সাবেক দুই সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল ও মো. সোলাইমান সেলিমকে আলাদা আলাদা মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
আলী আজম মুকুল ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন আর মো. সোলাইমান সেলিম ছিলেন ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য।
বৃহস্পতিবার দুটি মামলায় শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহ ও আওলাদ হোসাইন মুহাম্মদ জোনাইদের আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার মিরপুরে নাহিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় আলী আজম মুকুলকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক আল-আমীন তালুকদার।
আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ওই সময়েই মো. রাকিব হাওলাদারকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে চকবাজার থানায় করা মামলায় সোলাইমান সেলিমকে আদালতে হাজির করে দশ দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল খায়ের।
এ মামলার মূল নথি না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে আগামী ২৭ নভেম্বর রিমান্ড শুনানির দিন ঠিক করেন আদালত।
গত ১৩ নভেম্বর রাতে ঢাকার হাজারীবাগ এলাকা থেকে মুকুলকে আটক করে র্যাব-২। একই দিনে গুলশানের একটি বাসা থেকে সোলায়মান সেলিমকে গ্রেপ্তার করে চকবাজার থানা পুলিশ।
মুকুলের বিরুদ্ধে করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুর এলাকায় আসামিদের নির্দেশে নির্বিচারে ছাত্র জনতার উপর গুলি চালানো হয়। ঘটনার দিন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা ও সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম মকুলদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় এজাহারে অভিযুক্ত ও অজ্ঞাতনামা আসামিরা এলোপাথারি গুলি করে।
এসময় নাহিদুল ইসলাম গুলি লেগে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তার ভগ্নিপতি মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ১৬ নম্বর আসামি করা হয় মুকুলকে।
সোলায়মান সেলিমের বিরুদ্ধে করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট চাঁনখারপুল মোড়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও এলোপাথাড়ি ককটেল বিস্ফোরণ করে। এ সময় মো. রাকিব হাওলাদার গুলিবিদ্ধ হন।
গুরুতর আহত রাকিবকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন গত ২৩ সেপ্টেম্বর চকবাজার মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
আদালতে সেলিমের স্লোগান
বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য আদালতে ওঠানোর সময় ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেন সোলায়মান সেলিম। আদালত থেকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা আবারও আসবেন।”
শুনানি শেষে সোলাইমান সেলিমকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওর প্রসঙ্গ টেনে সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান, ভিডিওতে দেখা গেছে আপনি দেশের বাইরে ছিলেন? তখন তিনি বলেন, “না, আমি দেশেই ছিলাম।”
তার আইনজীবী দাবি করেন, “ভিডিওটা ফেব্রিকেটেড।”