে গেলে অতিবেগুনি রশ্মি ব্যবহার করে সেগুলো ধ্বংস করা হবে।

ফিলিপাইনের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিওএইচ) বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার কর্মকর্তাদের উদ্যোগকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

তবে মশা ধরার বিনিময়ে নগদ পুরস্কার দেওয়া ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর পদ্ধতি কি না- এ বিষয়ে তারা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ডিওএইচ সবাইকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, “প্রমাণিত কার্যকর পদ্ধতির জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাদের এলাকার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বা ডিওএইচ এর আঞ্চলিক কার্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করতে অনুরোধ জানাই।”

মঙ্গলবার রাতে এই পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হলে তা দ্রুত সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং হাস্যরসের বিষয় হয়ে ওঠে।

সোশাল মিডিয়ায় একজন লেখেন, “এখন মশা চাষ শুরু হবে।” আরেকজন লিখেছেন, “মশার যদি একটি ডানা থাকে, তাহলে কি সেটি পুরস্কারের জন্য বাতিল হবে?” 

শহরপ্রধান সেরনাল জানিয়েছেন, তিনি সোশাল মিডিয়ায় সমালোচনার কথা জানেন। তবে তিনি মনে করেন, এটি জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য জরুরি উদ্যোগ।

ডেঙ্গু সাধারণত উষ্ণ জলবায়ুর দেশগুলোতে দেখা যায়। অপরিচ্ছন্ন শহর এলাকায় এর প্রকোপ বেশি। কারণ সেখানে ডেঙ্গুবাহিত মশা সহজে জন্মায়।

ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর শরীরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে পারে। এতে মৃত্যুও হতে পারে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের উপসর্গের মধ্যে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, অস্থিসন্ধি ও পেশিতে ব্যথা রয়েছে।

বারাঙ্গায় অ্যাডিশন হিলস মেট্রো ম্যানিলার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। সেখানে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ ১৬২ হেক্টর জায়গায় ঘনবসতিপূর্ণভাবে বসবাস করে। 

সেরনাল জানিয়েছেন, স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি ৪৪ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করেছে। 

তিনি বলেন, “এটি একটি বড় এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। স্থানীয় সরকারকে সহায়তা করতে আমাদের কিছু করতে হবে।”

ফিলিপাইনের জাতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মৌসুমি বৃষ্টির কারণে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।

দেশটির স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৮ হাজার ২৩৪ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি। 

ফিলিপাইনের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জনগণকে পরিবেশ পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দিয়েছে। তারা মশার জন্মস্থান ধ্বংস করা, যেমন পরিত্যক্ত টায়ার সরানো, লম্বা পোশাক পরা ও মশা প্রতিরোধী ক্রিম ব্যবহার করার সুপারিশ করেছে।

অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃষ্টির কারণে ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ অন্যান্য রোগ ও লেপটোসপাইরোসিসের সংক্রমণও বেড়েছে।

তথ্যসূত্র : বিবিসি

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত