রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের মতো আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি অংশও তাদের দাবি নিয়ে নেমেছে আন্দোলনে।
দাবি আদায়ে সচিবালয় ঘেরাও করে রাখার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে। তাতে আহতও হয়েছেন অনেকে।
রবিবার সেই সংঘাতের পর আনসার বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে ব্যাপক রদবদল এনেছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই সঙ্গে সচিবালয়ের সামনে সভা-সমাবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পাশাপাশি আনসারদের দাবি পর্যালোচনা করে সুপারিশ দিতে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
আনসার বাহিনীর ইতিবৃত্ত
আনসার বাহিনীর প্রতিষ্ঠা পাকিস্তান আমলে ১৯৪৮ সালে। এই বাহিনী ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিল। একাত্তরে মুজিবনগর সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতিকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়েছিল আনসার প্লাটুন কমান্ডার ইয়াদ আলীর নেতৃত্বে। প্রায় ৪০ হাজার রাইফেল নিয়ে আনসার সদস্যরা স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেয়।
স্বাধীনতার পর গঠিত গ্রাম প্রতিরক্ষা দল ও শহর প্রতিরক্ষা দল পরে আনসার বাহিনীতে একীভূত হয়। নাম হয় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।
১৯৯৫ সালে প্রণীত আনসার বাহিনী আইন এবং ব্যাটালিয়ন আনসার আইন দ্বারা এই বাহিনী পরিচালিত হয়। আইন দুটি হয়েছিল ১৯৯৪ সালে আনসার বিদ্রোহের পর।
আধা সামরিক বাহিনী আনসারের প্রধান অর্থাৎ মহাপরিচালকের পদে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারাই দায়িত্ব পালন করে থাকে।
আনসারদের কাজ কী
আনসার বাহিনীতে দুই ধরনের আনসার থাকে- ১. সাধারণ আনসার, ২. অঙ্গীভূত আনসার।
সাধারণ আনসার স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে থাকে। জাতীয় দুর্যোগ বা সংকট মুহূর্তে তারা দায়িত্ব পালন করে থাকে।
অঙ্গীভূত আনসার কোনও সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের অনুরোধে সেখানে নিরাপত্তামূলক ও আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করে।
আনসার বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমে প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করা হয়। তবে প্রশিক্ষণ নিলেই যে চাকরি হবে, সেই নিশ্চয়তা নেই। মূলত স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
প্রশিক্ষণ শেষে বাহিনীর পক্ষ থেকে একটা কার্ড দেওয়া হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদার ভিত্তিতে সেই কার্ডধারীদের কাজে পাঠানো হয়। তারা তখন দৈনিক চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করে।
বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কেপিআই বা গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় অঙ্গীভূত হয়ে সেসব স্থানের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পালনের এই মেয়াদ হয় একটানা ৩ বছর।
দৈনিক ৫৪০ টাকা চুক্তিতে কাজ করে তারা। আর বাহিনীর পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের জন্য রেশন দেওয়া হয়।
সাধারণ ও অঙ্গীভূত আনসারদের মধ্য থেকে ব্যাটালিয়ন আনসারে নিয়োগ হয়। ব্যাটালিয়ন আনসারদের জন্য রয়েছে আলাদা আইন। তাদের চাকরির নিয়োগ স্থায়ী হয়। যেখানে অন্য আনসারদের চাকরি অস্থায়ী।
বিক্ষুব্ধদের দাবি কী
চাকরি স্থায়ী করার দাবি নিয়েই এবার রাজপথে নেমেছে সাধারণ ও অঙ্গীভূত আনসারের সদস্যরা। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার ১৩ দিন পর গত ২১ আগস্ট তারা বিক্ষোভ শুরু করে।
রবিবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আনসার সদস্যরা এসে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। তারা সড়ক আটকে দেয়।
বিক্ষুব্ধদের দাবি, দৈনিক ভাতার ভিত্তিতে তারা আর কাজ করতে চায় না। ‘রেস্টে’ না রেখে তাদের চাকরি স্থায়ী করতে হবে।
দেশে আনসার বাহিনীর সদস্য প্রায় ৭০ হাজার। এরমধ্যে ৫৪ হাজার ৬৫১ জন অঙ্গীভূত সদস্য হিসাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা দিচ্ছে। বাকি ১৪ হাজারে বেশি থাকছে ‘রেস্ট’ এ।
‘রেস্টে’ থাকার অর্থ হলো তার কাজ নেই। কোনও প্রতিষ্ঠানের নতুন চাহিদা পেলে কিংবা আগে দায়িত্বরতদের চুক্তির মেয়াদ শেষ হলে ‘রেস্টে’ থাকা আনসার সদস্যদের কাজের সুযোগ হয়।
এই অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পেতেই চাকরি স্থায়ী করার দাবি, বলছেন বিক্ষোভে নামা আনসার সদস্যরা।
