Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪
Beta
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

এআইআইবির বহু মুদ্রায় ঋণ : বাংলাদেশের কী সুবিধা  

SS-aiib-logo-161124
[publishpress_authors_box]

চীনের নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক আর্থিক সংস্থা এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) এবার বহু দেশীয় মুদ্রায় (মাল্টি কারেন্সি) ঋণ দেবে। ডলারের পাশাপাাশি ইউয়ান, ইউরো, পাউন্ড স্টার্লিং ও ইয়েনে ঋণ পাবে সদস্য দেশগুলো। প্রকল্পের প্রয়োজনে স্থানীয় মুদ্রায়ও ঋণের জোগান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

সম্প্রতি উজবেকিস্তানে অনুষ্ঠিত এআইআইবির বার্ষিক সভায় এসব সিদ্ধান্ত অনুমোদন পেয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সংস্থাটির সঙ্গে যে প্রকল্পে অর্থায়নের প্রাথমিক সমঝোতা হবে, সেক্ষেত্রে ঋণ পেতে হলে চুক্তির আগে একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে হবে।

এ বিষয়ে ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “গত ২৫-২৬ সেপ্টেম্বর উজবেকিস্তানের সমরখন্দে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে এআইআইবি মাল্টি কারেন্সিতে ঋণ দেবে।

“ওই সভায় বাংলোদেশসহ সদস্য দেশগুলোকে উন্নয়ন প্রকল্পে এখন থেকে মার্কিন ডলার, ইউরো, বৃটিশ পাউন্ড স্টার্লিং, জাপানি মুদ্রায় ইয়েন এবং চীনা মুদ্রা ইউয়ানে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

সব সদস্য দেশের সম্মতিতে এবং সদস্য দেশগুলোকে সুবিধা দেওয়ার জন্যই এআইআইবি এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন দিয়েছে।  

ওই সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা এই সচিব আরও বলেন, “ওই সম্মেলনে প্রকল্পের প্রয়োজনে সদস্য দেশগুলোকে স্থানীয় মুদ্রায়ও ঋণের জোগান দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে।”

এআইআইবি মূলত ব্রিকসের (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা) সদস্য দেশগুলোর মালিকানায় একটি আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা।

ঋণের মুদ্রা যেভাবে ঠিক হবে

যেসব উন্নয়ন প্রকল্প এআইআইবি ঋণ দেওয়ার জন্য বাছাই করবে, সেগুলোর ধরন এবং অঙ্গভিত্তিক ব্যয় পর্যালোচনা করে কোন দেশের পণ্য আমদানি করতে হবে এবং তাতে কত ব্যয় হবে, তা ঠিক করা হবে।

এ বিষয়ে উদাহরণ তুলে ধরেন ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী। তিনি বলেন, “আমাদের এমন একটি প্রকল্প তৈরি করা হলো, যেখানে কিছু পণ্য আনতে হবে আমেরিকা অঞ্চল থেকে। কিছু পণ্য আনতে হতে পারে ইউরো অঞ্চল থেকে। আবার হয়তা কিছু পণ্য চীন বা জাপান থেকে আমদানি করতে হতে পারে।

“প্রকল্পের ব্যয় পরিকল্পনা অনুযায়ী মাল্টি কারেন্সিতে ঋণ নিলে বিল পরিশোধেও সুবিধা হবে।”  

প্রকল্প বাস্তবায়নে সুবিধা

মাল্টি কারেন্সির সুবিধা তুলে ধরতে গিয়ে ইআরডি সচিব বলেন, “মাল্টি কারেন্সির অনেক ধরনের সুবিধা পাওয়া যেতে পারে। যেমন- আমরা এমন একটা প্রকল্প প্রস্তুত করলাম যেখানে কিছু পণ্য ইউরো অঞ্চল থেকে আসবে, কিছু পণ্য আমেরিকা অঞ্চল থেকে আসবে, আবার কিছু পণ্য হয়তো এমন অঞ্চল থেকে আসবে যেখানে ভিন্ন মুদ্রায় কিনতে হবে।

