স্বপ্ন ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। সেখানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে দুবাইয়ে তবু কিছুটা লড়াই করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু রাওয়ালপিন্ডিতে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে যাচ্ছেতাইভাবে। এ নিয়ে হতাশা জানিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের মিক্সড জোনে হতাশা জানিয়ে গেলেন মেহেদী হাসান মিরাজও। তাকে মিক্সড জোনে নিয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশ টিম ম্যানেজার রাবীদ ইমাম। বাংলাদেশি সাংবাদিকদের মিরাজ বলেছেন, ‘‘এই মাঠে আমাদের ভালো একটা স্মৃতি ছিল (পাকিস্তানকে টেস্টে হারানো)। এই ম্যাচটাও বাঁচামরার লড়াই ছিল। জিততে পারলে ভালো সুযোগ ছিল সামনে যাওয়ার। জিততে না পেরে খারাপ লাগছে।’’
বাংলাদেশের ভালো করতে হলে জ্বলে উঠতে হত মিরাজকে। সাকিব আল হাসান না থাকায় মিরাজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ভরসা করা স্বাভাবিক অধিনায়ক শান্তর। কিন্তু মিরাজ দুই ম্যাচেই ছিলেন বিবর্ণ। প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে চার নম্বরে নেমে আউট হন ১০ বলে ৫ রান করে। এরপর বল হাতে পাননি উইকেটের দেখা।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচেও নিজের ছায়া ছিলেন মিরাজ। এবার চার থেকে তাকে প্রমোশন দিয়ে নামানো হয় তিনে। কিন্তু ১৪ বলে ১৩ রান করেই আউট মিরাজ। টানা দ্বিতীয় ম্যাচেও ছিলেন উইকেটহীন।
মিরাজের ব্যাটিং পজিশন নিয়ে অতীতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে অনেক। এতটাই যে ৮ নম্বর থেকে ওপেনিং- বাদ যাননি কোনও পজিশনে! ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ওপেনিংয়ে নেমে আফগানদের বিপক্ষে করেছিলেন সেঞ্চুরি। এর দুই ম্যাচ পরই তাকে নামিয়ে দেওয়া হয় পাঁচ নম্বরে! সেই সেঞ্চুরির একমাস পর মিরাজ আবারও ফিরে যান ৭-৮ নম্বর পজিশনে। বাংলাদেশ দলের গিনিপিগই যেন হয়ে উঠেছেন মিরাজ।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও সেই পরীক্ষা চলমান। গত বছরের নভেম্বর থেকে ওয়ানডেতে টানা ৭ ইনিংস ৪ নম্বরেই খেলেছেন মিরাজ। তাতে তার ইনিংসগুলো ২৮, ২২,৬৬, ৭৪, ১, ৭৭ ও ৫। হঠাৎ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মতো মঞ্চে আবারও কেন জায়গা বদল তার?
মিক্সড জোনে এমন কোন প্রশ্ন করা হয়নি মিরাজকে। তিনি অবশ্য বেশি হতাশা জানিয়েছেন দলের পারফরম্যান্স নিয়ে। ভালো শুরু করেও বাংলাদেশ পারেনি স্কোরটা ৩০০ করতে। একইভাবে শুরুতে নিউজিল্যান্ডের ২ উইকেট নিয়েও পারেনি তাদের চাপে ফেলতে। উল্টো ১৮১টা ডট বল খেলে নিজেরা চাপে পড়েছে বাংলাদেশ।
চাপে পড়ার কারণ নিয়ে মিরাজ জানিয়েছেন, ‘‘প্রথম ১০–১১ ওভার ভালোই হচ্ছিল। আমি আউট হওয়ার পর চাপ বেশি হয়ে গেল। উইকেট যেহেতু ভালো ছিল, হৃদয় চিন্তা করেছে সেট হয়ে ইনিংস গড়বে। তখন ডট বলে বেশি হয়ে যায়, রান বের করারও চাপও বেড়ে যায়। এ জন্য দ্রুত তিন উইকেট পড়ে যায়।’’
এভাবে বাদ পড়ে আফসোস ঝরল মিরাজের কণ্ঠে, ‘‘৩০০–৩১০ রান করলে ম্যাচটা জিততে পারতাম। উইকেটে শেষ দিকে বল লো হচ্ছিল, টার্ন করছিল। আমরা শুরুতে উইকেট ফেলে দিয়েছিলাম। আরও রান করলে ভালো হতো।’’