Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪
Beta
রবিবার, ৭ জুলাই, ২০২৪

আনার খুন : নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায়, দাবি ৩ জনের

আনোয়ারুল আজীম আনার গত ১২ মে দর্শনা দিয়ে ভারত গিয়েছিলেন। পরদিনই কলকাতায় তিনি খুন হন।
আনোয়ারুল আজীম আনার গত ১২ মে দর্শনা দিয়ে ভারত গিয়েছিলেন। পরদিনই কলকাতায় তিনি খুন হন।
Picture of প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

প্রতিবেদক, সকাল সন্ধ্যা

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার তিনজন তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন।

তারা হলেন- পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা শিমুল ভূঁইয়া, তার ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া এবং ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু।

কারাবন্দি এই তিন আসামির আইনজীবীরা ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. মাহবুবুল হকের আদালতে জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার তার ওপর শুনানিও হয়। আদালত শুনানি শেষে আসামিদের আবেদন নথিভুক্ত করে রাখার আদেশ দিয়েছে।

প্রত্যাহারের কারণ দেখিয়ে তারা আবেদনে বলেছেন, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতে নির্যাতন করে তাদের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে তানভীর ভূঁইয়া গত ৪ জুন, শিমুল ভূঁইয়া তার পরদিন এবং বাবু ১৪ জুন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।

তাদের জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে কলকাতায় আনার হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছিল ডিবি। তবে নির্যাতের অভিযোগের বিষয়ে ডিবির কোনও বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার আদালতে এই তিনজনকে হাজির করা হয়েছিল। তারা জবানবন্দি প্রত্যাহারের পাশাপাশি রিমান্ডে নির্যাতনের কারণে অসুস্থ বলেও দাবি করেন। এজন্য সুচিকিৎসার জন্য আবেদন করেন।

আসামিদের পক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, আদালত আবেদনগুলো নথিভুক্ত রাখা এবং কারাবিধি অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, “জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদনটি এখন নথিতে থাকবে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন এই আবেদনের কারণ যথার্থতা নিশ্চিত হবে। তখন যৌক্তিক মনে করলে বিচারিক আদালত এ আবেদনের জোর করে নেওয়া, কারসাজি করা জবানবন্দি আমলে নেবেন, অথবা বাতিল করবেন।”

এই আইনজীবী বলেন, “আসামির জবানবন্দিতে যা বলা হয়েছে, সেটা সত্য নয় এবং আসামির দেওয়া স্বেচ্ছাকৃত বক্তব্য নয়। এসব বক্তব্য ইচ্ছার বিরুদ্ধে বলানো হয়েছে।

“মূলত মামলাটি তদন্তাধীন। তদন্তাধীন কোনও মামলায় আসামির দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি জনসম্মুখে প্রকাশ করার একটা বাধা রয়েছে। কারণ এটা হচ্ছে প্রাইভেট ডকুমেন্টস। এটা প্রকাশ করা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।”

তদন্তাধীন ‘স্পর্শকাতর’ বিষয়ে আসামির হুবহু বক্তব্য গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ বেআইনি বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে এমপি আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের যে মামলা তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় করেেছন, তার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ঠিক করা ছিল ৪ জুলাই।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এদিন প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় আদালত সময় বাড়িয়েছে। আগামী ৮ আগস্ট প্রতিবেদন দাখিলের নতুন তারিখ ঠিক করে দিয়েছে আদালত।

ঝিনাইদহ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনার গত ১২ মে কলকাতায় যাওয়ার পরদিনই কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিবা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন বলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ২২ মে জানায়। তার লাশের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ বলছে, হত্যার পর আনারের দেহ খণ্ড খণ্ড করে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন স্থানে।

এমপি আনার হত্যায় ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাতজনকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সন্দেহভাজন আসামি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু। তিনি স্বীকারোক্তি না দিলেও অন্য ছয় আসামি শিমুল ভুইয়া, তার ভাতিজা তানভির ভূইয়া, শিলাস্তি রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান ফকির, ফয়সাল আলী সাহাজী ও ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বাবুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদালতে জমা হয়েছে।

ওদিকে, ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার জিহাদ হাওলাদার সেখানে রয়েছেন। নেপালে আত্মগোপনে থাকা সিয়াম হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর কলকাতায় নেওয়া হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে পলাতক আছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আখতারুজ্জামান শাহীন। তিনিই এই খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলে দাবি করে আসছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

ad

সর্বাধিক পঠিত