গ্রেপ্তার হওয়া তেলেগু সুপারস্টার আল্লু আর্জুনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটা পুরোনো খবর। তবে তার গ্রেপ্তারের ঘটনায় জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি একটুও। তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে পুষ্পা টু : দ্য রুল সিনেমার বক্স অফিস মাতিয়ে রাখায়।
কিন্তু কয়েদখানায় কেমন ছিলেন আল্লু অর্জুন?
গ্রেপ্তারের পর জনপ্রিয় এই তেলেগু অভিনেতাকে তেলেঙ্গানার চঞ্চলগুডা সেন্ট্রাল কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়
কারাগারের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পুষ্পা খ্যাত এই অভিনেতাকে রাতের খাবারে দেওয়া হয়েছিল ভাত এবং সবজি।
আল্লু আর্জুন নাকি কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো বিশেষ সুবিধার আবেদনও করেননি, বলে জানান ঐ কর্মকর্তা।
“আল্লু অর্জুন পুরোপুরি স্বাভাবিক ছিলেন। তাকে হতাশ দেখায়নি। কারাগারে রাতের খাবার দেওয়া হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায়। তবে দেরিতে আসা বন্দিদেরও খাবার দেওয়া হয়। তিনি ভাত এবং সবজি খেয়েছিলেন,” পিটিআই-কে বলেন ঐ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, “আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আল্লু আর্জুনকে বিশেষ শ্রেণীর বন্দি হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল।”
সিনিয়র ওই কর্মকর্তার বরাতে জানা যায়, বিশেষ শ্রেণীর বন্দিদের একটি খাট, একটি টেবিল এবং একটি চেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, আল্লু অর্জুনকে কারাগারের একটি বিশেষ অংশে রাখা হয়েছিল।
বক্স অফিস মাতিয়ে যাচ্ছে পুষ্পা টু : দ্য রাইজ
এদিকে ‘পুষ্পা টু’ রাজত্ব করছে বক্স অফিস। ২০২৪ সালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমায় পরিণত হয়েছে ‘পুষ্পা টু’।
বক্স অফিসের তথ্য সরবরাহকারী পোর্টাল স্যাকনিল্ক জানাচ্ছে, সিনেমাটি ১০ম দিনে ৬২.৩ কোটি রুপি নেট আয় করেছে। যা কিনা ৯ম দিনের তুলনায় ৭১.১৫ শতাংশ বেশি।
জানা যায়, সিনেমাটি হিন্দিভাষী অঞ্চলে আয় করেছে ৪৬ কোটি রুপি। তেলুগুতে ১৩ কোটি রুপি, তামিল ২.৫ কোটি রুপি, কন্নড়-এ ০.৪৫ কোটি রুপি এবং মালয়ালমভাষী অঞ্চলে ০.৩৫ কোটি রুপি আয় করেছে।
ফলে, পুষ্পার মোট নেট আয় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৮২৪.৫ কোটি রুপিতে।
আর সারাবিশ্বে ‘পুষ্পা টু’র আয় গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১১৯০ কোটি রুপিতে।
সুকুমার পরিচালিত পুষ্পা টু: দ্য রুল গত ৫ ডিসেম্বর ভারতের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।
হায়দ্রাবাদের একটি হলে সিনেমার বিশেষ শোয়ের সময় পদদলিত হয়ে মারা যান এক নারী। ঐ ঘটনায় করা মামলায় অভিযোগ দায়ের হয় আল্লু অর্জুনের বিরুদ্ধে।
গেল ৪ ডিসেম্বর আল্লু আর্জুন এবং তার পুষ্পা টু : দ্য রুল সিনেমার সহ-অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানাকে নিয়ে উপস্থিত হলে তাদের এক ঝলক দেখার জন্য হায়দ্রাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে বিপুল সংখ্যক ভক্ত ভিড় করেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিনেতার আগমনের বিষয়ে সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ বা নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে আগে থেকে কোনও তথ্য ছিল না।
তাছাড়া দর্শকদের জন্য আলাদা কোনো প্রবেশ বা বের হওয়ার রাস্তাও ছিল না। পুলিশ বলছে, থিয়েটারের গেইটটি বাড়তি ভিড়ের চাপ সহ্য করতে না পেরে ধসে পড়লে পদদলিতের ঘটনাটি ঘটে।
পরে নিহত নারীর স্বামী মাগুদামপল্লী ভাস্করের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিনেতা আল্লু আর্জুনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। অভিযোগে মাগুদামপল্লী বলেন, তার স্ত্রী রেবতী শ্বাস নিতে পারছিলেন না এবং নিচে পড়ে যান কারণ নিরাপত্তাকর্মীরা নায়কের জন্য ‘নিরাপত্তা বেষ্টনী’ তৈরি করতে ভিড়কে ধাক্কা দিয়েছিল।
অভিযোগপত্র থেকে নিজের নাম প্রত্যাহারের জন্য আল্লু আর্জুন তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত শুনানি হয়নি।
ঘটনার প্রায় ১০ ঘণ্টা পর নিজের প্রতিক্রিয়া আর্জুন বলেছিলেন “মর্মান্তিক ঘটনার দ্বারা গভীরভাবে মর্মাহত।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় তার দেরি করে ক্ষমা ও দুঃখ প্রকাশ নিয়েও দারুণ সমালোচনার মুখে পড়েন এই অভিনেতা।
৭ ডিসেম্বরে সিনেমাটির আরেকটি প্রদর্শনে আর্জুন দেরিতে প্রতিক্রিয়া জানানোর ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “এটি বুঝতে এবং ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানাতে আমার কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছিল। আমি এটিকে মানসিকভাবে নিতে পারিনি। এতে আমার প্রায় ১০ ঘণ্টা লেগেছিল। খবরটি শুনে আমাদের সবার মাথা ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল।”
তিনি নিহত নারীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সম্ভাব্য সবরকম সহায়তা করার প্রতিশ্রুতিও দেন। এই সময় ওই নারীর আহত কিশোর বয়সী ছেলের চিকিৎসার জন্য তিনি ২৫ লাখ রুপি সহযোগিতার কথাও জানান।