আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ও তার স্ত্রী ফিরোজা পারভীনের বিরুদ্ধে ১২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে ৭ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগেও মামলা হয়েছে।
বুধবার কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ এসব মামলা করা হয় বলে সাংবাদিকদের জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ও পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে বলা হয়, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন ৮ কোটি ৮৬ লাখ ১১ হাজার টাকা নিজের ভোগদখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তার নিজ নামে ১২টি ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার সন্দেহভাজন লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আরেক মামলায় রেজাউল করিমের স্ত্রী ফিরোজা পারভীনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৫ লাখ ৫৫ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহযোগীতা করার অভিযোগে এ মামলায় রেজাউল করিমকেও আসামি করা হয়েছে।
আত্মীয়ের বাসা থেকে সাবেক আইজিপি শহিদুলের দুই বস্তা নথি উদ্ধার
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহিদুল হকের এক আত্মীয়ের বাসায় অভিযান চালিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দুই বস্তা নথিপত্র উদ্ধার করেছে দুদক।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসবে মঙ্গলবার রাতে চালানো অভিযানে এসব নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
তিনি বলেন, “পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক শহিদুল হকের আত্মীয়ের বাসা থেকে দুই বস্তা নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। দুদক তার বিরুদ্ধে অসাধু উপায়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগের অনুসন্ধান করছে। শহিদুল হক তার অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য সম্বলিত ওইসব নথিপত্র তার নিকট আত্মীয়ের কাছে দুটি বস্তায় ভরে পাঠিয়েছিলেন।”
দুদক মহাপরিচালক আরও বলেন, “নথিপত্রগুলো গোপন রাখার জন্য তার সেই আত্মীয় অপর এক আত্মীয়ের বাসায় পাঠান। এসব নথিপত্রে শহিদুল হকের বেআইনিভাবে অর্জিত কোটি কোটি টাকার সম্পদের তথ্য রয়েছে।
“তল্লাশিকালে দুইটি বস্তায় মোট ৩৮ ধরনের ৪৮টি আলামত পাওয়া যায়। যার মধ্যে রয়েছে বিপুল মূল্যমানের সম্পদের দলিল, বিভিন্ন গোপনীয় চুক্তিপত্র, ডিড অব এগ্রিমেন্ট, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, সংঘ স্মারকের ছায়ালিপি, অফার লেটার, ব্যাংক হিসাব বিবরণী পাওয়া গেছে।”
অনুসন্ধানসংশ্লিষ্ট দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, “মজিদ জরিনা ফাউন্ডেশনের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে শহিদুল হকের কোটি কোটি টাকার স্থায়ী আমানত ও এফডারের নথিপত্র পাওয়া গেছে। এছাড়া ওইসব নথিপত্রে দেখা যায়, ফারমার্স ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকে নিজ ও পরিবারের সদস্যদের নামে বিপুল পরিমাণ টাকা জমা রেখেছেন।”