তিন দফায় কমার পর আবার বেড়েছে সোনার দাম। সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) সোনার দাম ভরিতে এক হাজার ৭৩ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
অন্যান্য মানের সোনার দামও প্রায় একই হারে বাড়ানো হয়েছে। বুধবার থেকে এই দর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
ছয় দফায় ২২ ক্যারেট সোনার দাম ভরিতে ১০ হাজার ৩৮২ টাকা বাড়ানোর পর গত ২৪ মে ১ হাজার ৮৫ টাকা কমানো হয়েছিল। একদিন পর ২৬ মে আরও ১ হাজার ২৮৩ টাকা কমানো হয়। ৯ জুন কমানো হয়েছিল ভরিতে ১ হাজার ২৯৫ টাকা। তিন দফায় সোনার দাম কমানো হয়েছিল মোট ৩ হাজার ৬৬৩ টাকা।
বাজুসের ঘোষণা অনুযায়ী, বুধবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ১০ হাজার ২৭ টাকা লাগবে। সেই হিসাবে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) এই মানের সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৫৫ টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা কিনতে লাগবে ১ লাখ ১১ হাজার ৬৩৬ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লাগবে ৯৫ হাজার ৬৯১ টাকা।
আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ৭৯ হাজার ১১৭ টাকায়।
মঙ্গলবার পর্যন্ত হলমার্ক করা এক গ্রাম ২২ ক্যারেট সোনা কিনতে ৯ হাজার ৯৩৫ টাকা লেগেছে; এক ভরি কিনতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৮২ টাকা।
২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনা কিনতে লেগেছে ১ লাখ ১০ হাজার ৬১০ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ৯৪ হাজার ৮১৮ টাকা।
সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনা বিক্রি হয়েছে ৭৮ হাজার ৩৮২ টাকায়।
হিসাব করে দেখা যাচ্ছে, তিন দিনের ব্যবধানে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়েছে ১ হাজার ৭৩ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম বেড়েছে ১ হাজার ২৬ টাকা। ১৮ ক্যারেটের বেড়েছে ১ হাজার ৮৭৫ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়েছে ৭৩৫ টাকা।
মঙ্গলবার রাতে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণ ও রৌপ্যের বিক্রয় মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) এবং বাজুস নির্ধারিত গহনার নূন্যতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে দেশের সব ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
দফায় দফায় বেড়ে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত ১৮ এপ্রিল ২২ ক্যারেট সোনার দাম উঠেছিল ভরিতে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায়। এরপর তা কমতে শুরু করে।
গত ১৮ মে প্রতি আউন্স সোনার দাম (৩১ দশমিক ১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) উঠেছিল ২ হাজার ৪২৩ ডলারে। যা ছিল বিশ্ববাজারে সোনার সর্বোচ্চ দর।
দেশের মতো আন্তর্জাতিক বাজারেও উঠানামা করছে সোনার দাম। গত কয়েক দিনে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম খানিকটা বেড়েছে।
৮ জুন রাতে বাজুস যখন সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দেয় তখন বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ২৯৩ ডলার ৮৪ সেন্ট।
১১ জুন রাত সাড়ে ৮টায় প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৩১৩ ডলার ৬৬ সেন্ট।
সাধারণত বিশ্বে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই সোনার দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে।
কোভিড মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে সোনার দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল।
ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে প্রতি আউন্সের দাম ছিল ২ হাজার ডলারের নিচে। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতায় মূল্যবান এই ধাতুর দাম বাড়তে থাকে।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটে ৯১ দশমিক ৬ শতাংশ, ২১ ক্যারেটে ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ, ১৮ ক্যারেটে ৭৫ শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা থাকে।
সনাতন পদ্ধতির সোনা পুরনো অলঙ্কার গলিয়ে তৈরি করা হয়। এ ক্ষেত্রে কত শতাংশ বিশুদ্ধ সোনা মিলবে, তার কোনও মানদণ্ড নেই।
সোনার দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রূপা ১ হাজার ২৮৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
