Beta
শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪
Beta
শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪

সাদিক এগ্রোকে নিয়ে অনুসন্ধানে সাভার ডেইরি ফার্মে দুদক

সাভারের সরকারি ডেইরি ফার্মে অভিযান চালিয়েছে দুদক। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
সাভারের সরকারি ডেইরি ফার্মে অভিযান চালিয়েছে দুদক। ছবি : সকাল সন্ধ্যা
Picture of আঞ্চলিক প্রতিবেদক, সাভার

আঞ্চলিক প্রতিবেদক, সাভার

সাদিক এগ্রোকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সরকারি এই খামারের বিরুদ্ধে ওঠা দরপত্র জালিয়াতিসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন দুদকের কর্মকর্তারা। পরে ভাকুর্তায় সাদেক এগ্রোর খামারেও অভিযান চালানো হয়।

সোমবার দুপুরে দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে নয় সদস্যের এনফোর্সমেন্ট টিম এই অভিযান চালায়। অভিযানে সাভার ডেইরি থেকে সংগ্রহ করা নথিপত্রে সাদিক এগ্রোকে নিয়মবহির্ভূত সহায়তার কিছু তথ্যও পেয়েছে দুদক।

এ বিষয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, “২০২১ সালে অবৈধভাবে ১৮টি ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি করেছিল সাদিক এগ্রো। সেগুলো পরিচর্যার জন্য কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে রাখা হলেও গত এপ্রিলে রমজান মাসে কয়েকটি শর্ত দিয়ে সেসব গরু জবাই করে বিক্রির দায়িত্ব নেন সাদিক এগ্রোর ইমরান হোসেন। ২৮০ টাকা কেজিতে এসব গরুর মাংস বিক্রির কথা ছিল।

“কিন্তু এবার কোরবানির ঈদে একই রকমের গরু বিক্রির অভিযোগ পাওয়া যায় সাদিক অ্যাগ্রোর বিরুদ্ধে। সাদিক এগ্রোকে দেওয়া সেই ব্রাহমা গরুগুলো সেসময় জবাই না করে পরে প্রদর্শনের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে এ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।”

২০২১ সালের জুলাই মাসে করোনা মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে শাহিওয়াল গরুর নাম দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা হয় ১৮টি ব্রাহমা গরু। টার্কিশ এয়ারলাইন্সে সাদিক এগ্রোর নামে আসা এসব গরু ধরা পড়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।

গরু আমদানির জন্য সাদিক এগ্রো গবাদিপশু আমদানি-সংক্রান্ত একটি নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণি কোয়ারেন্টাইন বিভাগের কাছ থেকে একটি চিঠি এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে গবাদিপশু আমদানির অনুমতিপত্র জমা দিয়েছিল। এই প্রতিটি নথিই সেসময় জাল হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন শুল্ক কর্মকর্তারা।

দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সে সময় গরু আমদানির বৈধ কাগজপত্র উপস্থাপন করতে না পারা সাদিক এগ্রোকে কোন প্রক্রিয়ায় সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু দেওয়া হলো, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ব্রাহমা জাতের সেই গরুগুলোই সাদিক এগ্রো জবাই না করে প্রদর্শনের মাধ্যমে বিক্রি করেছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখছে দুদক।

এছাড়া ২০২৩ ও ২০২৪ সালের প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীতে প্রকাশ্যে ব্রাহমা জাতের গরু প্রদর্শন করেছিল সাদিক এগ্রো। এসব গরু কোথা থেকে এল, সেই তথ্যও খুঁজছে দুদক। সাদিক এগ্রোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গত কোরবানির ঈদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় আসে একটি ছাগল। ১৭৫ কেজি ওজন, ৬২ ইঞ্চি উচ্চতার সাদিক এগ্রোর ওই ছাগলটি ১২ লাখ টাকায় কেনার ঘোষণা দিয়ে ভাইরাল হন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে এক তরুণ।

সেই ছাগলের রশি ধরে টান পড়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের, যখন জানা যায় এই তরুণ তারই ছেলে। ছেলের ছাগলকাণ্ডের পর সম্পদ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এনবিআরের পদ হারিয়েছেন মতিউর। তার সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

পাশাপাশি সাদিক এগ্রোর ব্রাহমা গরু নিয়েও শুরু হয় আলোচনা। কারণ এই গরু আমদানি নিষিদ্ধ হলেও তা কীভাবে সাদিক এগ্রো পেল, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। সাদিক এগ্রোকে নিয়ে অন্য খামারিরাও কথা বলতে শুরু করেন।

এরই মধ্যে খাল দখল করে ঢাকার মোহাম্মদপুরে গড়ে ওঠা সাদিক এগ্রোর খামারের অবৈধ অংশ ভেঙে দেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত