সঙ্গী পাশে থাকলে অনেকেরই ঘুমঘুম ভাব হয়। অনেকেই মনে করেন, সম্পর্ক একঘেঁয়ে হয়ে গেলেই এমন ঘটে ।
আসলে কিন্তু তা নয়। বেশকিছু গবেষণা দাবি করছে, সঙ্গীর উপস্থিতিতে ঘুম পাওয়া কখনো কখনো সুখি, স্বাস্থ্যকর সম্পর্কেরও ইঙ্গিত বহন করতে পারে।
এই বিষয়ে সাইকোথেরাপিস্ট এবং লেখক তাশা বেইলি বলেন, “যখন আমরা সঙ্গীর সাথে নিরাপদ এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি, তখন আমাদের শরীর ঘুমে এলিয়ে পড়তে পারে।”
সঙ্গী পাশে থাকলে শরীর জুড়ে ঘুম নেমে আসার আছে আরও কিছু খুঁটিনাটি কারণ। পাশাপাশি সুন্দর স্মৃতির সঙ্গেও জড়িয়ে থাকে আমাদের সঙ্গীর নাম। যা নিয়ে আসতে পারে ঘুম।
জেনে নেওয়া যাক সেগুলো-
জোগায় রাসায়নিক বন্ধন
তাশার মতে, আমাদের ভালোবাসার মানুষ পাশে থাকলে প্রেমের অনুভূতির সাথে সম্পর্কিত হরমোনের নিঃসরণ ঘটে। এর ফলে শরীরে আসে শিথিলতা এবং চোখ জুড়ে নেমে আসে ঘুম। তাশা বলেন “অক্সিটোসিন নামের হরমোনটি বন্ধনের মুহূর্তে ভালবাসা এবং বিশ্বাসের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। এছাড়াও এটি আমাদের মাঝে সহানুভূতির অনুভূতি সঞ্চার করে। দেয় প্রজাপতির চঞ্চলতা।”
গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস
সঙ্গীর গভীর অথচ মৃদু শ্বাস-প্রশ্বাসের ছন্দ অনেকের শ্বাস-প্রশ্বাসকেও করে স্থির ও শান্ত। এ ব্যাপারে তাশার ব্যাখ্যা, “যখন আমরা নিরাপদ বোধ করি, আমাদের শ্বাস স্বাভাবিকভাবেই গভীর এবং ধীর হয়ে যায়। এ সময় আমাদের শরীরের অতিসতর্কতা কমে আসে এবং হজম ক্রিয়া ভালো হয়।”
ঘুম ঘোরে ঘ্রাণ
ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সঙ্গীর ঘ্রাণ ঘুমকে প্রভাবিত করতে পারে। এটি গবেষণার জন্য করা হয় মজার একটি পরীক্ষা।
অপরিচিত ব্যক্তিকে সঙ্গীর ব্যবহৃত টিশার্ট পড়িয়ে একই বিছানায় ঘুমাতে দেওয়া হলে রাতারাতি অপর সঙ্গীকে এটি প্রভাবিত করে। সঙ্গীর ব্যবহৃত টি-শার্টের গন্ধে দ্রুত অপরজনের চলে আসে ঘুম।
তাশা বলেন “সুরক্ষিত এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করাতে আমাদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে ঘ্রাণ বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।”
তিনি আরও বলেন,“আমাদের স্মৃতির সঙ্গে গন্ধও জড়িত। যদি কোন ঘ্রাণ আমাদের নিরাপদ বোধ করায় তবে তাৎক্ষণিকভাবে শরীর শিথিল হয়ে যায়।”
আশার সঞ্চার
ঘ্রাণ আমাদের পুরোনো স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। আর একে বলা হয় গ্লিমার।
সাইকোথেরাপিস্ট তাশা বলেন, “আমাদের অতীতের সুন্দর কোন স্মৃতি মস্তিষ্কে মনে করিয়ে দেওয়াই হল গ্লিমার। এটি একধরনের সংবেদনশীলতা।”
তাশা যোগ করেন, “যেমন ধরুন সঙ্গীর পারফিউমের গন্ধ অথবা তার প্রিয় কোন গান, দুটোই আমাদের মনে করিয়ে দিতে পারে অতীতের দারুণ কোন অভিজ্ঞতা। এসময় আসলে আমাদের প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয় হয়ে যায়।”
আর এমন স্মৃতিকাতরতাও দিতে পারে ঘুমের অনুভূতি।
তাই সঙ্গী পাশে থাকলেই যদি ঘুম পায় তার নিন্দা না করে বরং বন্দনা করাই শ্রেয়।