বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের হলের আসন বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
সোমবার (৮ এপ্রিল) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে ইমতিয়াজের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক, তার সঙ্গে ছিলেন পলাশ চন্দ্র রায় ও হারুনুর রশিদ।
আদেশের বিষয়টি সকাল সন্ধ্যাকে নিশ্চিত করেছেন পলাশ চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের আসন বাতিল করে বুয়েটের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ আদেশের ফলে ইমতিয়াজের হলে আসন পেতে আর কোনও আইনি বাধা নেই।
হাইকোর্টের এ আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করে ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “বিনা তদন্তে এবং বিনা নোটিসে আমার সিটটি বাতিল করা হয়। তাদের হটকারী এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমি আইনের আশ্রয় নেই। আদালত শুনানি শেষে তাদের সিদ্ধান্তটি স্থগিত করে দিয়েছেন।”
তিনি বলেন, “যেহেতু আমি কোনও অপরাধ করিনি, সেহেতু আমার হলের সিট বাতিল করার কোনও অধিকার বুয়েট প্রশাসনের নেই। অভিযোগ আসা মাত্র তদন্ত না করে এমন সিদ্ধান্ত তারা নিতে পারে না।”
২০১৯ সালে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজনৈতিক তৎপরতার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় বুয়েট প্রশাসন।
ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর পিটুনিতে নিহত হয়েছিলেন আবরার। সেই হত্যাকাণ্ডের মামলায় সংগঠনটির ২০ নেতাকর্মীর মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা হয়।
গত পাঁচ বছর ধরে বুয়েটে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা চললেও সম্প্রতি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বুয়েটে উপস্থিতি নতুন করে আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটায়।
গত ২৭ মার্চ মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে গেলে তার প্রতিক্রিয়ায় ২৯ মার্চ থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেনের হলের সিট বাতিল করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বুয়েট কর্তৃপক্ষ।
পরে বুয়েটের সিদ্ধান্ত বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ইমতিয়াজ।
এর আগে ১ এপ্রিল হাইকোর্টের একই বেঞ্চ থেকে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের আদেশ স্থগিত করে দেয়। এ আদেশের ফলে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ থাকার পর বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির দ্বার উন্মোচন হয়।