সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ ভারতীয় কবি ও কলামিস্ট হারনিধ কৌর কর্মক্ষেত্রে ‘জেন জি’দের আচরণ সংক্রান্ত একটি পোস্ট করার পর তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। ‘জেন জি’দের ছাপিয়ে আলোচনার ডালপালা ছুঁয়েছে, আগের দুই প্রজন্ম মিলিনিয়াল-বুমারকেও।
কর্মক্ষেত্রে ‘জেন-জি’ প্রজন্মের আচরণ রূঢ় উল্লেখ করে তিনি দাবি করেছেন, বাকি প্রজন্মের সহকর্মীরা ‘জেন-জি’দের কাছ থেকে সহযোগিতামূলক আচরণ পান না।
এক্স-এ হারনিধ কৌর লিখেছেন, তার অনেক সহকর্মী জেন জি কর্মীদের বুদ্ধিমত্তা বা দক্ষতার অভাবের কারণে নয়, বরং কর্মক্ষেত্রে তাদের আচরণ এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়াগুলোর কারণে নিয়োগ করতে অনিচ্ছুক।
ভারতীয় এ কলামিস্টের মতে, ‘জেন জি’ কর্মীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘অভদ্র’, তাদের সঙ্গে কাজ করা কঠিন। কর্মক্ষেত্রে মৌলিক শিষ্টাচারটুকু নিয়েও তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই।
“আমার অনেক বন্ধু স্মার্ট বা কাজে দক্ষতার অভাবের জন্য নয়, বরং কেবল অভদ্র বলে ‘জেন জি’ নিয়োগ দিচ্ছে না। তাদের সঙ্গে কাজ করা কঠিন এবং অন্যদের সাথে কীভাবে আচরণ করতে হয় সেটি এ প্রজন্ম জানে না। এ ধরনের পরিস্থিতি সামলানো সত্যিকার অর্থেই দুরূহ”, মিসেস কৌর লিখেছেন।
এক্স হ্যান্ডেলের ওই পোস্টের ফলো-আপে গিয়ে হারমিধ কৌর এমন একজনকে উদ্ধৃত করেছেন যিনি কর্মক্ষেত্রে প্রজন্মগত বিভাজন দূর করার চেষ্টা করেও অসফল হয়েছেন। হতাশা প্রকাশ করেছেন।
ওই ব্যক্তিকে উদ্ধৃত করে হারনিধ কৌর লিখেন, “এমন একজনকে উদ্ধৃত করছি যিনি সত্যিই চেষ্টা করেছেন। (তার ভাষায়) ‘তারা আশা করে (জেন জি) সবাই তাদেরকে সহানুভূতি দেখাবে এবং তাদের আবেগের যত্ন নেবে। কিন্তু আপনি যদি তাদের অন্য কারও যত্ন নিতে বলেন, তবে এটি তাদের জন্য অনেক বেশি কাজ এবং তারা বলে উঠবে ‘আউচ’ (ঢের করেছি অর্থে)।”
একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন,”দারুণ একমত। দায়িত্ব পালন ছাড়াই স্বীকৃতির আদায়ের চেষ্টা অনেক বেশি,!”
“এটি একটি সত্য, তারা মনে করে যে তারা বিশ্বের মালিক এবং অত্যন্ত অভদ্র,” অন্য একজন মন্তব্য করেন।
হারনিধ কৌরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরেকজন লিখেছেন, “আমার নিজের গ্রুপেও এটির মুখোমুখি হয়েছি – এবং আপনি যখন এইচআর-এ থাকেন, তখন এটি আরও চ্যালেঞ্জিং হয়।“
তবে দৃঢ়ভাবে দ্বিমত এবং উল্টা মত জানানো এমন ব্যবহারকারীর সংখ্যাও কম নয়। তারা বলছেন, এমন সাধারণীকরণ করা ঠিক নয়।
একজন এক্স ব্যবহারকারী প্রত্যুত্তর দিয়েছেন এভাবে, “সাধারণীকরণের সঙ্গে যাওয়ার সুযোগ কোথায়! আমি বুমার এবং মিলেনিয়াল প্রজন্মের ক্ষেত্রেও একই কথা বলতে পারি, যারা তাদের কর্মচারীদের ন্যায্য বেতন দিতে চান না, তাদের নিজস্ব জীবন নেই, চান যে সবাই কর্মক্ষেত্রে ঘুষাঘুষি করুক, এবং বেশিরভাগই বৈচিত্র্যের প্রতি অসহিষ্ণু এবং হ্যাঁ , তারা সাধারণীকরণ করে।“
“নতুন প্রজন্ম কর্মজীবন ও ব্যক্তি জীবনের ভারসাম্য চায়। আগের প্রজন্ম এটিকে ঘৃণা করে এবং চায় না যে কেউ কিছু নিয়ে প্রশ্ন করুক,” একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন।
“এটি একটি নির্দিষ্ট প্রজন্মের সমস্যা নয়, অনেক জেন-জির সঙ্গে কাজ করা হয়েছে এবং বেশিরভাগই খুব পরিশ্রমী। হ্যাঁ কাউকে কাউকে সামলানো কঠিন। যা এ বয়সীদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক,” অন্য একজন বলেছেন।
একজন লিখেছেন, “ওহ এটা দুর্ভাগ্যজনক। যদিও আমি অনুভব করি যে তারা আমাদের প্রজন্ম যেসব ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী ছিল না, এমন ব্যাপারে তারা (জেন জি) গভীরভাবে যত্নশীল। অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার একটি ব্যক্তিগত অবস্থান? নাকি এটি একটি প্রবণতা?”
আরেকজন লিখেছেন, “জেন-জির বিরুদ্ধে ঘৃণা পক্ষপাতমূলক। তারা একটি ভিন্ন যুগের এবং অন্যদের তাদের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময় এসেছে। প্রত্যেক প্রজন্মই মনে করে তার উত্তরসূরীরা খারাপ বা অদক্ষ। কর্মক্ষেত্র ভুলে যান, আমাদের পরিবারেই তারা রয়েছে। তারা হয়তো (আমাদের কাছে) আগের প্রজন্মের মতোই খারাপ বা ভাল।”