“এমন একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গেলে সংস্থাটির সাথে আপনাকে মাল্টি কারেন্সিতে ঋণ চুক্তি করতে হবে এবং যে মুদ্রায় যত অর্থ দরকার সেই মুদ্রায় ঋণচুক্তি হবে। এতে প্রকল্প বাস্তবায়ন সহজ হবে।”

এআইআইবির নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, একটি প্রকল্পে ঋণ চুক্তির আগে প্রল্পটির ব্যয় বিশ্লেষণ করা হবে। যদি চীনের পণ্য আমদানি করতে হয়, তাহলে সেই অনুযায়ী ইউয়ানে ঋণ চুক্তি হবে। আবার প্রকল্পের পণ্য বা পরামর্শক অন্য দেশের হলে সংশ্লিষ্ট মুদ্রায় কত খরচ হবে, সেই অনুযায়ী ওই মুদ্রায় ঋণ হবে। আবার যদি মার্কিন ডলার লাগে তাহলে ওই পরিমাণ ডলারে ঋণ হবে।

এআইআইবির সম্মেলনে এসব সিদ্ধান্তে সব সদস্য দেশ সম্মতি দিয়েছে; এতে বাংলাদেশ সরকারও সম্মতি দিয়েছে বলে জানান ইআরডি সচিব।

“তবে পুরো বিষয়টা কোন প্রক্রিয়ায় হবে, তা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আরও আলোচনার কথা রয়েছে,” বলেন তিনি।  

সরকার কী ভাবছে  

এআইআইবির নতুন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশও লাভবান হবে বলে মনে করছেন ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী।

তিনি বলেন, “বর্তমান সিস্টেমে শুধুমাত্র ডলারে ঋণ নিলে অন্য দেশ থেকে আমদানি করতে হলে সেই দেশের মুদ্রা কিনতে গিয়ে এক্সচেঞ্জ রেটের লভ্যাংশ দিতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে। কিন্তু এখন যে দেশ থেকে আমদানি করতে হবে, সে দেশের মুদ্রায় ঋণ নিলে আর এই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে না।

“কোনও প্রকল্পের একটি অংশ বাস্তবায়ন করতে যদি চীন বা জাপানি পণ্যের প্রয়োজন হয়, আর আমি যদি শুধু ডলারে চুক্তি করি, তাহলে আমাকে বিল পরিশোধ করার সময় ইউয়ান বা ইয়েন কিনে বিল পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু আমার যদি ইউয়ান কিংবা ইয়েন থাকে, তাহলে আমার আর ডলারকে এক্সচেঞ্জ করে বিল পরিশোধ করতে হতো না।”

এআইআইবি এখন থেকে স্থানীয় মুদ্রায়ও ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, “এই দাতাসংস্থার সদস্য দেশের কেউ চাইলে স্থানীয় মুদ্রায়ও ঋণ দেবে।”

বাংলাদেশি মুদ্রায় কীভাবে ঋণ দেবে—জানতে চাইলে সচিব বলেন, “এ বিষয়ে আমরাও এখনও বিস্তারিত জানি না। সকল বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

“হতে পারে দেশের অর্থনীতিতে বন্ড ইস্যু করে বা অন্য কোনও উপায়ে ওই সম্পদ তৈরি করে ঋণ দেবে তারা।”

কী বলছেন অর্থনীতিবিদ

এআইআইবির বহু মুদ্রার ঋণে বাংলাদেশের সুবিধা কী—এমন প্রশ্নে গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড) চেয়ারম্যান ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

তিনি সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “এরকম ঋণে একটা উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে এটা আসলে একটি বেঁধে দেওয়া (টাইড এইড) ঋণ হবে। কীভাবে ব্যয় করবেন, তা ঋণদাতা সংস্থা থেকে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। টেন্ডারের আগেই কোন দেশের পণ্য আমদানি করতে হবে, তা নির্দিষ্ট করে ফেললে পণ্যের দাম এবং মান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে।  

“এটা হলে একটা উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কারণ, এসব দেশের বাইরেও ভালো সাপ্লায়ার থাকতে পারে। তখন হয়তো ওই সুযোগটা হারায় ফেলতে পারি।”

