শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
৭ হাজার কোটি টাকার এ মেগা প্রকল্পের ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
রবিবার কমিশনের এক সভায় এই দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আক্তার হোসেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প পরিচালক এ কে এম মাকসুদুর রহমান ও অন্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকল্পের ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন, এমন একটি অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
কোথায় কোথায় দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে তা জানতে চাইলে ডিজি জানান, নির্মাণ কাজে বিভিন্ন সরঞ্জামাদি স্থানীয়ভাবে কিনে দেখানো হয়েছে বিদেশ থেকে কেনা। আবার সয়েল টেস্টে অনিয়ম ও নকশা পরিবর্তন করে ৯০০ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকল্পের তিনটি বড় কাজ অন্য ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে কমিশন বাণিজ্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়ার কথা জানান তিনি।
ডিজি আরও বলেন, “এ প্রকল্পের দরপত্রে ইউরোপীয় মানের যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামাদির উল্লেখ থাকলেও চীন ও কোরিয়া থেকে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম আমদানি করে সংযোগ করা হয়।”
এছাড়া টার্মিনালের সিলিংয়ের কাজে অনিয়ম হওয়ার পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য অযৌক্তিক কাজ করে ১২ কোটি টাকা অপচয় করা হয় বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।
সব মিলিয়ে এ প্রকল্পে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ৪ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন করেন। ওই সময় টার্মিনালের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছিল। পরে টার্মিনালের পুরো কাজই শেষ হয়।
এর আগে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর এই টার্মিনালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়।
টার্মিনালটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ। বাকি তহবিলের জোগানদাতা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।