Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫
Beta
বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫

গ্যাস অনুসন্ধানে আরেকটি প্রকল্প অনুমোদন

SS-planning-adviser-wahiduddin-mahmud-080125
[publishpress_authors_box]

দেশে চলমান জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় গ্যাস অনুসন্ধানে আরেকটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এ প্রকল্পের অধীনে এবার সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভুপিটিলা-১ ও কৈলাশটিলা-৯ নম্বরে দুটি কূপ খনন করা হবে। ৬৪৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৬ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড ও বিদ্যুৎ জ্বালানি মন্ত্রণালয়।

বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

ঢাকার শেরে বাংলা নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ ছয় বছরে গ্যাস অনুসন্ধানে কোনও প্রকল্প অনুমোদন না দেওয়ায় প্রবল সমালোচনার মধ্যে বর্তমান সরকার পরপর দুই একনেক বৈঠকে গ্যাসের খোঁজে দুই প্রকল্প অনুমোদন দিল।

এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের রশিদপুর-১১ নম্বরে গ্যাস অনুসন্ধানে প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

একনেক বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “এই বৈঠকেও আমরা গ্যাস অনুসন্ধানে আরও দুটি কূপ খননের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছি। এর আগের বৈঠকেও গ্যাস কূপ খননের প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছি। এটা আমরা অব্যাহত রাখব।” 

অতীত সরকারের নীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “কেন জানি না বহুদিন আগ থেকেই এসব সম্ভাবনাময় গ্যাস ফিল্ডগুলোতে কোনও অনুসন্ধান হয়নি। তখন আমরা এলপিজি গ্যাস আমদানিতে ব্যস্ত ছিলাম।

“আমরা (দায়িত্বে এসে) লক্ষ্য করলে দেখবেন যে এই সম্ভাবনাময় যতগুলো গ্যাসকূপ খোলা যায় খোলার চেষ্টা করছি।” 

তিনি বলেন, “গ্যাস পাওয়ার যেখানে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র, সেখানে আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু আমাদের নিয়ম হলো যে, সরকারি অর্থ ব্যয় করতে হলে সম্ভাবনাটা যাচাই-বাচাই করতে হবে। এবং সেটা করতে হবে একটা থার্ড পার্টি দিয়ে। বাপেক্স করলে হবে না। একটা নিরপেক্ষ কোম্পানি যদি বলে যে, এখানে গ্যাসের সম্ভাবনা বেশি, হয়তো তারা বাপেক্সের উপাত্তই ব্যবহার করবে। হয়তো তাদেরকেই কনসালট্যান্ট হিসেবে ব্যবহার করবে। তবুও একটা নিয়ম আছে তৃতীয় পক্ষের মূল্যায়ন করতে হয়।

“আমরা এই নিয়মের ব্যত্যয় করতে চাচ্ছি না বলেই আরও বেশি কূপ খনন করতে পারছি না। অথচ বিশেষে করে ভোলা অঞ্চলে প্রায় ৯০ শতাংশ সম্ভাবনা যে কূপ খুঁড়লে গ্যাস পাওয়া যাবে। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পর যারা আসবে, তারা বলবে যে এই জায়গায় নিয়মনীতি ভঙ্গ হয়েছে। কাজেই আমরা এখনকার যে নিয়ম সেগুলো ভাঙতে চাচ্ছি না। ইচ্ছা করলে আমরা নতুন নিয়ম বানাতে পারি অধ্যাদেশ দিয়ে। কিন্তু সেগুলো আমরা করছি না।”

বৈঠকের পর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে সরবরাহ করা নথিতে দেখা যায়, বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া গ্যাসকূপ খননের নতুন প্রকল্পটির মাধ্যমে সিলেটের ডুপিটিলা ও কৈলাশটিলা স্ট্রাকচারে যথাক্রমে ৩৪৬০ মিটার ও ৩৬০০ মিটার গভীরতায়  অনুসন্ধানে দু’টি কূপ খননের মাধ্যমে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোলাপগঞ্জ উপজেলায় কূপ দুটি খনন করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, বৈঠকে এই প্রকল্পটিসহ চার হাজার ২৪৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ের ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা, ঋণ সহায়তা থেকে পাওয়া যাবে পায় ২০৬ কোটি টাকা এবং প্রায় ৪০৯ কোটি টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেবে।

প্রকল্পগুলো হচ্ছে-

>> চট্টগ্রাম কর ভবন নির্মাণ প্রকল্প; ব্যয় ৪৩৭ কোটি টাকা।

>> মোংলা বন্দরে পশুর চ্যানেলে সংরক্ষণ ড্রেজিং প্রকল্প; ব্যয় এক হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা।

>> মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প; ব্যয় ১৬৯ কোটি টাকা।

>> এস্টাব্লিশমেন্ট অব গ্লোবাল মেরিটাইম ডিস্ট্রেস অ্যান্ড সেফটি সিস্টেম অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড মেরিটাইম নেভিগেশন সিস্টেম প্রকল্প; ব্যয় ১১৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

>> ডাল ও তৈলবীজ উৎপাদনের মাধ্যমে টেকসই পুষ্টি নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ২৬৬ কোটি টাকা।

>> সিলেট বিভাগে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।

>> দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আয়রন ব্রিজ পুনঃনির্মাণ/পুনর্বাসন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প; ব্যয় ৪৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

>> ডুপিটিলা-১ ও কৈলাশটিলা-৯নং কূপ (অনুসন্ধান কূপ) খনন প্রকল্প; ব্যয় ৬৪৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।

>> কনস্ট্রাকশন অব বাংলাদেশ মনাসটেরি কমপ্লেক্স অ্যাট লুম্বিনি কনজারভেশন এরিয়া নেপাল প্রকল্প; ব্যয় ৬৮ কোটি টাকা এবং

>> আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ (৪র্থ সংশোধিত) প্রকল্প; ব্যয় ৬৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ

সর্বাধিক পঠিত