জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমীকে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়েছে।
শুক্রবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ২০০৯ সালের ২৩ জুন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমান আযমীকে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়। ওই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিনি হাই কোর্টে গেলেও রায় পক্ষে পাননি।
বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন বাতিলের এই সিদ্ধান্তের ফলে আমান আযমী অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে সব ধরনের আর্থিক ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ডিসেম্বর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমীকে তার বরখাস্তের আদেশ প্রমার্জনা করে বরখাস্তের পরিবর্তে ২০০৯ সালের ২৪ জুন থেকে ভূতাপেক্ষভাবে ‘অকালীন (বাধ্যতামূলক) অবসর’ প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৪ জুন থেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমীকে প্রযোজ্য সব আর্থিক ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ ‘অকালীন (বাধ্যতামূলক) অবসর’ প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইতোপূর্বে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০০৯ সালের ২৩ জুন জারিকৃত তার বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করা হয়েছে।
আবদুল্লাহিল আমান আযমীর পরিবার অভিযোগ করে আসছিল, সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্তের পর ২০১৬ সালের ২২ অগাস্ট তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাড়ি ফেরেন তিনি।
এরপর ৩ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে আমান আযমী অভিযোগ করেন তাকে দীর্ঘদিন ‘আয়নাঘরে’ আটকে নির্যাতন চালানোর। আট বছর সূর্যের আলো দেখার সুযোগ না পাওয়ার অভিযোগও করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতকে ‘স্বাধীনতার অস্তিত্বের পরিপন্থি’ আখ্যা দিয়ে তা পরিবর্তনের দাবিও জানান জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে আমান আযমী। তিনি প্রশ্ন তোলেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়েও। বাহাত্তরের সংবিধান ‘বৈধ নয়’ মন্তব্য করে নতুন সংবিধান প্রণয়ণের দাবিও জানান তিনি।
তার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে সোশাল মিডিয়ায় তুমুল প্রতিবাদ জানায় অনেকে। এরই প্রতিক্রিয়ায় একযোগে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
এমন প্রেক্ষাপটে ৮ সেপ্টেম্বর জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বিবৃতি দিয়ে জানান, আমান আযমী জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করেন না।
তিনি বলেন, আমান আযমী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা তার একান্ত ব্যক্তিগত। তার বক্তব্যকে জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করার কোনও সুযোগ নেই।