নারায়ণগঞ্জের সদ্য সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
নারায়ণগঞ্জে জনপ্রিয় আইভীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন তারই দলের নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সব মেয়রদের অপসারণ করে। এরপরই আওয়ামী লীগের আইভীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত এল।
বৃহস্পতিবার দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, আইভীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মেলায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিএনপি আমলে ২০০৩ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া আওয়ামী লীগ নেতা আইভী ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন হওয়ার পর থেকে মেয়রের পদে ছিলেন। এরমধ্যে একবার দলের নেতা শামীম ওসমানকেও হারান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং অপসারণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে আইভীর দুই ভাই আলী রেজী রিপন ও আহম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে।
এর পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ জেলায় সাততলা বাড়ি নির্মাণ, নারায়ণগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী চিত্তবিনোদন ক্লাব ভেঙে সেখানে একটি মার্কেট নির্মাণ, রেলওয়ের ১৮ একর জমি দখল করে সেখানে শেখ রাসেল পার্ক নির্মাণের বিষয়গুলো নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে।
আইভী ও তার আত্মীয়দের নামে থাকা সম্পদের অনুসন্ধান করবে দুদক। পাশাপাশি মেয়র পদে থাকাকালে তার ব্যক্তিগত সহকারী আবুল হোসেনের চাঁদাবাজির অভিযোগও দুদকের অনুসন্ধানের আওতায় রয়েছে।
আইভীর পাশাপাশি নোয়াখালী-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আয়শা ফেরদৌস এবং যশোর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রনজিত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তও দুদক নিয়েছে বলে আকতারুল ইসলাম জানান।
নোয়াখালীর হাতিয়ার আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আয়েশার স্বামী মোহাম্মদ আলীও সংসদ সদস্য ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদ গড়ার অভিযোগ জমা হয়েছে দুদকে।
আওয়ামী লীগের আরেক সাবেক সংসদ সদস্য রনজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনিও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদ গড়েছেন। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যেখানে তার সম্পদমূল্য ছিল ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা, ২০২৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
তার ছেলে রাজিব কুমার রায় প্রতি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি কাজের জন্য ৫ শতাংশ হারে কমিশন নিতেন বলেও দুদকে অভিযোগ এসেছে।