Beta
শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
শনিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৫

তাদের চোখে মিল্টন সমাদ্দার যেন ‘ড. জেকিল অ্যান্ড মি. হাইড’

মিল্টন সমাদ্দার।
মিল্টন সমাদ্দার।
[publishpress_authors_box]

দেড় কোটির বেশি অনুসারীর পাতা নিয়ে ফেইসবুকে ‘পাবলিক ফিগার’ মিল্টন সমাদ্দারে বিরুদ্ধে উঠেছে নানা অভিযোগ। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সাম্প্রতিক কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামে বৃদ্ধাশ্রমের আড়ালে নানা অপকর্মে জড়িয়ে আছেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠানে তার সাবেক সহকর্মীরাও এখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তাদের কথায় উঠে এসেছে মিল্টন সমাদ্দারের এমন চরিত্র, যার দেখা মেলে আর এল স্টিভেনসনের জগদ্বিখ্যাত উপন্যাস ‘ড. জেকিল অ্যান্ড মিস্টার হাইড’ উপন্যাসে।

সংবাদমাধ্যমে মিল্টনকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখার পর সকাল সন্ধ্যার কাছে তার ‘প্রতারণা’র কথা বলেন সৈয়দ মনিরুল হাসান রিশাদ।

মিল্টন সমাদ্দারের ডিজিটাল টিমের স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসাবে ২০২২ সাল থেকে প্রায় এক বছর তার সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি ঢাকার মগবাজারের দিলু রোডে থাকা ‘ব্রেন বাস্কেট’ নামে একটি প্রডাকশন হাউজের মালিক।

মনিরুল হাসান বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তার ভিডিওগুলোর স্ক্রিপ্ট লিখতাম আমি। কিন্তু সেসব স্ক্রিপ্টে ভুল তথ্য পরিবেশন করতে বলা হতো আমাকে। যেমন বৃদ্ধাশ্রমে যত জনকে আশ্রয় দেওয়া হতো, ভিডিওগুলোতে সেই সংখ্যাগুলো অনেক বাড়িয়ে বলা হতো।

“এছাড়া সেসব ভিডিওতে উদ্ধারকৃত মানুষকে যেসব সেবা দেওয়ার কথা বলা হতো, বাস্তবে সেভাবে সেবা পান না অসহায় মানুষগুলো।”

এরপর পারিশ্রমিক নিয়ে মিল্টন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন বলে অভিযোগ মনিরুলের।

“আমার সঙ্গে পারিশ্রমিক নিয়ে তিনি যে চুক্তি করেছিলেন, কিছুদিন পরই সেই চুক্তি ভঙ্গ করেন তিনি। তার ওপর কোনও কারণ ছাড়াই যখন-তখন যার তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করায় তার সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয় আমার। পরে আমি সেখান থেকে সরে আসি।”

ঢাকার মিরপুরের দক্ষিণ পাইকপাড়ার ডি ব্লকে মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’। সেখানে বৃদ্ধাশ্রম চালানোর পাশাপাশি অসহায়-দুস্থদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বলে সোশাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচিত তিনি।

তবে এখন অভিযোগ উঠেছে, রাস্তা থেকে অসুস্থ কিংবা ভবঘুরেদের কুড়িয়ে আশ্রয় দিয়ে তাদের নিয়ে ভিডিও তৈরি করে বিত্তবানদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করে তা আত্মসাৎ করতেন মিল্টন।

মিল্টন সমাদ্দারকে নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন।

মনিরুল হাসান বলেন, “গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মিল্টন সমাদ্দার কিছু ভিডিওতে দাবি করেছেন, তার নিজের নার্সিং ‘মিল্টন হোম কেয়ার প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মাসে ৫-৬ লাখ টাকা আয় করেন তিনি।

“এই বিষয়টি পুরোপুরিই মিথ্যা। এই কাগুজে একটি প্রতিষ্ঠান, বাস্তবে এর কোনও অস্তিত্ব নেই। আপনারা ওই প্রতিষ্ঠানের সেবাগ্রহীতাদের তালিকা যাচাই করলেই বিষয়টি প্রমাণ হয়ে যাবে। কারণ তিনি শুধু রেজিস্ট্রারে অমুক-তমুকের নাম লিখে রেখেছেন। বাস্তবে সেসব সেবা গ্রহীতার কোনও অস্তিত্ব নেই।”

