ভূমধ্যসাগরে ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী দুটি নৌকা ডুবে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছে।
সোমবার ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ ল্যাম্পেদুসা ও কালাব্রিয়ার উপকূলের কাছে ভূমধ্যসাগরে এ ঘটনা ঘটে। দুই ঘটনায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৬৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে; নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ৬৬ জন ।
কয়েক দিন আগে লিবিয়া ও তুরস্কের উপকূল থেকে ইতালির উদ্দেশে ছেড়েছিল নৌকা দুটি।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এক বিবৃতিতে বলেছে, লিবিয়া থেকে ছেড়ে আসা নৌকায় বাংলাদেশ, সিরিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মিসরের নাগরিকরা ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, নৌকা দুটিতে ইরাক ও ইরানের কিছু অভিবাসনপ্রত্যাশীও ছিল।
জার্মানির দাতব্য সংস্থা রেসকিউশিপ জানিয়েছে, ইতালির ল্যাম্পেদুসা দ্বীপের উপকূলের কাছে তাদের উদ্ধারকারী জাহাজ নাদির ডুবন্ত একটি কাঠের নৌকা থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহগুলো নৌকার নিচের ডেকে আটকে ছিল।
সেসময় ৫১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকাজে ইতালির কোস্ট গার্ড সদস্যরাও সহায়তা করে।
ক্যালাব্রিয়া উপকূল থেকে প্রায় ১২৫ মাইল দূরের সাগরে অভিবাসপ্রত্যাশীদের বহনকারী অন্য একটি নৌকা ডুবির ঘটনায় ৬০ জনের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
ওই নৌকা থেকে এক নারীর মরদেহ ও ১২ জনকে জীবিত উদ্ধার করে ইতালি ও ফ্রান্সের উদ্ধারকারীরা।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) জানিয়েছে, তাদের মধ্যে ২৬ জনই হতে পারে শিশু। এসব শিশুর কারও কারও বয়স এক বছরও হয়নি।
উন্নত জীবনের আশায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে প্রতি বছরই হাজারো মানুষ ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করে।
১২-১৩ বছর আগে প্রধানত লিবিয়া ও তুরস্কের উপকূল থেকে নৌকায় চেপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইউরোপমুখী যাত্রার এই প্রবণতা শুরু হয়। গত কয়েক বছরে এই প্রবণতা আরও বেড়েছে।
ইউরোপে প্রবেশপথগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণ এই সাগর পথ নৌকায় পাড়ি দিতে গিয়ে প্রতি বছর প্রচুর অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ভূমধ্যসাগরে ডুবে ২৩ হাজার ৫০০ অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে।
তথ্যসূত্র : বিবিসি, আল জাজিরা, এপি, রয়টার্স