জেমস অ্যান্ডারসনের লো ফুলটসকে নিচু হয়ে ছক্কা মারলেন ফাইন লেগের ওপর দিয়ে। ঠিক পরের বলে যশস্বী জয়সওয়াল ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ছক্কা মারলেন এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে। পরের বলে বোলারের মাথার ওপর দিয়ে আবারও ছক্কা।
অ্যান্ডারসনের টানা তিন বলে ছক্কা মেরে জয়সওয়াল বুঝিয়েছেন রাজকোটের পিচে তার রাজত্ব। বিশাখাপত্তমে আগের টেস্টে করেছিলেন ডাবল সেঞ্চুরি। ২০৯ রানের ইনিংসটা ছাপিয়ে আজ (রবিবার) রাজকোটে খেললেন হার না মানা ২১৪ রানের ইনিংস। তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে দুইটি ডাবল সেঞ্চুরির মালিক এখন জয়সওয়াল। তাও সেটা রাজকীয় ঢংয়ে, ইংল্যান্ডেরই বাজবল ক্রিকেটের আদলে।
জয়সওয়ালের ২৩৬ বলের ইনিংসে ছিল ১৪ বাউন্ডারি ও ১২ ছক্কা। তাতেই হয়েছে টেস্টে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার যৌথ বিশ্বরেকর্ড। ১৯৯৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৫৭ রানের ইনিংসের পথে ১২টি ছক্কা মেরেছিলেন পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম।
নিউজিল্যান্ডের নাথান অ্যাস্টল, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেন, ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস ও শ্রীলঙ্কার কুশল মেন্ডিস এক ইনিংসে মেরেছেন ১১টি করে ছক্কা। ভারতীয়দের মধ্যে নভোজৎ সিং সিধু ও মায়াঙ্ক আগারওয়ালের এক ইনিংসে ছক্কা ছিল সর্বোচ্চ ৮টি করে।
জয়সওয়ালের আক্রমণাত্মক এই ইনিংসে ভারত নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছে ৪ উইকেটে ৪৩০ রানে। কিছুটা নাটকও ছিল তাতে। জয়সওয়ালের ডাবলের পর রোহিত শর্মা ইনিংস ঘোষণা করেছেন ভেবে ড্রেসিংরুমের কাছাকাছি গিয়েছিলেন কয়েকজন ইংলিশ ক্রিকেটার।
মাঠ ছেড়েছিলেন জয়সওয়াল আর সরফরাজ খানও। মাঠে দেখা যায় মাঠকর্মীদের। রোহিত তখন ইঙ্গিতে জানান ইনিংস ঘোষণা করেননি তিনি! আবারও ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। অবশ্য এক ওভার পরই ইনিংস ঘোষণা করে দেন রোহিত। বাজবল যুগে প্রথম দল হিসেবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস ঘোষণা করল কোন দল।
ভারতের এই রান পাহাড়ে অবদান আছে অভিষিক্ত সরফরাজ খানেরও। প্রথম ইনিংসে ৬৬ বলে ৬২ করা এই ব্যাটার দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন ৭২ বলে ৬৮ রানে। অভিষেকে দুই ইনিংসে ফিফটি করে সুনীল গাভাস্কারের পাশে বসেছেন তিনি। ভারতীয়দের মধ্যে এই দুজন ছাড়া অভিষেকে দুটি ফিফটি ছড়ানো ইনিংস আছে দিলওয়ার হোসেন ও শ্রেয়াস আয়ারের।
জয়ের জন্য ইংল্যান্ডকে করতে হবে ৫৫৭ রান। টেস্ট ইতিহাসে এত বেশি রান তাড়া করে জেতার কীর্তি নেই কোন দলের। ইংল্যান্ডও ১৮ রানে হারিয়ে ফেলেছে দুই ওপেনার জ্যাক ক্রুলি ও বেন ডাকেটকে।
ভারতের জন্য সুখবর মায়ের অসুস্থতার জন্য টিম হোটেল ছেড়ে যাওয়া রবিচন্দ্রন অশ্বিন আবারও ফিরে এসেছেন রাজকোটে।