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ এ ৪ বছর ব্যবস্থাপক পদে কাজ করে আসা এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মিল্টন সমাদ্দার যেমন রাগী, তেমন মিথ্যাবাদী। তিনি তার ওখানে আশ্রিত মানুষের সংখ্যা ও সেবা নিয়ে প্রচুর মিথ্যা তথ্য প্রচার করেন।

“মিল্টন সমাদ্দার দাবি করেন, তার আশ্রমে প্রায় ৩শ’ মানুষকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। অথচ এই সংখ্যা কোনওভাবেই ১০০ জনের বেশি হবে না।”

“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওগুলোতে অসহায় মানুষদের তিনি যেভাবে বাবা-মা, আব্বু-আম্মু বলে ডাকেন, তাতে মনে হয় তিনি অনেক মানবিক। কিন্তু ক্যামেরার পেছনে অসহায় এই মানুষদের সঙ্গে খুবই দুর্বব্যবহার করেন তিনি। অনেক সময় গায়েও হাত তোলেন।”

এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করে নিজেও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দাবি করে এই ব্যক্তি বলেন, “আমাকেও মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছিল। পরে আমি তার কাছ থেকে সরে আসি।”

মিল্টন সমাদ্দারের এই প্রতিষ্ঠানে দুই বছর ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব সামলে আসা আরেকজন সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ফেইসবুকে প্রচার করা ভিডিওতে আর বাস্তবে মিল্টন সমাদ্দার পুরোপুরি বিপরীত চরিত্রের। তিনি খুবই উগ্র স্বভাবের। তার মুখের ভাষাও খুব খারাপ। উনি যেটা বলতেন তার বাইরে কেউ কথা বললেই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।

“আমি থাকার সময় প্রতি বৃহস্পতিবার ভিডিও আপলোড করতেন। কিন্তু সেসব ভিডিওতে আশ্রমে যত জন থাকত, তার চেয়ে অনেক বাড়িয়ে বলতেন। আমি তার ওখানে কাজ শুরু করেছিলাম একটা আবেগ নিয়ে। তাই এসব দেখে খুব মর্মাহত হই আমি। এছাড়া তার ওখানের কর্মচারীদেরও বেতন দিতেন না সময়মতো। পরে চাকরি ছেড়ে দেই আমি।”

ডা. গুলজার যে কারণ সঙ্গচ্যুত

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ কয়েকমাস খণ্ডকালীন চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটির হেমাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গুলজার হোসাইন উজ্জ্বল।

মিল্টনের আশ্রমে অনিয়ম নিয়ে গত বৃহস্পতিবার ফেইসবুকে তিনি লেখেন, মিল্টনের সঙ্গে তিন মাস কাজ করার পর তার ‘মন উঠে যায়’।

“আমি নিজে অনেক বছর নানারকম চ্যারিটির সাথে যুক্ত ছিলাম। মিল্টনের প্রতিষ্ঠানের নানা রকম অসঙ্গতি আমাকে সন্দিগ্ধ করে তোলে। মিল্টন সমাদ্দারের ব্যক্তিত্বও আমার কাছে নির্লোভ সমাজেসেবী বা জনসেবীর মতো (যা তিনি বোঝাতে চান) মনে হয়নি। উপরন্তু আশ্রমের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিয়ে তিনি যেভাবে ভিডিও ও ফটোসেশন করতেন, তা রীতিমতো বাটপারিসুলভ আচরণ বলে মনে হতো।”

এসব নিয়ে কথা বলার পর মিল্টনের হুমকি পেয়েছিলেন জানিয়ে ডা. গুলজার বলেন, তখন তিনি তার সঙ্গ ছেড়ে আসেন।

তার এই পোস্ট দেখে শনিবার ফেইসবুকে তোলা এক ভিডিওতে মিল্টন সমাদ্দার বলেন, “ও তো কোনও ডাক্তারই না, ওকে ২৫ হাজার টাকা বেতনে চাকরি দিয়েছিলাম আমি। এরপর মনমতো অফিসে আসে যায়, রোগীদের ঠিকমতো ট্রিটমেন্ট দেয় না এজন্য চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল।”