“তবে ব্রিকস দেশগুলোর মুদ্রায় ঋণ নিয়ে ওইসব দেশ থেকে আমদানি করলে বিশেষ করে মুদ্রা পরিবর্তনজনিত ব্যয় কিছুটা সাশ্রয় হবে,” বলেন এই অর্থনীতিবিদ।

এআইআইবির এই সিদ্ধান্ত ডলারকে চাপে ফেলবে কি না—জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, “বিশ্ব বাজারে তো ওরা (ব্রিকস) এখন শক্তিশালী হচ্ছে। ব্রিকসের প্রত্যেক দেশের সঙ্গে আমাদের বড় রকমের বাণিজ্য ঘাটতি আছে। বিশেষ করে ভারত, চীন- এমনকি ব্রাজিলের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি আছে।

“এখন নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে এসব দেশের মুদ্রা আমাদের দেশে রিজার্ভ হিসেবে জমা হবে আর তাদের মুদ্রা কিছুটা হলেও শক্তিশালী হবে।”

“আবার রিজার্ভ থেকে মার্কিন ডলার কমাতে পারলে অবশ্যই ডলারের ওই পরিমাণ শক্তি কমবে। তবে এখন দেখার বিষয় হচ্ছে এআইআইবির এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে কতটুকু বাস্তবায়ন হয়।”

“আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, যাতে আমাদের ব্যয়ের গুণগত মান ক্ষতিগ্রস্ত না হয়,” বলেন ড. রাজ্জাক।

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, “তবে এটাকে আমি বড় চ্যালেঞ্জও মনে করছি না। যেহেতু এটা একটা নতুন সিস্টেম হচ্ছে, আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি যে, এগুলোকে খানিকটা পণ্যের মান, দাম এবং দক্ষতায় আপস করা হবে কি না।”

ডলারের প্রভাব কমাতে দাতা সংস্থাটির এই সিদ্ধান্ত কি না—জানতে চাইলে ইআরডি সচিব বলেন, “না আমি বিষয়টাকে এভাবে দেখি না। মূলত ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রকল্প বাস্তবায়ন সহজীকরণের উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরাই তো চাই মাল্টি কারেন্সি।”

রিজার্ভে চাপ কি কমবে

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ নিয়ে যে উদ্বেগ রয়েছে, তার প্রধান দুই উৎস- প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয় বাড়ার পরও এই সূচকের পতন থামছে না। কারণ, ডলারের জোগান সেই পরিমাণে বাড়ছে না।

এআইআইবির নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাল্টি কারেন্সিতে বাংলাদেশ ঋণ নিলে ডলারের জোগান কম হলেও রিজার্ভে নেতিবাচক কোনও প্রভাব পড়বে না। বরং রিজার্ভে ইউয়ান বা ইয়েন বেশি করে যুক্ত হলে সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। তবে ডলারের ব্যবহার কিছুটা কমে আসতে পারে।

বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি আমদানি করে চীন থেকে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে চীন থেকে বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ২৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। সে হিসাবে চীনকেই সবচেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রা পরিশোধ করতে হয়।

এমন প্রেক্ষাপটে ইউয়ানে ঋণ চুক্তি বাংলাদেশকে আমদানি বিল পরিশোধে আরও স্বাচ্ছন্দ দেবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, চীনের মুদ্রায় ঋণ চুক্তিতে বিল পরিশোধে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে।

ঢাকায় রাতের মেট্রোরেল। ছবি : সকাল সন্ধ্যা

একইভাবে প্রকল্প ব্যয়ে জাপান থেকে গাড়ি বা জাপানি পণ্য আমদানির বিল পরিশোধে ইয়েনে চুক্তি করা হবে, যাতে দেশটি থেকে আমদানি বিল পরিশোধ ইয়েন দিয়ে পরিশোধ করা যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মেট্রো রেলের জন্য বিপুল পণ্য আমদানি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার, যা ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রস’ হিসাবে রিজার্ভ এখন ২৪ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার।

গত ১২ মে আকুর মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের ১ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর বিপিএম-৬ হিসাবে রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছিল ১৮ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। ‘গ্রস’ হিসাবে নেমেছিল ২৩ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে।