রাস্তা বন্ধ করে কর্মসূচি পালন নিয়ে এক আনসার সদস্য বলছিলেন, “যখন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করেছে, তখন তো কারও সমস্যা হয়নি। আনসার সদস্যরা রাস্তায় নামলেই মানুষের এত সমস্যা হয় কেন?”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সন্দেহ
দাবি আদায়ে আনসার সদস্যরা সারাদেশ থেকে ঢাকায় আসার কর্মসূচি দিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন ফেইসবুক গ্রুপ থেকে এতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের যোগসাজশের সন্দেহ করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটেছিল। তখনই আন্দোলনকারীরা বলছিল, তাদের ‘বিপ্লব’ নস্যাৎ করতে ‘প্রতিবিপ্লবের ষড়যন্ত্র’ চলছে।
আওয়ামী লীগ আমলে আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক ছিলেন মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক। তিনি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমের ভাই।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন বাহিনী ও প্রশাসনে যে ব্যাপক রদবদল হয়েছে, তাতে আমিনুল হককেও আনসার বাহিনীর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের অভিযোগ, গত ১৫ বছরে বিপুল সংখ্যক আনসার নিয়োগ হয়েছিল, যারা আওয়ামী লীগের সমর্থক। তারা এখন নতুন সরকারকে বিপদে ফেলতে চাইছে।
অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ আনসার সদস্যদের দাবি, তারা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার। সেই বৈষম্যের অবসানে এখন চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে তাদের আন্দোলন।
সংঘর্ষ বাধল কেন
চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে শনিবার থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করছিল আনসার সদস্যরা। রবিবার দুপুরে তারা সচিবালয়ের বিভিন্ন ফটকে অবস্থান নেয়। কয়েক হাজার আনসার সদস্যের অবস্থানের কারণে সচিবালয়ে কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারছিল না।
আনসার সদস্যরা কয়েকবার বিদ্যুৎ ভবনের পাশের গেইট দিয়ে সচিবালয়ে ঢোকার চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়। পরে বেলা ৩টার দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে কথা বলে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তরে যায়।
ওই বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আনসার বাহিনীতে ‘রেস্ট প্রথা’ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের অন্যসব দাবি পর্যালোচনা করতে একটি কমিটিও হবে।
তবে বিক্ষোভরত আনসার সদস্যরা আশ্বাসে আশ্বস্ত না হয়ে এবিষয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারির দাবি তুলে সচিবালয় অবরোধ করে রাখে।
এই অবস্থায় রাত পৌনে ৮টার দিকে সচিবালয়ে পাঁচজন উপদেষ্টার সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। আনসার বাহিনীর কয়েকজন প্রতিনিধিও সেখানে যোগ দেয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে এই বৈঠকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, তথ্য, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, যুব, ক্রীড়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়াও সেখানে ছিলেন।
নাহিদ ও সজীব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক থেকে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যোগ দিয়েছেন।
তবে সচিবালয়ে তখন আরও দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমও ছিলেন। তারা কোন এখতিয়ারে সেখানে ছিলেন, তা নিয়েও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন।
এরমধ্যে রাত ৯টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেইসবুক পোস্টে লেখেন- “সবাই রাজুতে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ ভাস্কর্য) আসেন। স্বৈরাচারীশক্তি আনসার হয়ে ফিরে আসতে চাচ্ছে। দাবি মানার পরও আমাদের সবাইকে সচিবালয়ে আটকে রাখা হয়েছে।”
এর পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা মিছিল সচিবালয়ে উপস্থিত হলে সেখানে সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রথমে আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়েছিল। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহতও করে। একজন সাংবাদিকও তাদের পিটুনির শিকার হন।
পরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে গেলে আনসার সদস্যরা পাল্টা হামলার শিকার হয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে সচিবালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে আনসার সদস্যরা। এখবর শুনে তাদের উদ্ধার করতে এসেছে তারা।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আনসার সদস্যদের পিটিয়ে সচিবালয় এলাকাছাড়া করে শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাসদস্যরাও রাতে সেখানে উপস্থিত হয়। রাত ১০টার পর সেখানে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হওয়ার খবর এসেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। এরমধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহও রয়েছেন। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
অন্যদিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এই ঘটনা নিয়ে ফেইসবুকে এক পোস্টে লিখেছেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে থাকা আনসার সদস্যদের ওপর লাঠি নিয়ে হামলা চালিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
সেনাবাহিনী যা জানাল
আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে রবিবার রাতে আনসারদের বিক্ষোভ দমন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কথা জানায়।
তাতে বলা হয়, আনুমানিক ১০ হাজার আনসার সদস্য সচিবালয় ঘেরাও করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৭ জন উপদেষ্টাসহ সচিবালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রেখেছিল। দাবি মানার পরও উত্তেজিত আনসার সদস্যরা সচিবালয় এলাকা না ছেড়ে আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং কিছু আনসার সদস্য সচিবালয়ের ৩ নম্বর ফটক ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে।
উত্তেজিত আনসার সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছাত্রদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং সচিবালয়ের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর টহল দলকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়ছিল বলেও সেনাবাহিনী জানায়। যাতে ৬ জন সেনাসদস্য আহত হয় এবং তাদের মধ্যে ১ জনের অবস্থা গুরুতর।
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে মোতায়েন করা সেনা সদস্যরা ধৈর্য ধারণ করে। উত্তেজিত আনসাররা নিবৃত্ত না হলে আকাশের দিকে ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরবর্তীতে সচিবালয় এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে আনসারদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।”
এরপর সচিবালয়ে অবরুদ্ধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৭ উপদেষ্টা, আনসার বাহিনীর মহাপরিচালক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সচিবালয়ের কর্মকর্তারা সেনাবাহিনীর সহায়তায় সচিবালয় থেকে বের হন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়ে, সেনাসদস্যরা সচিবালয়ে অনুপ্রবেশকারী এবং পরবর্তীতে নিরাপদ আশ্রয় প্রার্থনাকারী কিছু সংখ্যক আনসার সদস্যকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে পরে তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
দাবি নিয়ে কমিটি, বাহিনীতে রদবদল
চাকরি জাতীয়করণ চেয়ে আন্দোলনে নামা আনসারদের কিছু দাবি যৌক্তিক বলে স্বীকার করে নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আনসারদের বিক্ষোভ চলার মধ্যে শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞিপ্তিতে বলা হয়, “সাধারণ আনসারদের উত্থাপিত দাবি-দাওয়াসমূহ সরকার গভীর মনোযোগ ও সহানুভূতির সাথে পর্যালোচনা করেছে। প্রাথমিকভাবে কিছু দাবি যৌক্তিক প্রতীয়মান হয়েছে।”
সাধারণ আনসার হিসাবে নতুন কোনও নিয়োগ আপাতত হবে না সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তিন বছর চাকরির পর সাধারণ আনসারদের বিশ্রাম না দিয়ে চাকরি অব্যাহত রাখার বিষয়টিও পরীক্ষার আশ্বাস দেওয়া হয়।
বিক্ষুব্ধদের দাবি-দাওয়া খতিয়ে দেখতে আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, এই কমিটি দাবি-দাওয়া পর্যালোচনা করে যৌক্তিক সুপারিশ করে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। পরে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি সেই সুপারিশ পরীক্ষা করে কর্মপন্থা নির্ধারণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
মুষ্টিমেয় কয়েকজন আনসার বাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, “সরকার প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দ্বিধা করবে না।”
সংঘর্ষের পরদিন সোমবারই আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে বড় রদবদল আনে সরকার। ১৯ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন উপ-মহাপরিচালক পদমর্যাদার ৯ জন এবং পরিচালক পদমর্যাদার ১০ জন কর্মকর্তা।