অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন নিজেদের বেশি শক্তিশালী, উদ্যমী ও সৃজনশীল উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অতীতের যেকোনও প্রজন্মের তুলনায় এখনকার তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন দুঃসাহসী। তারা যেমন নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে চায়, তেমনি একই আত্মবিশ্বাসে নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করতে চায়। নতুন পৃথিবী সৃষ্টিতে নেতৃত্ব দিতে তারা প্রস্তুত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একুশে পদকে ভূষিত বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে ‘একুশে পদক ২০২৫’ তুলে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশের ১৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে একুশে পদক ২০২৫ প্রদান করা হয়।
নেতৃত্ব দেবার জন্য তরুণরা প্রস্তুত উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “ছেলেরাও প্রস্তুত, মেয়েরাও প্রস্তুত। তারা ঘুণে ধরা, আত্মবিনাশী সভ্যতার বন্ধনমুক্ত হয়ে তাদের স্বপ্নের নতুন সভ্যতা গড়তে চায়। যে সভ্যতার মূল লক্ষ্য থাকবে পৃথিবীর সকল সম্পদের ওপর প্রতিটি মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা, প্রতিটি মানুষের স্বপ্ন দেখার এবং সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুযোগ নিশ্চিত করা। মানুষের জীবনযাত্রাকে এমনভাবে গড়ে তোলা যাতে করে পৃথিবীর অস্তিত্ব কোনোরকম বিঘ্নিত না হয়। পৃথিবীতে বসবাসরত সকল প্রাণীর সুস্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকাও কোনোক্রমেই বিঘ্নিত না হয়।”
তিনি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫ উদযাপনের স্মরণীয় দিনে তরুণদের এই স্বপ্নের আশু বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক এই প্রত্যাশা করেন।
দেশমাতৃকার জন্য বিভিন্ন লড়াই-সংগ্রাম, বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে প্রাণ হারানো সকলকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবারের অমর একুশে নতুন তাৎপর্য নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি এক নতুন বাংলাদেশ। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে সুযোগ এসেছে নতুন এক বাংলাদেশ নির্মাণের।”
একুশে পদকে ভূষিত দেশের বরেণ্য ব্যক্তিদের অভিনন্দন জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “আপনাদের অবদানের জন্য জাতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আপনারা জাতির পথ প্রদর্শক। আপনাদের অবদানে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতি দৃঢ় বিশ্বাসে জাতিপুঞ্জের মজলিসে ক্রমাগতভাবে উন্নততর অবস্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে।”
অনুষ্ঠানে অন্যন্যের মধ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. মফিদুর রহমান বক্তব্য রাখেন।