বাংলাদেশে আরও অর্থায়ন

ইআরডির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, এশিয়াসহ সারাবিশ্বের বিশেষ করে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থায়ন  বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) নির্ভর ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই দুই আর্থিক সংস্থার মাধ্যমে দেশটি সদস্য অন্য দেশগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। অনেক দেশ এই দুই সংস্থার কাছ থেকে ঋণ সহায়তা পাওয়া যায় বলে যুক্তরাষ্ট্র একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে পারে।

তিনি বলেন, এআইআইবি আসার পর এখন বাংলাদেশ বা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য নতুন বিনিয়োগ অর্থায়নের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এআইআইবি ২০০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন  প্রকল্পে প্রায় ৩৫০ কোটি ডলারের অর্থায়ন করেছে। এছাড়া কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলা, সরকারের প্রণোদনা কর্মসূচি ও কোভিড-পরবর্তী অর্থনীতির পুনরুদ্ধার ও টেকসই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে গত তিন বছরে এআইআইবি ১৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দিয়েছে।

আগামী মার্চের মধ্যে সংস্থাটির পাইপলাইনে বেশ কয়েকটি ঋণ চুক্তি ছাড়াও ৩০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস রয়েছে।

ইআরডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ২০১৬ সালে দশ হাজার কোটি ডলার মূলধন নিয়ে শুরু করা চীনের নেতৃত্বাধীন এই আর্থিক সংস্থাটির মূলধন আরও জোরদার করা হচ্ছে। সংস্থাটির ডলারের বাইরে গিয়ে বিনিয়োগ অর্থায়ন ডলারের প্রভাব কিছুটা হলেও কমাবে।

এআইআইবি বংলাদেশসহ ১১০টি দেশ সদস্য রয়েছে। এরমধ্যে ৯৬টি পূর্ণ সদস্য এবং ১৪টি সম্ভাব্য সদস্য এবং অতিরিক্ত সদস্য গ্রহণের সুযোগ রাখা আছে। সদস্য দেশগুলোর মধ্যে এ পর্যন্ত ২৮৬টি প্রকল্পে ৮৭ বিলিয়ন ডলর ঋণ দিয়েছে। এশিয়ায় ৪৩, ইউরোপে ২৬, আফ্রিকায় ২২, ওশেনিয়ায় ৯, দক্ষিণ আমেরিকায় ৮ এবং উত্তর আমেরিকার ২টি দেশ এই সংস্থার সদস্য।

 যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের সদর দপ্তর করে ১৯৪৬ সালে গঠিত হওয়া বিশ্বব্যাংকের বর্তমানে বিশ্বের ১৮৯টি দেশ এই সংস্থার সদস্য। বিশ্বের সর্ব বৃহৎ ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংকের সবচেয়ে বেশি প্রায় ১৫ দশমিক ৮৫ শতাংশে শেয়ারের মালিক যুক্তরাষ্ট্রের। আর মাত্র ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে দ্বিতীয় জাপান এবং ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ শেয়ার নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে চীন।

গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৩৪০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তার চুক্তি করেছে। বিশ্বব্যাংক এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে প্রায় ৪ হাজার ২৩০ কোটি ডলার (৪২.৩) বিলিয়ন ডলার ঋণ ও অনুদান সহায়তা দিয়েছে।

১৯৬৬ সালে ১১০টি দেশকে সদস্য করে ফিলিপিনের ম্যানিলায় সদর দপ্তর করে প্রতিষ্ঠিত হয় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটির ১২ দশমিক ৭৫ শতাংশ শেয়ার নিয়ে যৌথভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান।  দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ৪২ শেয়ার নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চীন এবং ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ  শেয়ার ভারতের মালিকানা রয়েছে।

এমন এক বাস্তবতায় বৈশ্বিক অর্থনীতিতে চীনের প্রভাব বৃদ্ধির মধ্যে যাত্রা শুরু করে এআইআইবি, যাতে সর্বোচ্চ ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ হিস্যা চীনের। এছাড়া ভারত, রাশিয়া, জার্মানিরও উল্লেখযোগ্য শেয়ার রয়েছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত