সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর করে অধ্যাদেশ জারি করেছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার।
অধ্যাদেশটি সোমবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও সংসদবিষয়ক বিভাগের মুদ্রণ ও প্রকাশনা শাখা থেকে (অধ্যাদেশ নং ১১,২০২৪) বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, যেহেতু সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফিন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাগুলোতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে তা সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে- সেহেতু বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৩ (১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।
এই অধ্যাদেশ সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফিন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থায় সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪ নামে অভিহিত হবে এবং অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।
তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের যৌক্তিক বয়সসীমা নির্ধারণের বিষয় পর্যালোচনা করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর করার সিদ্ধান্ত হয়।
সেদিন ‘সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফিন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থায় সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
সেখানে সিভিল সার্ভিসের সব ক্যাডারের চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর এবং সিভিল সার্ভিসের আওতাবহির্ভূত সব সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর নির্ধারণ করা হয়।
সোমবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের জারি করা অধ্যাদেশে বলা হয়, আপাতত বলবৎ অন্য কোনও আইন, রাষ্ট্রপতির আদেশ, অধ্যাদেশ, বিধিমালা, প্রবিধানমালা, সংবিধি, আদেশ, নির্দেশ বা আইনগত দলিলে যা কিছুই থাকুক না কেন- (ক) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের সব ক্যাডারের চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৩২ বছর। (খ) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের আওতাবহির্ভূত সব সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর হবে।
(গ) স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফিন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থার চাকরির যেসব পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বা অনূর্ধ্ব ৩২ বছর উল্লেখ রয়েছে, সর্বত্র উক্ত বয়সসীমা ৩২ বছর প্রতিস্থাপিত হবে। (ঘ) প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান স্ব স্ব নিয়োগ বিধিমালা, প্রবিধানমালা বহাল থাকবে।
এই অধ্যাদেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনও অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দেখা দিলে সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই অধ্যাদেশের বিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্তরূপ অস্পষ্টতা বা অসুবিধা দূর করতে পারবে। বাসস।