প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার দুইদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে হাজারো মানুষ। এই বিক্ষোভাকরীদের অধিকাংশই ছিলেন নারী।
২০১৬ সাল থেকে প্রতি বছর হওয়া এই কর্মসূচির নাম ছিল ‘উইমেনস মার্চ’। তবে এটি এখন ‘পিপলস মার্চ’ নামে পরিচিত। একাধিক সংগঠন যৌথভাবে এই কর্মসূচি পালন করে।
এবারের কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল ‘ট্রাম্পবাদের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো। ওয়াশিংটন ডিসি ছাড়াও নিউ ইয়র্ক সিটি, সিয়াটলসহ আরও কয়েকটি জায়গায় এই কর্মসূচি হয়েছে।
বিগত বছরগুলোর তুলনায় গতকাল শনিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত পিপলস মার্চে লোকসংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল। আয়োজকদের আশা ছিল ৫০ হাজার মানুষের অংশগ্রহণ। কিন্তু উপস্থিতি ছিল প্রায় ৫ হাজার।
বিক্ষোভকারীরা তিনটি পার্কে মিলিত হয়ে পরে লিঙ্কন মেমোরিয়ালের দিকে মিছিল করেন।
পিপলস মার্চের আয়োজক গ্রুপগুলো তাদের ওয়েবসাইটে নিজেদের পরিচয় দিয়েছে ‘ইন্টারসেকটিং আইডেনটিটিস’ ও ‘বিভিন্ন ইস্যুতে আগ্রহী’ মানুষ বলে। যেমন- জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন এবং নারীদের অধিকার।
ওয়াশিংটনে প্রতিবাদে অংশ নেওয়া এক প্রতিবাদী নারী ব্রুক জানান, তিনি গর্ভপাতের অধিকার সমর্থন করতেই রাস্তায় নেমেছেন।
তিনি বলেন, “আমি আমাদের দেশের ভোটের ফলাফল নিয়ে খুবই অসন্তুষ্ট। আমি দুঃখিত যে আমাদের দেশ এমন এক প্রেসিডেন্টকে নির্বাচন করেছে, যে একবার আমাদের ব্যর্থ করেছে।”
আরেক নারী কায়লা জানান, তিনি বিভিন্ন কারণে প্রতিবাদ করছেন।
পিপলস মার্চের প্রথম আয়োজন হয় ২০১৬ সালে। সেবার ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করেন। ট্রাম্পের প্রথম শপথ গ্রহণের পরদিন নারীরা প্রতিবাদ আয়োজনের ডাক দেন এবং এতে কয়েক হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
আন্দোলনটি তখন দেশের রাজধানী ছাড়িয়ে অন্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্তে মিলিয়ন মিলিয়ন নারী প্রতিবাদে অংশ নেয়। তারা রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড বহন করে এবং গোলাপি কাপড়ের টুপি পরেছিলেন।
উইমেনস মার্চ পরবর্তী বছরগুলোতে ট্রাম্পের এজেন্ডার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকে। তবে পরবর্তী কোন মার্চ আগের মতো বড় আকারে অনুষ্ঠিত হয়নি।
এদিকে ট্রাম্প শনিবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছান। ভার্জিনিয়ার উপকণ্ঠে তার গলফ ক্লাবে একটি ব্যক্তিগত ইভেন্ট আয়োজন করেন।
পিপলস মার্চের আয়োজকরা বলেছেন, তারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে চেয়েছেন ‘অতীতের সফলতা এবং স্বৈরাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে কার্যকর কৌশল ব্যবহার করে’।
শনিবার ওয়াশিংটন মনুমেন্টে ট্রাম্প সমর্থকদের একটি ছোট দল উপস্থিত ছিল। তারা যখন লাল ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ বলছিল, তখন এক পিপলস মার্চ নেতা মেগাফোন নিয়ে এগিয়ে গিয়ে স্লোগান দেন, ‘নো ট্রাম্প, নো কেকেকে’।