চালক সেজে প্রথমে যাত্রীদের রিকশায় তুলে তারা নিয়ে যেতেন আগে থেকে নির্ধারিত স্থানে। তারপর পুলিশ পরিচয়ে তল্লাশির নামে ছিনতাই করতেন তারা। এই ছিনতাইকারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার শাহজাহানপুর থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে করে ঢাকায় আসা মানুষদের টার্গেট করে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই করে আসছে এই চক্র।
হায়াতুল খান বলেন, “বুধবার দিবাগত রাতে ঢাকার বাড্ডা, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় ছিনতাই করা ৪০ হাজার টাকা ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত দুটি রিকশা উদ্ধার করা হয়।”
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, চক্রের মূলহোতা দেলোয়ার হোসেন (৪০) ও তার সহযোগী কামরুজ্জামান (৫০), দুই রিকশাচালক জাকির হোসেন ওরফে বড় জাকির (৪৫) ও জাকির হোসেন ওরফে ছোট জাকির (২৫)।
পুলিশ বলছে, সম্প্রতি রিকশাযোগে কমলাপুর থেকে পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় যাওয়ার পথে এ চক্রের কবলে পড়ে এক লাখ টাকা খোয়ান এক ব্যবসায়ী। পরে এই ঘটনার শাহজাহানপুর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। সেই মামলার তদন্তে নেমে এই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) শাহজাহানপুর থানা পুলিশ।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ছিনতাই চক্রটি কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে কাজ করে। টার্গেট করা ব্যক্তিকে তারা রিকশায় তুলে নিয়ে নানা কৌশলে পূর্ব নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যায়, তারপর পুলিশ পরিচয়ে তল্লাশির নামে ছিনতাই করত তারা।
সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা গেল
৫ মার্চ সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সামাদ ও তার ছেলে রিকশায় করে উত্তর শাহজাহানপুর সড়কে আসার সঙ্গে সঙ্গে তিনজন রিকশার গতিরোধ করেন। তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের রিকশা থেকে নামিয়ে তল্লাশির নামে পকেটে থাকা এক লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর দুটি রিকশায় করে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে ১ লাখ টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে আত্মগোপনে চলে যায়।
এরপরই বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের দুই রিকশা চালক বড় জাকির ও ছোট জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের মূল হোতা দেলোয়ার হোসেন ও তার সহযোগী কামরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিসি হায়াত বলেন, এই চক্রটি ঢাকার বিভিন্ন বাস-ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালে রিকশাচালকের ছদ্মবেশে কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে ওত পেতে থাকে। এরপর রিকশায় যাত্রী তুলে গন্তব্যে না নিয়ে নিজেদের পূর্ব নির্ধারিত স্থানে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সর্বস্ব লুটে নিত।
তিনি আরও বলেন, দেলোয়ারের নামে ৪টি মামলা রয়েছে। এখন পর্যন্ত সে সাত বার গ্রেপ্তার হয়েছে। এ চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।