যানজট নিরসনসহ ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা সুশঙ্খল করতে বিআরটিএকে এক মাস সময় বেঁধে দিলেন সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তা করতে না পারলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ভবনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ আয়োজিত ‘সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ, ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসন এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ’ বিষয়ক আলোচনা সভায় এই হুঁশিয়ারি দেন ফাওজুল কবির।
তিনি বলেন, “আগামী এক মাসের মধ্যে সেবায় উন্নতি করতে না পারলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যানসহ সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
যানজটের স্থানগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, যত্রতত্র পার্কিং ও যাত্রী উঠানামা বন্ধে সুনির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করা এবং পুনর্বাসন পরিকল্পনা নিয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। ২০ বছরের পুরনো ও ফিটনেসবিহীন বাসগুলো মে মাসের মধ্যে রাস্তা থেকে তুলে নিতে হবে।
নতুন বাস নামাতে ব্যাংক ঋণের প্রয়োজন হলে সরকার সহযোগিতা করবে বলেও বাস মালিক সমিতির নেতাদের আশ্বাস দেন উপদেষ্টা।
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ পর্যালোচনা করা হবে জানিয়ে ফাওজুল কবির বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য কাউকে কষ্ট দেওয়া নয়, ঢাকা শহরের যানজট সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা। যদি এক সপ্তাহের মধ্যে দৃশ্যমান কোনও পরিবর্তন না আসে তাহলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সভায় কয়েকজন উপদেষ্টার পাশাপাশি বাস মালিক সমিতির নেতা, সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধি, ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন সভায় বলেন, যত্রতত্র পার্কিং, সুনির্দিষ্ট স্থানে যাত্রী উঠানামা না করা, পুরনো ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন ঢাকা শহরে যানজট সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ।
তিনি স্বল্পকালীন সমাধান হিসেবে নির্দিষ্ট সময়ে বা পিক আওয়ারে একমুখী যানচলাচলের ব্যবস্থা করা, পার্কিংয়ের জন্য সুনির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণের সুপারিশ করেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ফিটনেসবিহীন, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিষাক্ত কালো ধোঁয়া নির্গমনকারী বাসগুলো মালিকদের নিজ দায়িত্বে অপসারণ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “বায়ু দূষণে ঢাকা শহরের মানুষ ভুগছে এবং এ সমস্যা সমাধানে আমাদের অতি দ্রুতই ব্যবস্থা নিতে হবে।”
গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান যানজট নিরসনে সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারদের নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বকশ চৌধুরী ঢাকা শহরকে যানজটমুক্ত করতে চালকদের ট্রাফিক আইন জানানোর উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেন।
সভায় অংশ নিয়ে পরিবহন শ্রমিক নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, চালকদের জন্য পর্যাপ্ত কাউন্সেলিং ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে।
বিদ্যমান সড়ক পরিবহন আইন পুর্নর্বিবেচনার সুপারিশও করেন তিনি।