ডা.  গুলজার সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “ মিল্টন সমাদ্দার আমাকে নিয়ে কী বলল না বলল, তাতে কিছু যায় আসে না।

“আমি মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে ও মিল্টনের কাজে আকৃষ্ট হয়ে তার এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে রাজি হই। মাসে ২৫০০০ টাকার বিষয়টি সত্য নয়। এমন কোনও ডকুমেন্ট সে দেখাতে পারবে না। আমি সরকারি চাকরির পাশাপাশি খণ্ডকালীন হিসেবে সেখানে কাজ করতাম। আমি সপ্তাহে তিন দিন যেতাম। অনিয়মিতভাবে তিনি আমাকে কিছু সম্মানী দিতেন। সম্মানীর অঙ্ক নিয়ে আমার বিশেষ মাথাব্যথাও ছিল না। সম্মানী যা পেতাম, বেশির ভাগই আমি ওখানেই দান করতাম বা খরচ করতাম।”

“মিল্টন আমার সম্পর্কে বলেছে, আমি নাকি কোনও ডাক্তারই নই। চিকিৎসাই দিতে পারি না। এগুলো মন্তব্যের কী জবাব দেব, বুঝতে পারছি না। আমি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। বর্তমানে বিএসএমএমইউতে রক্তরোগ বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছি। ২০০৯ সাল থেকে আমি স্বাস্থ্য ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা হিসেবে দেশের একাধিক জাতীয় পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে কাজ করেছি।”

গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর সঙ্গেও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে।

গত শুক্রবার দেওয়া এক স্ট্যাটাসে গোলাম রব্বানী লিখেছেন, মাথায় ক্ষত নিয়ে থাকা অজ্ঞাতনামা এক কিশোরের চিকিৎসার ব্যবস্থা গত ডিসেম্বরে তিনি করতে চেয়েছিলেন। তখন ওই কিশোরকে মিল্টন তার প্রতিষ্ঠানে নিয়ে গিয়েছিল। তখন তিনি মিল্টনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছিলেন।

“আমি শান্তভাবে ঘটনা উল্লেখ করে তার তত্ত্বাবধানে রেখেই ছেলেটার চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে চাই বলতেই তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে চরম অসৌজন্যমূলক, বাজে ব্যবহার শুরু করেন। তার রোগীর বিষয়ে আমার নাক গলাতে হবে না, আমি যেন নিজের চরকায় তেল দেই, আর কখনও যেন কল না করি! পরে কল্যাণপুরে স্থানীয় একজনের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ছেলেটার অসহায়ত্ব দেখিয়ে অনুদান সংগ্রহ করলেও তার কোনও চিকিৎসা করাচ্ছে না। এমন ঘটনা নাকি আরও বহু আছে! অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির বিষয়েও ইঙ্গিত দিল। আর শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবেই বলল, সে ভয়ানক লোক, এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে কোনও কল্পকাহিনী বানিয়ে আমাকেই ফাঁসিয়ে দেবে।”

রব্বানীর পোস্ট দেখে তার জবাবে মিল্টন শনিবার প্রকাশ করা ভিডিওতে বলেন, “ভাইরাল হওয়ার উদ্দেশ্যে রাব্বানী ওই ছেলেকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। ফোনে গালাগালির পাশাপাশি এক ঘণ্টার মধ্যে আমাকে পেটানোর হুমকি দিয়েছিল রাব্বানী। এসবের কল রেকর্ড আছে আমার কাছে।”

রাব্বানী সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “মিল্টন সমাদ্দারের এই ভিডিওর ভাষা খুবই আপত্তিকর। তিনি মিথ্যা কথা বলছেন। আমি তার সঙ্গে কখনোই কোনও খারাপ ব্যবহার করিনি, হুমকিও দিইনি। তার কাছে যদি কল রেকর্ড থেকেই থাকে, আমি তাকে তা প্রকাশের অনুরোধ জানাই।

“আর আমি কেন ভাইরাল হতে চাইব? আমি শুধু চেয়েছিলাম, অজ্ঞাত ওই ছেলেটা সুচিকিৎসা পাক। সেজন্য শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক (বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী) সামন্ত লাল সেন দাদাকে জানিয়েছিলাম। তিনি অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়া দেওয়ায় আমি রোগীকে সেখানে পাঠাতে বলেছিলাম। এতেই আমার ওপর ক্ষেপে যান মিল্টন সমাদ্দার।”

চিকিৎসকদের ওপর হামলার অভিযোগ

গত বছরের ২৫ জুলাই দলবল নিয়ে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের দুজন চিকিৎসকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে।

তখন আহত হয়েছিলেন হাসপাতালের অনারারি মেডিকেল অফিসার (এইচএমও) ডা. পার্থ সেন ও ইন্টার্ন চিকিৎসক তামজিদ আলম রাফি।

কেন এই হামলা হয়েছিল, সে বিষয়ে সকাল সন্ধ্যাকে বলেছেন ডা. পার্থ। তামজিদ আলম রাফি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভবপর হয়নি।

গত বছরের জুলাইয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে থানা হাজতে যেতে হয়েছিল মিল্টন সমাদ্দারকে।

ডা. পার্থ সেন বলেন, গত বছরের ২৫ জুলাই রাত ৮টার দিকে অজ্ঞাতনামা এক বৃদ্ধকে অসুস্থ অবস্থায় মিটফোর্ড হাসপাতালে আনেন এক ব্যক্তি। এসেই তিনি ওই বৃদ্ধকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না বলে হট্টগোল শুরু করেন। তাকে নিয়ম-কানুন বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও তিনি তা ‍উপেক্ষা করে মোবাইল ফোন বের করে ফেইসবুক লাইভ শুরু করেন, বলতে থাকেন, হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না।

এক ইন্টার্ন চিকিৎসক ওই ব্যক্তির হাত থেকে মোবাইল নিয়ে নিেল তিনি তখন হুমকি দিয়ে চলে গেেলও রাতে মিল্টনের নেতৃত্বে ৩৫-৪০ জনের একটি দল হাসপাতালে এসে চড়াও হয় বলে ডা. পার্থ জানান।

তিনি বলেন, “এসেই কোনওকিছু না জিজ্ঞেস করে আমাদের ওপর চড়াও হয় তারা। একই সঙ্গে ওই রোগীকে জোর করে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমরা বাধা দিলে আমাদের মারধর শুরু করে। এতে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।

“এদিকে আমাদের ওপর হামলার খবর পেয়ে আমাদের ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা ছুটে তাদের কয়েকজনকে আটক করে কোতোয়ালি থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে এই ঘটনায় মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান মিল্টন।”

মিল্টনের দাবি, সব মিথ্যা

সংবাদমাধ্যমে নানা প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত দুই দিনে ডজন খানেক ভিডিও ফেইসবুকে দিয়েছেন মিল্টন সমাদ্দার, যেখানে নিজের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।

এর একটির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন- “সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুরোধ রইল ধৈর্য ধরুন। জোরে-শোরে আমার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। সকল তথ্য বেরিয়ে আসবে সকল বিভ্রান্তির অবসান ঘটবে।”

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে শনিবার মিল্টন সমাদ্দারের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে অনেকবার সকাল সন্ধ্যার পক্ষ থেকে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

পরে তার ফেইসবুক পাতায় থাকা মোবাইল নম্বরে কল দিলে এক নারী তা ধরে নিজেকে মিল্টন সমাদ্দারের ব্যক্তিগত সহকারী হিসাবে পরিচয় দেন।

তিনি বলেন, “গত ২ দিন ধরে মিল্টন সমাদ্দার অনেক সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলেছেন। কথা বলতে বলতে তিনি অসুস্থ হয়ে গেছেন। তাই আর কারেও সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না।”

এই বলে তিনি সংযোগ কেটে দেন। এরপর আবার মিল্টন সমাদ্দারের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে তা ধরেন তার স্ত্রী মিটু হালদার। তিনিও বলেন, মিল্টন সমাদ্দার অসুস্থ, সেজন্য কারও সঙ্গে এখন কথা বলতে পারবেন না। সুস্থ হলে তার দেখা পেতে হলে কল্যাণপুরে তার কার্যালয়ে যেতে হবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত